মিথিলা
শৌফিক বাবু
ছোট গল্প
সাদা ডুপ্লেক্স
প্রকাশক// দৈনিক ঢাকার কন্ঠ
বাহিরে তুমুল বৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টির সাথে ঝড়ো হাওয়া; হঠাৎ করে হাওয়ার ঝাপটায় পশ্চিম দিকের জানালার কপাট বজ্রপাতের শব্দে ধাক্কা খেল। প্রচন্ড শব্দে নেওয়াজের ঘুম ভাঙ্গল। আধো জাগরনে সে জানালায় তাকালো। জানালা দিয়ে ঠান্ডা হাওয়ার ছাঁট আসছে। সে জানলা বন্ধ করে বিছানায় বসল। টেবিলে রাখা টেবিল ঘড়ির দিকে তাঁর চোখ গেল। ঘড়িতে সময় ভোর ৬.৩০। পাশের রুম থেকে ছোট বোনের সুরেলা কণ্ঠ।
পুরানো সেই দিনের কথা
ভূলবি কিরে হায়
ও সেই প্রানের কথা .......
ভোর বেলা রবীন্দ্র সংগীত মনকে তরল করে ফেলে। হঠাৎ করে নেওয়াজের মনে পড়ল আজ ভার্সিটির ভর্তি পরীক্ষা রেজাল্ট বের হবে। এ জন্য সে একটা মাটির ব্যাংকে টাকা জমিয়ে রেখেছে। সে কোন সাবজেক্টে চান্স পেলে সবাইকে মিষ্টি খাওয়াবে। নেওয়াজ হাত মুখ ধুয়ে পত্রিকা কিনতে বের হয়। পত্রিকার দোকানে পত্রিকা হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে অনেকক্ষণ এক দিকে তাকিয়ে থাকে। তার চোখ দিয়ে টপটপ করে জল পড়তে থাকে। পাশের এক ভদ্রলোক বলে উঠল, “কী হয়েছে ভাই? কাঁদছেন মৃত্যু সংবাদ? নেওয়াজ বলল, “না ভাই, আমি জাহাঙ্গীর নগরে কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগে চান্স পেয়েছি। আমি আনন্দে কাঁদছি। আজ আমার অনেক বড় সাফল্য। এই খুশিতে, ভাইজান মায়ের জন্য কী নেব?”
“এই খুশির সংবাদ দিয়ে মাকে যা দেবেন তাই মিষ্টি হয়ে যাবে।” নেওয়াজ ঝড় বৃষ্টিতে কাক ভেজা হয়ে মিষ্টি হাতে নিয়ে বাড়ি ফিরল। মাকে পা ছুঁয়ে সালাম করে বলল, মা আমি ভার্সিটিতে চান্স পেয়েছি। এই নাও মিষ্টি। আমি তোমাকে খাইয়ে দিব। নেওয়াজের মা তার জন্য অনেক বড় দিক-দর্শক। সে তাকে শিখিয়েছেন কী ভাবে বাঁচতে হয়। মা বললেন, “আমি ভীষণ খুশি হয়েছি বাবা। তুমি অনেক বড় হও। তুমি যেহেতু এত বড় সাবজেক্টে চান্স পেয়েছো, সেহেতু তুমি নিজের পড়াশুনার খরচ নিজেই ম্যানেজ করবে। খবরদার, আম্মুর কাছে টাকা চাইতে আসবে না। ইউজ ইওর ব্রেন, মাই চাইল্ড”
মায়ের কথা শুনে নেওয়াজের মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ল। এতো দামী দামী বই, প্রজেক্টের খরচ, হৈ-হুল্লোড় ছাইচাপা পড়ে গেলো। তার ভেতরে লালিত রঙ্গীন ক্যাম্পাস একটি * টিবি হয়ে জেগে উঠল। আনন্দের