বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেছেন, দেশের মানুষের কথা ভেবে জাতির পিতা সারাজীবন আন্দোলন করেছিলেন। তিনি সব সময় দেশকে নিয়ে স্বপ্ন দেখতেন।তার সেই স্বপ্ন পূরনের জন্য আমাদের আরেকটা যুদ্ধ করতে হবে। সেই যুদ্ধের মধ্য দিয়ে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট যে ঘাতরা জাতির পিতাকে নিষ্ঠুর ভাবে হত্যা করেছে তাদের মধ্যে যারা এখনও বেচে আছে তাদের শিকড় উপড়ে ফেলতে হবে। যতদিন পর্যন্ত এদের আমরা ধ্বংস করতে না পারব ততদিন পর্যন্ত আমাদেরকে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে হবে।
রবিবার (২৮ আগস্ট) বিকেলে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ খামারবাড়িতে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে 'শোষিত মানুষের কণ্ঠস্বর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান থেকে জননেত্রী শেখ হাসিনা' শিরোনামে প্রতিরোধ যোদ্ধা পরিষদের আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধু হত্যার সাথে জড়িত। বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বাঁচানোর সকল চেষ্টাই করেছে সে। তাদের রক্ষায় জিয়া ইনডেমনিটি আইন জারি করেছিলো। জিয়া দেশের সংবিধানকে কলঙ্কিত করেছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে এটি জঘন্যতম এক অধ্যায়। জিয়া বঙ্গবন্ধুর খুনিদের পুরস্কৃত করে বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দিয়েছিল। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার আগমনের মধ্য দিয়ে তিনি খুনিদের বিচারের কাঠগড়ায় নিয়ে এসেছেন। তাদের বিচার কার্যকর করেছেন এবং তাদের একটি অংশ এখনো পালিয়ে বেড়াচ্ছে। আমরা আশা করব অচিরেই তাদের ধরে ধরে এনে ফাঁসির রায় কার্যকর করা হবে।
বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, আমাদের ভিতরে কখনো কখনো দিক ভ্রষ্ট হওয়ার বিষয়টি বারবার প্রতিফলিত হয়েছে। আমাদের ভিতরেও বেইমান এর সংখ্যা কম নয়। এদের প্রতি লক্ষ্য রেখে আমাদের জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করে যেতে হবে এবং শেখ হাসিনাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। এর মধ্যে যারা বাধা সৃষ্টি করবে তাদেরকে শক্ত হাতে প্রতিহত করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, জাতির পিতাকে আমরা কখনো ফিরে পাবোনা। তবে তার অসম্পূর্ণ কাজ আমারা সম্পূর্ণ করতে পারি। এতে তার আত্মা শান্তি পাবে। বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে আমরা জাতির পিতার আত্মাকে শান্তি দিতে চাই এবং তার হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে আমরা প্রতিশোধ নিতে চাই। প্রতিশোধ হলো মানুষের হৃদয়ে তাদের জন্য ঘৃণা। আজ বাংলাদেশের মানুষ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আশার আলো দেখছে। দেশে উন্নয়ন ও অগ্রগতি হচ্ছে। বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে ও বাংলাদেশ আজ বিশ্বের সম্মানিত জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। এই সবকিছু সম্ভব হয়েছে শেখ হাসিনার জন্য।
প্রতিরোধ যোদ্ধাদের উদ্দেশ্যে বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন,১৯৭৫ সালের ১৫ ই আগস্ট এর পর যারা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি ছিল তাদের কাছে ছিল কষ্টের সময়। আপনারা তখন তাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ করেছিলেন।আপনারা টিকতে পারেননি। আমরা সেদিন যা পারিনি আপনারা তা করে দেখিয়েছেন। প্রতিরোধ করতে গিয়ে আপনারা অনেক কিছুই হারিয়েছেন। আপনাদের পরিবারের অনেক ক্ষতি হয়েছে। সে ক্ষতি হয়তো পূরন হওয়ার মতো নয়। একটা আদর্শ কে ভালোবেসে আপনারা সে দিন প্রতিরোধ করেছিলেন। যারা জাতির পিতাকে হত্যা করেছে তাদের দাত ভাঙা জবাব দেওয়ার জন্য আপনারা প্রতিরোধ করেছিলেন। এর কারনে ২১ বছর পর মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আমরা ঘুরে দাড়িয়েছি।
তিনি আরও বলেন, আপনারা হলেন মহান মুক্তিযোদ্ধা। জাতির পিতার আদর্শের যোগ্য উত্তরসূরী। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আপনাদের মর্যাদা সবার উপরে। তাই আপনাদের আন্দোলন সংগ্রাম করার কোন প্রয়োজন নেই।আপনারা বাংলাদেশের মানুষের হৃদয়ে বাস করেন।আপনাদের মধ্যে যদি কেউ ভেবে থাকে আপনাদের কোন মর্যাদা নেই তিনি ভূল ভাবছেন।মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনাদের সাথে আছেন।
প্রতিরোধ যোদ্ধা পরিষদের সভাপতি আনোয়ারুল হক সেলিম তালুকদারের সভাপতিত্বে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রতিরোধ যোদ্ধা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মানু মজুমদার এমপি ও প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য দীপংকর তালুকদার এমপি, বুয়েটের প্রো ভিসি ড.আব্দুল জব্বার খান, প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ এর মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ প্রমুখ।