মফস্বল সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে সংসারের টানাপোড়নের মুখেও প্রতিদিন হাসিমুখে সংবাদ সংগ্রহে বেরিয়ে পড়ি মাঠে। রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে, দুর্যোগের মধ্যেও করি দায়িত্ব পালন। গভীর থেকে সত্য বের করে আনতে কখনো নিজের জীবন বিপন্ন হওয়ার আশঙ্কাকে পেছনে ফেলে কাজ করে। ভুলে যায় খাওয়া-দাওয়া। সঠিক তথ্য দেশের মানুষের কাছে তুলে ধরতে গিয়ে অনেক সময় নিজের পরিবারের কথাও ভাবা হয় না। নিজের আরাম আয়েশ এমনকি বিশ্রামও ঠিকভাবে করতে পারি না। কারণ সাংবাদিকরা জাতির জাগ্রত বিবেক বলে কথা। তাই সব সময় জাগ্রত থাকতে হয়। দেশ ও দশের পাহারাদারের দায়িত্বে।
মানুষের কথা বলে, মানবতার কথা বলে। ক্ষুধার্ত-নিপীড়িত মানুষের কথা বলে। অন্যায়, অবিচার, অপরাধের কথা তুলে ধরে। আবার সরকারের উন্নয়নের কথাও তুলে ধরে। পোশাক শ্রমিক থেকে শুরু করে সমাজের সব স্তরের, সব পেশার মানুষদের প্রতি বৈষম্য নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করেন সাংবাদিকেরা৷ কিন্তু সেই সাংবাদিকেরা যখন নানা ক্ষেত্রে বৈষম্যের শিকার হন, তাদের দাবি আদায়ের রাস্তা খুবই সংকীর্ণ৷ বেতন বৈশম্যের শিকার হচ্ছে তার খবর কাকে বলবো? শোনারও কেউ নেই, বলারও জায়গা নেই।
মাঠের সাংবাদিকদের দীর্ঘশ্বাস কি পৌঁছে ঢাকার মিডিয়া হাউজে? কখনও কি জানতে চায় কেমন করে চলছে মফস্বল সাংবাদিকদের সংসার। পরিবারের ভরন মেটাচ্ছে বা কিভাবে। আমার মতো মফস্বলের সাংবাদিকরা মান সম্মানের প্রশ্নে মুখ ফুটে কারও কাছে বলতেও পারছেন না, আবার চলতেও পারছেন না। মফস্বল সাংবাদিকদের সংসার কিভাবে চলছে এ খবর কেউ নিচ্ছে কি? এর উত্তরে কী বলবো? কে খবর নেবে? মিডিয়া মালিক নাকি সরকার? প্রথমেই বলতে হয় যে প্রতিষ্ঠানে কর্মরত সেই মিডিয়ার দায়িত্বই সবার চেয়ে বেশি। তারপরেও সরকারের ভূমিকাও কম নয়। মিডিয়া কর্তৃপক্ষ সম্পর্কে কী বলবো? মিডিয়া সম্রাটরাই ভালো বলতে পারেন তারা সেই দায়িত্বটুকু নুন্যতম পালন করছেন কি না? আমি বলবো এই নিয়ে কোন মাথাব্যথা নেই তাদের। তবে বিনা বেতনে শ্রম আদায় করে নিতে চুল পরিমান ছাড় নেই। পান থেকে চুন খসলেই কান ফাটনো গগন কাঁপানো ঝারি। বিনা বেতনে চাকরি নামক সোনার হরিনটি হারিয়ে যাওয়ার শঙ্কা। হায়রে পেশা! গ্রাম বাংলার লোকর কথায় শোনা যায়, ভাত দেয়ার মুরদ নাই কিল মারার গোসাই।
হলুদ সাংবাদিক বানানোর দায় কি আমাদের? এ দায় মিডিয়া হাউজের কর্তৃপক্ষের। বিনা বেতনে শ্রম ও বিজ্ঞাপন আদায়ে আইডি কার্ড দিয়ে ছেড়ে দিচ্ছে শিক্ষাগত যোগ্যতা বা পারিবারিক সামাজিক খোঁজ খবর না নিয়েই। কোন কোন অসাধু মিডিয়া হাউজ কর্তৃপক্ষের নামে অভিযোগ শোনা যায়, অর্থের বিনিময়েও নাকি আইডি কার্ড বিতরণ করেন। তবে ওরা পেশাদার কোন প্রতিষ্ঠান নয়, অপেশাদার, বলতে পারি হলুদ সাংবাদিক বানানোর কারখানা। অথচ মাঠ পর্যায়ে প্রকৃত সাংবাদিকদের গালমন্দ শুনতে হচ্ছে হলুদ সাংবাদিকতা নিয়ে।
বেতন বৈশম্যের শিকারের পরও কষ্ট লাগে ঢাকায় মিডিয়া হাউজের মোটা বেতনে চাকরিরত বড় বড় পদে দায়িত্বদের যখন দেখি আমাদের মূল্যয়ন নিয়ে। তুচ্ছ তাচ্ছিল্য তির্যক ভাষায় মফস্বলের সাংবাদিক ও সাংবাদিকতা নিয়ে নানা মন্তব্য। অথচ মফস্বল মানেই সারা বাংলাদেশ। মফস্বলের সাংবাদিকদের খবরে দিয়েই পত্রিকার পাতা ভরে। পত্রিকাটি পরিপূর্ণ হতে মফস্বলের খবর ছাড়া সম্ভব হয় না।
মিডিয়া হাউজের দারোয়ানের সমান বেতন না পেলেও দিনরাত খবর সংগ্রহ করে পরিবেশন করি মিডিয়া হাউজে হাসিমুখে। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত থাকতে হয় সংবাদের খোঁজে। কখন বাড়ি ফিরবো তাও জানি না। সারাদিন খবরের পেছন পেছন ছুটি। নানান উৎকণ্ঠায় থাকে আমার পরিবার। কী না কী হয়। কত উৎকণ্ঠা। সঙ্গ পায় না, একা একা খাওয়া খায়। অনেক রাত পর্যন্ত জেগে থাকে, কখন বাড়িতে ফিরে। আমার তো নিরাপত্তা নেই। পরিবারের আপত্তি, কেন সাংবাদিকতা করি।
মাঝে মাঝে জীবননাশের হুমকিও আসে। হামলাও হয়, মামলাও হয়। তবুও ভয় না করে কাজ করি। পদে পদে বিপদ তা জেনেও আমরা পিছপা হই না। ঝুঁকি থাকা সত্বেও আমি নির্ভিক, আমি সৈনিক। সংবাদপত্র হল সমাজের দর্পণ। সে দর্পণ সবার মাঝে বিলিয়ে দিতেই রাষ্ট্রের কাজে নিবেদিত করেছি নিজেকে। নিজের জন্য নয় মানুষের জন্য কাজ করতে পারছি এটাই সার্থকতা।
আমার তোলা একটি ছবি, কিংবা আমার একটি লেখার দ্বারা হয়তো অনেকেরই ভাগ্যের দ্বার খুলে যায়। মানবতার অধিকার খুঁজে পায়। নির্যাতিত, নিপীড়িতরা বিচার পায়। এটাই আমরা সার্থকতা। এটা নিয়েই আমি মনের শান্তি খুঁজে ফিরি। পরিশ্রম আর বিনা বেতনে কি সুন্দর আমাদের জীবন। দিনশেষে হাসিমুখে মেনে নিতে হয় সব কিছু। এভাবেই যাচ্ছে আমাদের দিনকাল। তবুও বলবো ভালো থাকুক সবাই। ভালো থাকুক আমার স্বাধীন বাংলাদেশ।
আমি রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ গণমাধ্যমকর্মী। আমি অতি সামান্য হলেও একজন দায়িত্বশীল সচেতন নাগরিক। আমার উপর রাষ্ট্রের অনেক দায়িত্ব। শুধু কি আমার রাষ্ট্রের প্রতি আমারই দায়িত্ব? রাষ্ট্রের কি আমার প্রতি কোন দায়িত্ব নেই? মিডিয়া হাউজের কর্তৃপক্ষও দায়িত্ব নিয়েছেন, না ভাবছেন আমাদের কথা। মফস্বল সাংবাদিকদের জীবন থেকে কবে কোন দিন সেই অভিশপ্ত দুর্দশার নক্ষত্রগুলো দুর হবে? কবে মফস্বল সাংবাদিকরা তাদের পরিপূর্ণ অধিকার ফিরে পাবে? কোন দিন মফস্বল সাংবাদিকদের প্রতি সু-নজরে তাকাবে রাষ্ট্রের বিবেকবান ব্যক্তি ও মিডিয়া হাউজের কর্তৃপক্ষের মালিকরা? মফস্বল সাংবাদিকদের জীবনের দুঃখ কষ্টের কথা গুলো কাকে বলব? কে দরদী সহমর্মি হয়ে পাশে দাঁড়াবে? এই অপেক্ষাকৃত জীবন কাটছে মফস্বল সাংবাদিকদের।
সাংবাদিকতায় আস্হার অভাবঃ উল্লেখযোগ্য উন্নতির কথা স্বীকার করার হার সবচেয়ে বেশি (৭১ শতাংশ)। একইসাথে তারা এই ব্যবহারের সাথে সম্পৃক্ত গোপনীয়তা ও নিরাপত্তা ঝুঁকি নিয়েও সবচেয়ে বেশি উদ্বিগ্ন (৮৯ শতাংশ)।
টেকসই জীবনযাপনে সাংবাদিকদের ক্রমবর্ধমান ভূমিকাঃ টেকসই জীবনযাত্রার প্রসঙ্গটি বর্তমান যুগে ক্রমশই প্রতীয়মান হয়ে উঠছে। সমীক্ষা থেকে দেখা যায় যে, মানুষ আরও টেকসই জীবনযাপনের সহায়ক হিসেবে আশাবাদী শতকরা ৮৪ ভাগ বাংলাদেশের মানুষ বিশ্বাস করেন।
ডিজিটাল বৈষম্য দূর করছে প্রযুক্তির মাধ্যমে সাংবাদিকরাঃ সমীক্ষায় সাংবাদিকদের ব্যবহারের বৃহত্তর সম্ভাবনার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে।সাংবাদিকদের কানেক্টিভিটি অন্তর্ভুক্তি প্রচারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে। সাংবাদিকতায় কানেক্টিভিটি সাধারণের জন্য শিক্ষা (৮৪ শতাংশ) এবং স্বাস্থ্যসেবার (৬৫ শতাংশ) মতো প্রয়োজনীয় সেবা প্রাপ্তি আরো সহজলভ্য করে। উল্লেখ্য, আমরা আরও দেখতে পেয়েছি যে, পুরুষদের তুলনায় অনেক বেশি নারী মনে করেন সাংবাদিকতা পেশা সংযোগ তাদের কর্মসংস্থান এবং উপার্জনের বিকল্পগুলো উন্নত করেছে। সেইসাথে এটি তাদের দৈনন্দিন জীবনে আরও বেশি দক্ষতা এবং উৎপাদনশীলতা অর্জনে সহায়তা করেছে।
সাংবাদিকতা বিষয়ে কানেক্টিভিটি আমাদের দৈনন্দিন জীবনের জন্য আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে; তবে, এ বিষয়ে সঠিক দক্ষতা ও সচেতনতার অভাব – যেমন নিরাপত্তা ও গোপনীয়তা সংক্রান্ত সমস্যাগুলো চিহ্নিত করার ক্ষেত্রে ব্যর্থতা বা সংযোগের বাইরে থাকা এখন আমাদের জন্য স্বাস্থ্য, অর্থনীতি এবং কর্মসংস্থানের মতো সুযোগগুলো সীমিত করে তুলতে পারে। ডিজিটাল খাতে সাংবাদিকতার ঘাটতিগুলো কী এবং কীভাবে সে ঘাটতিগুলো পূরণ করা যায়, তা আমাদের জানতে হবে। সেইসাথে আমাদের অনলাইন কার্যক্রমগুলোর কার্বন ফুটপ্রিন্টের ব্যাপারে জানতে হবে। কেননা, সাংবাদিকরা একটি ভবিষ্যৎ গড়ার লক্ষ্যে একসাথে কাজ করছে, যেখানে সাংবাদিকরা সকলের জন্য টেকসই ভূমিকা রাখে ও ক্ষমতায়নে সহায়ক থাকে।
০১) : সাংবাদিকতা পেশায় মানোন্নয়নঃ
মানোন্নয়ন বলতে যা বুজনো হয়ঃ ১. জ্ঞান অর্জনের মাধ্যমে ২. চিন্তার উন্নতি সাধনের মাধ্যম্যে ৩. পরিপূর্ণ আনুগত্যের মাধ্যম্যে ৪. উন্নত ইবাদাত বান্দেগীর মাধ্যম্যে ৫. সর্বোপরি আমল-আখলাক সুন্দর করার মাধ্যম্যে ৬. বাহ্যিক আচরণের সুন্দর করার মাধ্যম্যে।
০২): জনশক্তির মানোন্নয়নঃ
১. অগ্রসরমান কর্মীদের বাছাই করে মানোন্নয়নের চেষ্টা করা ২. জনশক্তির প্রতিভা বিকাশের সুযোগ দান ও ব্যবস্থা করা ৩. সুদূর প্রসারী চিন্তা নিয়ে প্রতিভাবান কর্মীদের ব্যবহার করা ৪. জনশক্তির জ্ঞানগত ঘাটতি পূরণ ৫. বাছাইকৃত কর্মীদের ঈধঃধমড়ৎরপধষষু ব্যপক প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা ৬. নিস্ক্রিয়তার কারন নির্ধারণ ও প্রতিকার ৭. সাহচার্য দান(দায়িত্বশীল নিজে করে দেখানো/ গড়ফবষ ড়িৎশং) ৮. মান সংরক্ষনে নির্ধারীত প্রশিক্ষন প্রোগ্রামে অংশগ্রহন নিশ্চিত করতে হবে, মাত্রাতিরিক্ত ওয়ার্কসপ মানউন্নয়নের সঠিক পন্থা নয়।যেমন-টি এস, শব্বেদারী, সাধারণ সভা, বতৃতা প্রতিযোগীতার মাধ্যম্যে ৯. প্রস্তুতি গ্রহনে সহায়তা করা যেমন-দারস, আলোচনা, বিষয়ভিত্তিক নোট দিয়ে সহযোগিতা করে ১০. সুন্দর পরিকল্পনা করে দেয়া মাধ্যম্যে যেমন-সপ্তাহিক, মাসিক, বাৎসরিক পরিকল্পন করে দেওয়া ১১. কাজ দিয়ে কাজের তদারক করা ১২. জনশক্তির জন্য সর্বদা দোয়া করা।
৩): সাংগঠনিক মানােন্নয়নঃ
১. উপশাখা গুলোকে যথার্থ মানে উন্নিত করা ২. উপশাখার উদ্যোগে নিয়মিত প্রোগ্রাম হাতে নেয়া ৩. পযার্প্ত পরিমাণ বই নিয়ে চাহিদা অনুযায়ী পাঠাগার প্রতিষ্ঠা করা ৪. মাসের শূরুতে পরিকল্পনা গ্রহণ ও জনশক্তির মাঝে কর্ম বন্টন করা ৫. উপশাখার উদ্যোগে নিয়মিত দাওয়াতী কাজ করা ৬. উপশাখার উদ্যোগে নিয়মিত মানোন্ননের চেষ্টা করা ৭. জনশক্তির মধ্যে টীম¯প্রীট তৈরী করা ৮. আনুগত্য ও আন্তরিক পরিবেশ তৈরী করা ৯. রুহানী পরিবেশ সংরক্ষণ করা ১০. সাংগঠনিক শৃংখলা প্রতিষ্ঠা ও সংরক্ষণ করা।
নেতৃত্বঃ নেতৃত্বের অর্থে তাদের কোন বিশেষ ব্যক্তিকে আমরা জানি যেমনঃ ইমাম * খলিফা * আমির * খলিফা * খলিফাতুল্লাহ * খলিফাতুল মুসলিমিন * সাংবাদিক সাধারণ অর্থ-নেতা তিনটি অর্থ ঃ ১. যিনি সামনে চলেন। ২. নির্দেশ দানকারী। ৩. সবার পূর্বে নির্দেশ বাস্তবায়ন করেন।
নেতৃত্বের মানদণ্ডঃ বাংলাদেশে সাংবাদিকদের নেতৃত্বের মান দণ্ডঃ
কর্মীগঠনের ক্ষেত্রে সাংবাদিকদের পদ্দতি:
১. টার্গেট নির্ধারণ করতে হবে। যিনি অলস নন বরং কর্মঠ।যিনি বোকা নন বরং বুদ্ধিমান ও বিচক্ষণ। যিনি আত্ব কেন্দ্রীক নন বরং সামাজিক। যিনি অসৎপ্রবন নন বরং সৎ ও সত্যপ্রিয়।
২. কর্ম ক্ষেত্র তৈরীর জন্য প্রয়েজনীয় কাজগুলো সততার সঙ্গে করতে হবে।
৩. তার মধ্যে কর্মীর গুণাবলী তৈরী লক্ষ্যে পরিকল্পিত ভাবে ভুমিকা রাখতে হবে।