নেত্রকোনার বারহাট্টায় জলআতঙ্কের টিকা নেই
সোহেল খান দূর্জয় নেত্রকোনা প্রতিনিধি : দৈনিক ঢাকার কন্ঠ নিউজ
নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলার সাতটি ইউনিয়নে প্রায় প্রতিদিন কুকুড়, বিড়াল ও শিয়ালের কামড় কিংবা আচড়ে আহত হচ্ছে শত শত সাধারণ মানুষ।সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত কুকুরের কামড় বেড়ে যায় বহু গুন। এটা তাদের প্রজননের মৌসুম।আক্রান্ত ব্যাক্তির জলাতঙ্ক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে অনেক বেশী। তবে এ রোগের কোনো ভ্যাকসিন নেই বারহাট্টা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। তাই ভোগান্তি বেড়েছে এ উপজেলার মানুষের।
বারহাট্টা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, উপজেলার সাত ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম থেকে প্রতিদিনই সাপে কাটা, কুকুড়, বিড়াল ও শিয়ালের কামড়ে আহত হয়ে মানুষজন হাসপাতালে আসে। প্রয়োজনীয় ভ্যাকসিন না থাকায় তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে জেলা সদর হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়া হয়। সাপে কাটা রোগীকে পাঠানো হয় ময়মমসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
ভুক্তভোগীরা জানান বারহাট্টা উপজেলার অনেক ফার্মেসীতে জলাতঙ্কের ভ্যাকসিন কিনতে পাওয়া যায়।
নোভার্টিসের টিকার এক ডোজের দাম ৬৪০ টাকা। ইনসেপ্টা কোম্পানির এক ডোজের দাম ৫০০ টাকা। অন্যান্য কোম্পানির টিকাও একই দামে পাওয়া যায়।শিয়াল, কুকুড় বা বিড়ালে কামড়ালে একজন রোগীকে পাঁচটি ভ্যাকসিন দিতে হয়। তাই একজন দরিদ্র রোগীর পক্ষে এ চিকিৎসা ব্যায় বহন করা অনেক সময় সম্ভব হয়ে উঠেনা। তাই যাদের পক্ষে সম্ভব হয় ফার্মেসি থেকে ভ্যাকসিন কেনার তারা কিনেন আর বাকিরা গ্রাম্য কবিরাজ দিয়ে চিকিৎসা করান।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিবার কল্পনা কর্মকর্তা ডা. মুস্তাফিজুর রহমান এই প্রতিনিধিকে বলেন, শিয়াল, কুকুড় ও বিড়লের কামড়ে চিকিৎসা না নিলে জলাতঙ্ক হয় । আর জলাতঙ্ক হলে নিশ্চিত মৃত্যু। এই ভ্যাকসিনগুলো নির্দিষ্ট পরিমান তাপমাত্রায় রাখতে হয়। না হলে ভ্যাকসিন নষ্ট হয়ে যায়।উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জলাতঙ্কের ভ্যাকসিনের সরকারি ভাবে সরবরাহ নেই।স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আরও জানান, সাপের অ্যান্টিভেনমের বরাদ্দ পাঁচ বছর আগে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পেয়েছিল।কিন্তুু তখন জনবল না থাকায় সেটার সরবরাহ করা হয়নি।তবে এখন আবার সেটা নিয়ে আলোচনা চলছে।কিছুদিনের মধ্যেই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সাপের অ্যান্টিভেনম সরবরাহ করা হবে।
এ বিষয়ে নেত্রকোনা জেলার সিভিল সার্জন ডা.সেলিম মিয়া এই প্রতিনিধিকে জানান, জলাতঙ্কের ভ্যাকসিনের সরবরাহ শুধু মাত্র জেলা সদর হাসপাতালেই আছে। জেলার কোন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেই এই ভ্যাকসিন সরকারি ভাবে সরবরাহ করা হয়না। তবে যে সব উপজেলায় বেশি আক্রান্ত হয় তার একটি তালিকা নিয়ে ওই সকল উপজেলায় এই ভ্যাকসিন সরবরাহের সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হবে।সিভিল সার্জন আরও জানান সাপের অ্যান্টিভেনমের বরাদ্দ সব উপজেলাতেই থাকার কথা।দ্রুত অ্যান্টিভেনম সরবরাহ নিশ্চিত করার আশ্বাস দেন তিনি।
সোহেল খান দূর্জয়
নেত্রকোনা প্রতিনিধি
২৩.০৯.২০২১