কুড়িগ্রামে বারবার বন্যা আক্রান্ত হওয়া কৃষিকাজের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে এখন কলা চাষে স্বপ্ন বুনছেন এ জেলার চরাঞ্চলের কৃষকরা। অনান্য ফসলের তুলনায় কলা চাষে খরচ কম, লাভ বেশি হওয়ায় পতিত ও অনাবাদী জমিতে কলা চাষাবাদে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। শুধু জৈব সার ব্যবহার করে কলা চাষ করা সম্ভব বলে এটি চাষে খরচ কম।
এছাড়াও কলা চাষে পরিচর্যা কম করতে হয়। অন্যদিকে কৃষি শ্রমিক বেশি লাগে না বলে কৃষকদের কলা চাষে আগ্রহ বেড়েছে বলে জানিয়েছে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, জেলায় ২৯০ হেক্টর জমিতে কলা চাষ হচ্ছে। এর মধ্যে চরাঞ্চলে কলা চাষের জমির পরিমাণ প্রায় ১০৫ হেক্টর। নদীর তীরবর্তী চরাঞ্চলে কলা চাষের চাহিদা বাড়ছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবার কলার বাম্পার ফলন হবে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা।
সরেজমিনে দেখা যায়, কুড়িগ্রামের ধরলা ও দুধ কুমর নদের অববাহিকার বেশ কিছু চরাঞ্চলে এবার কলার চাষ ভালো হয়েছে। সবুজ পাতায় ছেয়ে গেছে চরাঞ্চলে মাঠ। উত্তরীয় হাওয়ায় দুলছে কলার পাতা। কিছু কলা গাছের মুচি চোখে পড়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় কৃষকরা লাভবান হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন।
সদর উপজেলার ধরলা পাড়ের কৃষক আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, জৈব সার ব্যবহার করার কারণে এখানে ফলন ভালো হয়। এছাড়াও অন্যান্য ফসলের চেয়ে লাভ বেশি এবং খরচ কম হওয়ায় আমাদের এলাকার কৃষকরা এখন কলা চাষে ঝুঁকছেন বেশি। আমি ৬ বছর যাবত কলা চাষ করে আসছি।
তিনি আরও বলেন, এ বছর ৮ বিঘা জমিতে সাগর কলা, মালভোগ, অমৃত সাগর ও মেহর সাগরসহ বিভিন্ন জাতের চারা রোপণ করেছিলাম। প্রতি বিঘা জমিতে ৩০০ থেকে ৪০০ চারা রোপণ করা যায়। বছর খানেকের মধ্যেই রোপণকৃত গাছ থেকে কলা পাওয়া যায়। আমার কলা চাষে সফলতা দেখে এলাকার কৃষকদের মাঝে কলা চাষের আগ্রহ বাড়ছে।
ওই এলাকার বেলাল হোসেন বলেন, গত বছর ২ বিঘা জমিতে কলা চাষ করেছিলাম, ফলন ও দাম ভালো পেয়েছি। এ বছর কলা চাষের জমি আরও বাড়িয়ে ৩ বিঘা জমিতে কলা চাষ করেছি। আশা করি বেশ লাভবান হব।
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মো. শামসুদ্দিন মিঞা জানান, এ বছরে কুড়িগ্রাম জেলায় সমতল চরাঞ্চল ও পতিত জমিতে ৩১০ হেক্টর জমিতে কলা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। অর্জিত হয়েছে ২৯০ হেক্টর। গত বছরের তুলনায় এ বছর ১২০ হেক্টর বেশি জমিতে বিভিন্ন জাতের কলা চাষ হচ্ছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে কৃষকরা লাভবান হবেন।