মোঃ নাজমুল হোসেন বিজয়। বরগুনা জেলা প্রতিনিধিঃ
বরগুনার তালতলীতে রাহাত মিনহাজ নামের এক ব্যাক্তির বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও মারধরের অভিযোগ এনে মামলা করেছেন ব্রডব্যান্ড নেটওয়ার্ক ব্যবসায়ী জাহিদুল হক সোহাগ। এই মামলার সুষ্ঠ তদন্ত করে সঠিক বিচারের দাবি করে সংবাদ সম্মেলন করেন ঐ ব্যবসায়ী।
মঙ্গলবার(১২ সেপ্টেম্বর) দুপরে নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তালতলী ব্রডব্যান্ড নেটওয়ার্ক কার্যালয় হয়রানি ও চাঁদাবাজীদের হাত থেকে বাঁচতে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন তিনি।
মামলা ও সংবাদ সম্মেলন সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় জাহিদুল হক সোহাগ তার স্ত্রীর সরকারী চাকুরীর বিপরীতে সোনালী ব্যাংক থেকে ১৩ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে তালতলী ব্রডব্যান্ড নেটওয়ার্ক নামের ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করে আসছেন। এই ব্যবসা চালাতে গেলে রাহাত মিনহাজসহ কিছু লোক হয়রানি ও অর্থ নষ্ট করার চেষ্টা চালিয়ে আসছে।
বিভিন্ন সময় ব্রডব্যান্ড নেটওয়ার্ক এর ক্যাবলের তার কেটে রাখা হইতো। এর পরে রাহাত মিনহাজ প্রতিমাসে চাঁদা দাবি করেন এবং ব্যবসা চালাতে গিয়ে তাকে বাধ্য হয়ে মাসে ৫ হাজার করে টাকা ও সে একটি ঘরে ভাড়া থাকে সেই টাকা প্রতি মাসের ১০ তারিখে দিতে হইতো। ঐ ব্যবসায়ী ঋণগ্রস্থ তবুও তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে যাতে কেনো ক্ষতি না হয় এজন্য তার সাথে তাল মিলিয়ে চাঁদার টাকা দিয়ে আসছে। ব্যবসার অবস্থা ভালো না থাকায় চাঁদার টাকা দেওয়া বন্ধ হয়। এরই জের ধরে গত ৫ সেপ্টেম্বর সদর রোডে মায়ের দোয়া হোটেলে তালতলী পল্লী বিদ্যুৎ এর ইনচার্জের সাথে ঐ ব্যবসায়ীকে কথা বলতে দেখে রাহাত মোবাইল বের করে ছবি তোলেন। এ সময় রাহাত বলেন বিএনপির লোকের সাথে সরকারী লোকের এই ছবি থাকলে ভবিষৎতে কাজে লাগবে। এনিয়ে ঐ ব্যবসায়ীর সাথে রাহাতের কথা কাটাকাটি হয় ও তার আত্মীয় প্রিন্স নামের এক লোক মারতে যায় এবং বিভিন্ন ধরনের গালাগালি করেন। পরে উল্টো রাহাতের আত্মীয় প্রিন্স ঐ ব্যবসায়ীর নামে থানায় জিডি করেন। গত ৮ সেপ্টেম্বর ব্রডব্যান্ড নেটওয়ার্ক এর ম্যানেজার রাসেলকে ডেকে নেয় রাহাত তার বাসার ব্রডব্যান্ডের লাইনে সমস্যা সমাধানের জন্য ও রাসেল তার বাসায় গেলে দরজা আটকিয়ে মারধর করে ইলেকট্রিক শট দেয়।এর পরে গতকাল বরগুনা দ্রতবিচার ট্রাইবুন্যালে রাহাত মিনহাজ ও রিয়াজ উদ্দিন প্রিন্স নামের দুই জনের বিরুদ্ধে একটি চাঁদাবাজি ও মারধরের মামলা দায়ের করে ব্যবসায়ী জাহিদুল হক সোহাগ। মামলাটি তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
তালতলী ব্রডব্যান্ড নেটওয়ার্কের মালিক জাহিদুল হক সোহাগ বলেন, রাহাত মিনহাজ বিভিন্ন সময়ে পোষাক পড়া এসপি ও ওসিদের সাথে ছবি দেখিয়ে বলতেন আজ এসপি স্যারের কাছে যাবো কিছু বারমিজ পিঠা নিয়ে দুই হাজার টাকা দেন। ওসিকে হোটেলে নিয়ে খাওয়াইছি ৫০০ টাকা দেন। গাড়িতে তেল নেই টাকা দেন তেল ভরবো। অমুক ভাইয়ের কাছে যাবো তিন হাজার টাকা দেন দেশি হাস ও মুরগী নিতে হবে। এভাবেই বিভিন্ন এসপি ও ওসির সাথে তার তোলা ছবি তাদের নাম ভাঙ্গিয়ে রাহাত টাকা নিতো। আমি এবিষয়ে কাউকে বললে প্রশাসনের ভয় দেখিয়ে আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হুমকি দেওয়া হইতো। এই ভয়ে আমি কাউকে কিছু বলিনি। চাঁদার টাকা না দিলে ব্রডব্যান্ড নেটওয়ার্ক এর ক্যাবলের লাইন রাতের আঁধারে কেটে দিতো। রাহাত আরও বলেন এই আমলে টাকা না দিলে ব্যবসা করতে পারবে না। আমি এর সঠিক বিচার চাই।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে রাহাত মিনহাজ বলেন,
জাতীয় শোক দিবসে তিনি তার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শোক দিবস পালন করেনি।এ নিয়ে আমরা যুবলীগ ও ছাত্রলীগ সচেতন নাগরিক সমাজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লেখালেখি করি। এবং তালতলী বাজারের মায়ের দোয়া হোটেলের সামনে বসে সরকারকে নিয়ে বিভিন্ন মন্তব্য করে আমি ও প্রিন্স সাহেব এর প্রতিবাদ করেছি। এতে তিনি ক্ষিপ্ত হুমকি দিয়ে যান। তৎক্ষণিক আমরা তালতলী থানায় এই বিষয়ে সাধারণ ডায়েরি করি।