শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৫৫ অপরাহ্ন
সিলেটের কোম্পানীগঞ্জে বাড়িতে ডেকে এনে পরিকল্পিত ভাবে যুবককে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। উপজেলার ২নং ইসলামপুর ইউনিয়নের ১নং ওয়াডের আমেরতল গ্রামে এই ঘটনা ঘটে ।
নিহত শাহ আলম (৩২) নতুন জীবনপুর(গাছঘর)গ্রামের আওয়ামীলীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা সাবেক মেম্বার হাতেম আলী(হাতেম মেম্বার) পুত্র। খুনের পর লাশটি পার্শ্ববর্তী চেপ্টা বিল(মাসুকের বান্ধের ডোবা)য় পানিতে হাত-পা বেধে গুম করে রাখে। এ ঘটনায় আছমা বেগম (৩০) নামে এক মহিলাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্যে আটক করা হয়। আটকের পর হত্যার বিষয়টি অকপটে স্বীকার করে। সে জানায় হত্যাকাণ্ডে তার স্বামী এখলাছ সহ ৪ জন অংশগ্রহণ করে। কিন্তু লাশ কোথায় লুকিয়ে রাখা হয়েছে তা জানেনি বলে জানায়। কি কারনে তাকে হত্যা করা হয়েছে এ বিষয়ে কিছুই বলেনি সে।
স্থানীয়সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার (১০ মে) দিবাগত রাত ১১ টা থেকে ১২ টার মধ্যবর্তী সময় আমেরতল গ্রামের হাজী ফুলমিয়া পুত্র এখলাছ মিয়া’র(৩৩) ঘরে শাহ আলম কে ফোনে ডেকে নিয়ে হাত পা বেধে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়। হত্যার পর লাশ গুম করার জন্যে পার্শ্ববর্তী চেপ্টা বিল(মাসুকের বান্ধের ডোবা)য় নেওয়ার সময় ইয়াকুব মিয়া নামে এক যুবক সব কিছু দেখে ফেলে। প্রত্যক্ষদর্শী ইয়াকুবকে ম্যানেজ করার চেষ্টা করলেও ইয়াকুব কৌশলে পালিয়ে এসে নিহতের পিতা মুক্তিযোদ্ধা হাতেম আলীকে জানায়। হাতেম আলী সহ কয়েকজন নিহতের লাশ উদ্ধারে এখলাছুরের বাড়িতে গেলেও লাশ সহ হত্যাকারীদের খুঁজে পায়নি। তখন এখলাছুরের ঘরে নিহতের রক্ত দেখতে পেয়ে কোম্পানীগঞ্জ থানা পুলিশকে বিষয়টি অবগত করেন তারা।
সারারাত বিভিন্ন জায়গায় লাশ খুঁজলেও পাওয়া যায়নি। সকালে পুলিশ সহ স্থানীয়রা লাশ উদ্ধারকাজে অংশগ্রহণ করেন। দীর্ঘ সময় খোঁজাখুঁজির পর বিকাল চারটায় ঘটনাস্থল থেকে প্রায় এক কিলোমিটার পশ্চিমে চেপ্টা বিল(মাসুকের বান্ধের ডোবা)য় পানিতে হাত পা অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। লাশ উদ্ধারের পরে এলাকায় শোকেরমাতম শুরু হয়। অনেকে হত্যাকারীদের বাড়িতে হামলার জন্যে উদ্যত হলেও পুলিশ তাদের নিয়ন্ত্রণ করেন। ঘটনার পরপরই হত্যাকারীরা গা-ঢাকা দেয়।
প্রত্যক্ষদর্শী ইয়াকুব মিয়া জানান, রাত বারটা থেকে সারে বারটার সময় আমেরতল গ্রামের মৃত হাজী ফুল মিয়ার পুত্র এখলাছুর মিয়া(৩৩),এখলাছুরের ভাতিজা আবুল হোসেনের পুত্র জাকির হোসেন(৩০), ও এখলাছুরের ভাগনা পার্শ্ববর্তী রনিখাই ইউনিয়নের নোয়াগাঁও গ্রামের ক্বারি আমিনুর রশীদের পুত্র তাজুল মিয়া(৩৪) ও একই গ্রামের তার বোন জামাই মৃত ধনা মিয়ার পুত্র আলা উদ্দিন (২৭) নিহতের লাশটি বাড়ির বাইরে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। এ সময় হত্যাকারী তাকে দেখে ফেলায় সে প্রাণভয়ে পালিয়ে এসে নিহতের পিতাকে বিষয়টি অবগত করে।
লাশ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) সুকান্ত চক্রবর্তী। সন্দেহভাজন একজন মহিলাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
ঘটনার খবর পেয়ে সিলেট জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) শাহরিয়ার আলম,সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার প্রবাস কুমার সিংহ,জেলা গোয়েন্দা ওসি (উত্তর) রেফায়াত আহমদ চৌধুরী,কোম্পানীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ সহ পুলিশের একাধিক সদস্য ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।