ঢাকা, ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ইং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সরকার দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ, নৈতিক মানবিক মূল্যবোধসম্পন্ন আগামী প্রজন্ম এবং সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে দেশের সামগ্রিক শিক্ষা ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন এনেছে।
তিনি বলেন, শিক্ষাকে যুগোপযোগী করতে জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০ প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করেছি। প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট ফান্ড গঠন করা হয়েছে। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড প্রকাশিত পাঠ্যপুস্তকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও- মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে। নারী শিক্ষা প্রসারে নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী ‘৫১তম শীতকালীন জাতীয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতা-২০২৩’ উপলক্ষে আজ দেয়া এক বাণীতে আরো বলেন, ২০১০ সালের পহেলা জানুয়ারি থেকে উৎসবমুখর পরিবেশে শিক্ষার্থীদের মাঝে বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ করা হয়েছে। ২০১৭ সাল হতে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য ব্রেইল পাঠ্যপুস্তকসহ চাকমা, মারমা, গারো, ত্রিপুরা ও সাদারি এই ৫টি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মাতৃভাষায় রচিত পাঠ্যপুস্তক বিনামূল্যে বিতরণ করা হচ্ছে। শিক্ষকগণের পদমর্যাদা ও বেতনবৃদ্ধি করার পাশাপাশি তাঁদের মানোন্নয়নে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ৫১তম শীতকালীন জাতীয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতা-২০২৩ যশোরে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে জেনে তিনি আনন্দিত। প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী সংশ্লি¬ষ্ট সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে তিনি এ উপলক্ষ্যে স্মরণিকা ‘চৌকস’ প্রকাশের উদ্যোগকে স্বাগত জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের সকল অঞ্চলের ছেলে-মেয়েরা যাতে ক্রীড়া ক্ষেত্রে অবদান রাখার সমান সুযোগ পায় এ লক্ষ্যেই স্বাধীন বাংলাদেশের মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করে ১৯৭২ সালে জাতীয় ক্রীড়া সমিতি পুনর্গঠিত হয়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এই সমিতির নামকরণ করেন ‘বাংলাদেশ জাতীয় স্কুল ও মাদ্রাসা ক্রীড়া সমিতি’। এই সমিতিই বর্তমানে আরো বৃহত্তর পরিসরে ‘বাংলাদেশ জাতীয় স্কুল, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা ক্রীড়া সমিতি’ নামে দেশব্যাপী ক্রীড়া কর্মকান্ড পরিচালনা করছে। এই সমিতির মাধ্যমে পরিচালিত মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের খেলাধুলার সবচেয়ে বড় উৎসব জাতীয় এ ক্রীড়া প্রতিযোগিতা।
বর্তমানে ক্রীড়া শিক্ষা ও এক্ষেত্রে দক্ষতা-নৈপুণ্য অর্জনের বিষয়টি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন , ‘ আমরা ক্রীড়া শিক্ষাকে জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ স্থান দিয়ে বাস্তবমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। শিক্ষার্থীদের খেলাধুলায় আগ্রহী করে তোলার পাশাপাশি মাধ্যমিক স্তরের পাঠ্যপুস্তকে শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া শিক্ষাকে নতুনভাবে ঢেলে সাজানো হয়েছে। ক্রীড়াকে তৃণমূল পর্যায়ে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য প্রতিটি উপজেলায় একটি করে শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ করছি। আমরা বিদ্যালয়ের ক্রীড়ামাঠ সংরক্ষণ, বিদ্যমান কিছু স্টেডিয়ামকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীতকরণ, ক্রীড়া নিয়ে উচ্চতর পড়াশুনার সুযোগ অবারিত রাখা ইত্যাদি কার্যক্রম হাতে নিয়েছি। ক্রীড়াকে উৎসবমুখর পরিবেশে পালন করার জন্য ৬ এপ্রিলকে জাতীয় ক্রীড়া দিবস ঘোষণা করা হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বর্তমান সরকারের সময় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের শারীরিক শিক্ষা বিভাগ জাতীয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতা আয়োজনের মাধ্যমে দেশের শিক্ষার্থীদের মাঝে একটি জাগরণ সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছে। আমি বিশ্বাস করি, মাধ্যমিক পর্যায়ের সবচেয়ে বড় উৎসব জাতীয় এ ক্রীড়া প্রতিযোগিতার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা তাদের শ্রেষ্ঠ ক্রীড়া প্রতিভা বিকাশের সুযোগ পাবে। ক্রীড়া শিক্ষাকে আরো জোরদার করার মাধ্যমে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার পথে আমরা আরো একধাপ এগিয়ে যাব্।ো’ প্রধানমন্ত্রী ৫১তম শীতকালীন জাতীয় স্কুল, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা ক্রীড়া প্রতিযোগিতার সাফল্য কামনা করেন।