শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৩২ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক:// নিউজ দৈনিক ঢাকার কন্ঠ
ঢাকা, ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ইং সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেছেন, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক আবেগের-ভালোবাসার-ভ্রাতৃত্বের-সৌহার্দ্যরে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন ভারত কেবল বাঙালি শরণার্থীদের আশ্রয় দান ও খাদ্য সরবরাহই করেনি, ভারত আমাদের মুক্তিযুদ্ধে সশস্ত্র অংশগ্রহণ করার মধ্য দিয়ে তাদের জীবনও উৎসর্গ করেছে। যুদ্ধোত্তর স্বাধীন বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জনে পালন করেছে অসাধারণ বন্ধুর ভূমিকা। তাই বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক ঐতিহাসিক, আত্মিক এবং রক্তের বন্ধনে আবদ্ধ।’
প্রতিমন্ত্রী আজ বিকালে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতার সেন্ট্রাল পার্কে পাবলিশার্স এন্ড বুকসেলার্স গিল্ড আয়োজিত ‘৪৫তম আন্তর্জাতিক কলকাতা পুস্তক মেলা ২০২২’ -এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়।
মমতা বন্দোপাধ্যায় বলেন, আমি বাংলা ও বাংলাদেশের মধ্যে প্রভেদ করতে পারি না। দু’বাংলার সর্ম্পকের সীমানা দড়ি দিয়ে বেঁধে দেয়া যায় না। দু’বাংলার সম্পর্ক চিরমধুর। তিনি বলেন, বাংলার সভ্যতা ও সংস্কৃতি মিশে তৈরি হয় বিশ্বসভ্যতা।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ভারত ও বাংলাদেশ দু’দেশের জাতীয় সংগীতের রচয়িতা বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। আবার বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্ম পশ্চিমবঙ্গের আসানসোলের চুরুলিয়া গ্রামে। তিনি বলেন, ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বাংলাদেশের মতো এপার বাংলায়ও যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হয়।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী বলেন, দু’বাংলা হাজার বছরের ঐতিহ্যবাহী এক অভিন্ন বাঙালি সংস্কৃতির ধারক ও বাহক। দু’বাংলার শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতিকে একই সুঁতোয় গাঁথা ও মেলবন্ধনের অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে সাংস্কৃতিক বিনিময়। আর এর অন্যতম উপকরণ হচ্ছে পারস্পরিক বইমেলায় অংশগ্রহণ।
সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী বলেন, কলকাতা পুস্তক মেলা বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ বইমেলা হিসাবে পরিচিতি লাভ করেছে। এটি মূলতঃ ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বইমেলা হলেও বাংলা ভাষাভাষী মানুষ বিশেষ করে বাংলাদেশীদের নিকট এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বইমেলা হিসাবে দীর্ঘদিন ধরে স্বীকৃত ও সমাদৃত হয়ে আসছে। কলকাতার সাংস্কৃতিক ইতিহাসে মেলাটি একটি বিশিষ্ট স্থান দখল করে আছে।
কে এম খালিদ বলেন ‘বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী দেশরতœ শেখ হাসিনার দক্ষ, বলিষ্ঠ ও দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশ শুধু অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে নয়, শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতির ক্ষেত্রেও সমানতালে এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, ৪৫তম আন্তর্জাতিক কলকাতা পুস্তক মেলা সমগ্র বিশ্বে বাংলাদেশের শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতিকে ছড়িয়ে দেয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
অনুষ্ঠানে সম্মানীয় বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তৃতা করেন পশ্চিমবঙ্গের বিশিষ্ট লেখক সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় এবং বাংলা একাডেমির সভাপতি ও বাংলাদেশের বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন পাবলিশার্স এন্ড বুকসেলার্স গিল্ড এর সভাপতি সুধাংশু শেখর দে। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন পাবলিশার্স এন্ড বুকসেলার্স গিল্ড এর সাধারণ সম্পাদক ত্রিদিব কুমার চট্টোপাধ্যায়।
সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ বলা হয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের জন্মশতবর্ষ, নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বোসের ১২৫তম জন্মজয়ন্তী, ভারতের স্বাধীনতার ৭৫ বছর, বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর এবং ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রীর সুবর্ণজয়ন্তী- এ পাঁচ ঐতিহাসিক ঘটনার সন্ধিক্ষণে আয়োজিত এবারের কলকাতা আন্তর্জাতিক পুস্তকমেলার ক্যাপশন নির্ধারণ করা হয়েছে- ‘সৃজনে মননে মানবিক দেশ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের বাংলাদেশ।’ বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নকে সাজানো হয়েছে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের আদলে। এছাড়া কলকাতা বইমেলার প্রধান চারটি প্রবেশদ্বারের মধ্যে তিনটি সাজানো হয়েছে বঙ্গবন্ধুর বিখ্যাত ৩টি বইয়ের আদলে। বইগুলো হচ্ছে- বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী, কারাগারের রোজনামচা এবং আমার দেখা নয়া চীন। বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নে মোট ৫০টি স্টলে ৭টি সরকারি ও ৩৫টি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান মিলিয়ে মোট ৪২টি প্রকাশনা সংস্থা অংশগ্রহণ করছে। সব মিলিয়ে প্রায় সাড়ে ১০ হাজারের বেশি শিরোনামে থাকছে দুই লাখেরও বেশি বই। ৩ এবং ৪ মার্চ মেলা প্রাঙ্গণে দু’দিনব্যাপী উদ্যাপিত হবে-‘বাংলাদেশ ডে’। ৪৫তম আন্তর্জাতিক কলকাতা পুস্তকমেলায় থাকছে ১৩
থাকছে ৬০০টি বই ও ২০০লিটল ম্যাগাজিন স্টল ছাড়াও অন্যান্য স্টল। মেলা চলবে ২৮ ফেব্রুয়ারি হতে ১৩ মার্চ পর্যন্ত।