বাংলাদেশে মাথাপিছু সম্পদের পরিমাণ ১০ লাখ টাকা: বিশ্বব্যাংক
বাংলাদেশে বর্তমানে মাথাপিছু সম্পদের পরিমাণ ১২ হাজার ৭১৪ মার্কিন ডলার। দেশীয় মুদ্রায় এর পরিমাণ প্রায় ১০ লাখ ১৭ হাজার টাকা। এর মধ্যে উৎপাদিত সম্পদের বাজারমূল্য ৩ হাজার ৪৩৪ ডলার। প্রাকৃতিক সম্পদের মাথাপিছু মূল্য ধরা হয়েছে ২ হাজার ২৩৪ ডলার। বাংলাদেশে যে পরিমাণ চাষযোগ্য জমি রয়েছে তার আর্থিক মূল্য মাথাপিছু ১ হাজার ৫০১ ডলার। আর মানব সম্পদের মূল্য ধরা হয়েছে মাথাপিছু ৭ হাজার ১৭০ ডলার। সম্প্রতি প্রকাশিত ‘দ্যা চেঞ্জিং ওয়েলথ অব ন্যশন-২০১৮’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এমনটি উল্লেখ করেছে বিশ্বব্যাংক। ১৯৯৫ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ১৪১টি দেশের প্রাকৃতিক সম্পদ, মানব সম্পদ, উৎপাদিত সম্পদ ও বিদেশে থাকা সম্পদের তথ্য পর্যালোচনা করে এ প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে।
প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী মোট সম্পদের বড় অংশ এখন মানব সম্পদ। আর দরিদ্র দেশগুলোর অর্ধেকের বেশি সম্পদের উৎস প্রকৃতি। অর্থনৈতিক উন্নতির ধারা অব্যাহত রাখতে মানব সম্পদ ব্যবহারে দক্ষতা বাড়ানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে প্রতিবেদনে। ১৯৯৫ সাল থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী সম্পদের পরিমাণ উল্লেখযোগ্য ভাবে বেড়েছে। এসময়ে মধ্য আয়ের দেশগুলোর দ্রুত উন্নতি হয়েছে। বিশেষ করে এশিয়ার দেশগুলোর উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে। কিন্তু ধনী দরিদ্রের সম্পদের ব্যবধান অনেক বেড়েছে। অর্থনৈতিক উন্নতিতে প্রাকৃতিক সম্পদে একক নির্ভরতার দিন ফুরিয়ে আসছে। বিশ্বব্যাংকের হিসাবে, প্রাকৃতিক সম্পদ নির্ভর অন্তত দুই ডজন দেশের মাথাপিছু সম্পদের মূল্য বেশ কয়েক বছর ধরে স্থবির রয়েছে। বেশ কয়েকটি দেশে সম্পদের মাথাপিছু পরিমাণ কমছে। এ সব দেশের মাথাপিছু আয়ও আগামীতে কমে আসবে বলে আশঙ্কা করা হয়েছে। প্রতিবেদনে বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম উল্লেখ করেছেন, মানব সম্পদকে সবচেয়ে বড় সম্পদ হিসেবে বিবেচনা না করলে টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করা সম্ভব হবে না।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৪ সালে বিশ্বের মোট সম্পদের আর্থিক মূল্য ছিল প্রায় ১ হাজার ১৪৩ লাখ কোটি ডলার। ১৯৯৫ সালে এর পরিমাণ দাড়িয়েছে ৬৯০ লাখ কোটি ডলার। এ সময়ে বিশ্বব্যাপী সম্পদ বেড়েছে প্রায় ৬৬ শতাংশ। সম্পদের পরিমাণ সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে অসমতা। নিম্ন আয়ের দেশগুলোর তুলনায় উন্নত দেশগুলোর মাথাপিছু আয় ৫২ গুণ বেশি। সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্বের বেশ কয়েকটি নিম্ন আয়ের দেশে মাথাপিছু সম্পদের পরিমাণ কমেছে। ২০০৯ সালে বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার পর মধ্যপ্রাচ্যের কয়লাসমৃদ্ধ কয়েকটি দেশের পাশাপাশি উন্নত কয়েকটি দেশের সম্পদের পরিমাণও কমেছে। এর ফলে এ সব দেশের আয়ও ভবিষ্যতে কমতে পারে বলে আশংকা প্রকাশ করা হয়েছে প্রতিবেদনটিতে।
ঢাকার কন্ঠ/এমআই