সোহেল খান দূর্জয় নেত্রকোনা :
নেত্রকোনার মদন উপজেলার কদমশ্রী দাখিল মাদ্রাসার তিনটি পদে নিয়োগে অনিয়ম, দুর্নীতি সহ ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে অত্র মাদ্রাসার সভাপতি এবং সুপারের বিরুদ্ধে। এ ব্যাপারে নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী জান্নাত আক্তার এর বাবা হারেছ মিয়া বিভাগীয় কমিশনার সহ বিভিন্ন দপ্তরে একটি লিখিত অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এনিয়ে এলাকাবাসীর মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছে সচেতন মহল।
নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ২৭ জানুয়ারি কদমশ্রী দাখিল মাদ্রাসার কম্পিউটার ল্যাব অপারেটর, নিরাপত্তাকর্মী ও আয়া এ ৩টি পদে নিয়োগের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় । তবে নিয়োগের আবেদন কারীগণ দাবি করছেন অত্র মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সাইদুল হক ও মাদ্রাসার সুপার এটিএম সাইফুল ইসলাম আগেই টাকার বিনিময়ে পছন্দের প্রার্থীদের নিয়োগ দিতে নানা অসাধু উপায় অবলম্বন করেন। তারা আরও দাবি করছেন পরীক্ষা হয়েছে শুধুমাত্র কাগজে-কলমে লোক দেখানোর জন্য। কিন্তু মাদ্রাসার সুপার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি তাদের নিজের আত্মীয়-স্বজন ও তাদের ছেলে বা মেয়েকে মাদ্রাসায় নিয়োগ দিয়েছে বলে দাবি করছেন। যাহা সম্পূর্ণ অনিয়ম ও সরকারি বিধি বহিভূত। নিয়োগ পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ্য ছিল গভর্নিং বডি/ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি/সদস্য সচিব/অন্য সদস্য কিংবা মাদ্রাসার অধ্যক্ষ/সুপার/অন্য শিক্ষকের কোন নিকট আত্মীয় বর্ণিত নিয়োগে প্রার্থী থাকলে তিনি নিয়োগ কমিটিতে থাকতে পারবেন না।
সরজমিনে গিয়ে গ্রামের লোকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, চাকুরী দেওয়ার নাম করে গ্রামের গরিব ও অসহায় মানুষকে ঠকিয়ে অনেক লোকের নিকট হতে সভাপতি ও সুপার অনেক টাকা আত্মসাৎ করেছেন। তাদেরকে চাকুরী না দিয়ে নিজস্ব প্রার্থীদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করছেন গ্রামবাসীরা। অত্র মাদ্রাসার সভাপতি খুবই বিত্তশালী এজন্য তাহার সাথে গ্রামের মানুষ কথা বললেই মানুষদের সাথে খারাপ আচরণ ও অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করেন । যাহার ফলে তাহার সাথে কেউ ভয়ে কথা বলতে সাহস পায় না। এ বিষয়টি সঠিকভাবে তদন্ত করে নিয়োগ পরীক্ষায় দুর্নীতির সাথে জড়িতদের শাস্তির আওতায় আনার জোর দাবি জানান গ্রামবাসীরা।
এ বিষয়ে আয়া পদে নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী ইসরাত জাহান বলেন, আমাকে চাকরি পাইয়ে দিবে বলে আশাবাদী করেন মাদ্রাসার সভাপতি সাইদুল হক। এজন্য তিনি আমার শশুরের কাছ থেকে তিন লক্ষ টাকা নিয়েছেন, পরীক্ষার হলে গিয়ে জানতে পারি এভাবে আরো অনেকের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন মাদ্রাসার সুপার ও সভাপতি। একই পদে নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী জান্নাত আক্তার বলেন, আমাকেও চাকরি দেবার কথা বলে আমার বাবার কাছ থেকে চার লক্ষ টাকা নেয় পরীক্ষার দিন আগে আরো ৫০ হাজার টাকার ম্যানেজ করে রাখার জন্য বলেন রাখার জন্য বলেন।
কম্পিউটার ল্যাব অপারেটরে অংশগ্রহণকারী একজন প্রার্থীর বাবার সাথে কথা বললে জানা যায় কম্পিউটারের ল্যাবের চাকরি দিবে বলে তার কাছ থেকে আড়াই লক্ষ টাকা নেয় সুপার ও সভাপতি ।
৩ পদে চাকরির দেওয়ার জন্য একাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাই চাওয়া হইলে নিয়োগে কমিটির সদস্য শাহ আলম বলেন,পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর রেজাল্ট ঘোষণা হওয়ার কথা একই দিনে নানা তাল বাহানা করে রেজাল্ট ঘোষণা করে নাই আজ দুই দিন যাবত আমি সভাপতি ও সুপার এর সাথে যোগাযোগ করতে পারছি না আমার কাছে একাধিক ব্যক্তিবর্গ এসেছেন যে তাদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়েছে চাকরি দেওয়ার কথা বলে এরকম ঘটনা যদি ঘটে তাহলে আমি সেটা চূড়ান্ত বিচার দাবি জানাই ।
সভাপতি ও সুপারের মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে মোট ফোন রিসিভ না করাই তাদের বক্তব্য দেওয়া সম্ভব হয় নাই।