সোহেল খান দূর্জয় নেত্রকোনা প্রতিনিধি :// নিউজ দৈনিক ঢাকার কণ্ঠ
নেত্রকোনা জেলার বারহাট্টা উপজেলায় প্রায় ৩ লক্ষাধিক মানুষের বসবাস। এই উপজেলার একমাত্র স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি ৫০ বছর পর ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নিত করা হয়েছে।
নেত্রকোনার বারহাট্টায় প্রত্যন্ত অঞ্চলে মানুষের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেয়ার অঙ্গীকারে বদলে গেছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.মো. মোস্তাফিজুর রহমানের দক্ষ ব্যবস্থাপনায় অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়েও রোগীরা এখন আন্তরিকতাপূর্ণ সেবা পাচ্ছেন।
প্রয়োজনীয় জনবল সংকট থাকা সত্ত্বেও এখানকার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে সমন্বয় করে তিনি অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে নানা সংকট মোকাবিলার মাধ্যমে বারহাট্টা উপজেলায় স্বাস্থ্যসেবা প্রদানে প্রশংসনীয় ভূমিকা পালন করে চলেছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগ, আন্তঃবিভাগ এবং বহির্বিভাগের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণ, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও সৌন্দর্যবর্ধন সার্বিক কার্যক্রম তদারকির মাধ্যমে বারহাট্টায় স্বাস্থ্য খাতের ইতিহাসে এক অনন্য সুন্দর সফলতা বলে আখ্যা দিচ্ছে স্থানীয়রা।
মো. জামিউল ইসলাম সাগর নামে একজন স্থানীয় বাসিন্দা জানান, এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দৃশ্যপট একেবারে পাল্টে দিয়েছেন বর্তমান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা। তিনি এখানে যোগদানের পর থেকে হাসপাতালে রোগীদের খাবার,পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, সৃজনের মাধ্যমে পরিবেশের উন্নয়নসহ নানামুখী সৃজনশীল কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।
তাছাড়া সন্ধ্যা অবধি এই কর্মকর্তাকে হাসপাতালে কর্মব্যস্ত সময় পার করতেও দেখা গেছে।
অনেকেই বলে এখানে সিজার অপারেশন করতে পারবে এটা শুনে আমরা খুব খুশি। কারণ আমাদের পক্ষে ১৫-২০ হাজার টাকা যোগাড় করে সিজার করা সম্ভব হবে না। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একাধিক স্বাস্থ্যকর্মী জানান, কীভাবে আরও সহজে প্রতিটি ইউনিয়ন, ওয়ার্ড এবং গ্রাম পর্যায়ে সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা যায়- এ ব্যাপারে প্রতিনিয়ত সভা-সমাবেশের মাধ্যমে তাদের সঠিক দিকনির্দেশনা এবং পরামর্শ প্রদান করেন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান।
এখানের স্বাস্থ্যকর্মীরা তাদের কর্মকর্তার সৃজনশীল ভাবনা এবং উদ্যোগের জন্য কৃতজ্ঞতা জানান।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. মোঃ সোলায়মান হোসাইন জানান, বারহাট্টা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আওতায় উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ও কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো নিয়মিত মনিটরিংয়ের মাধ্যমে মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণ এবং সকলের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে এখানের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান অপরিসীম ভূমিকা পালন করছেন।
বারহাট্টা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক পরিসংখ্যানে জানা গেছে, করোনাকালে এখান থেকে মোট ৫ হাজার ৫৭৩ জনের করোনার নমুনা পরীক্ষা পাঠানো হয়েছে। তন্মধ্যে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৬১৬ জন। আক্রান্ত ১৮৭ জন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন এবং হোম আইসোলেশনে থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন ২৯০৮ জন এবং মারা গেছেন ১৮ জন।
এ ছাড়াও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, নিয়মিত করোনা টিকাদান কার্যক্রমের পাশাপাশি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনায় গণটিকা প্রদান কার্যক্রম সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে এবং এখন পর্যন্ত ১ লাখ ৭৪ হাজার ৫৮১ জনকে করোনার টিকা প্রদান করা হয়েছে।
তন্মধ্যে ১ লাখ ৫ হাজার ৫৬৬ জনকে প্রথম ডোজ, ৬৮ হাজার ১৫০ জনকে দ্বিতীয় ডোজ এবং ৮৬৫ জনকে তৃতীয় ডোজ টিকা প্রদান করা হয়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সকল চিকিৎসক এবং অন্য স্বাস্থ্যকর্মীদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা, উপজেলা প্রশাসন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ সকলের সার্বিক সহযোগিতায় আমি চেষ্টা করে যাচ্ছি সেবার মান বৃদ্ধিসহ হাসপাতালের উন্নয়ন এ ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে।
সোহেল খান দূর্জয়
নেত্রকোনা প্রতিনিধি
০৮.০২.২০২২ ইং