তহিদুল ইসলাম রাসেল
মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আজ নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টস হেরে প্রথমে বোলিংয়ে নামে বাংলাদেশ। প্রথম ওয়ানডের একাদশ থেকে পেসার তানজিম হাসান ও উইকেটরক্ষক ব্যাটার নুরুল হাসানের পরিবর্তে দুই পেসার হাসান মাহমুদ ও খালেদ আহমেদকে মাঠে নামে টাইগাররা। ব্যাট হাতে নেমে মুস্তাফিজুর রহমানের প্রথম বলেই বাউন্ডারি দিয়ে নিউজিল্যান্ডের ইনিংস শুরু করেন ওপেনার ফিন অ্যালেন। তৃতীয় ওভারে আরেক ওপেনার উইল ইয়ংকে শূণ্যতে বিদায় দিয়ে বাংলাদেশকে প্রথম সাফল্য এনে দেন মুস্তাফিজ। সপ্তম ওভারে স্লিপে সৌম্য সরকারের হাতে ক্যাচ দিয়ে ইনফর্ম মুস্তাফিজের শিকার হন ১২ রান করা অ্যালেন।
অষ্টম ওভারে প্রথমবারের মত আক্রমনে এসেই উইকেট তুলে নেন অভিষেক ম্যাচ খেলতে নামা খালেদ। পুল করতে গিয়ে তাওহিদ হৃদয়কে ক্যাচ দিয়ে খালেদের শিকার হন ১৪ রান করা চ্যাড বোয়েস। এতে ৩৬ রানেই ৩ উইকেট হারিয়ে শুরুতেই ব্যাকফুটে নিউজিল্যান্ড।নিউজিল্যান্ডকে চাপমুক্ত করতে চতুর্থ উইকেটে প্রতিরোধ গড়ে তুলেন হেনরি নিকোলস ও টম ব্লান্ডেল। উইকেটে সেট হয়ে রানের চাকা ঘুড়িয়ে ২১তম ওভারে দলের রান ১শতে নেন তারা। ২৬তম ওভারে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় হাফ-সেঞ্চুরি তুলে নেন ব্লান্ডেল। অন্যপ্রান্তে হাফ-সেঞ্চুরির অপেক্ষায় ছিলেন নিকোলস।
কিন্তু পরের ওভারে খালেদের বলে উইকেটের পেছনে বাংলাদেশ অধিনায়ক লিটন দাসকে ক্যাচ দিয়ে থামেন নিকোলস ৬টি চারে ৬১ বলে ৪৯ রান করা নিকোলস। চতুর্থ উইকেটে ১১১ বলে ৯৫ রান যোগ করেন নিকোলস-ব্লান্ডেল।নিকোলস ফেরার নতুন ব্যাটার রাচিন রবীন্দ্রকে নিয়ে দ্রুত রান তোলার চেষ্টা করেন ব্লান্ডেল। জুটিতে ২৩ বলে ২৬ রান তুলে ফেলেন তারা। ৩১তম ওভারে হঠাৎ করে স্পিনার মাহেদি হাসানকে ফিরিয়ে এনে সাফল্যের দেখা পান দলপতি লিটন। ১০ রান করা রবীন্দ্রকে শিকার করেন মাহেদি।
ইনিংসের ৪৬তম ওভারের চতুর্থ বলে ইশ সোধিকে মানকাডিং আউট করেন হাসান। থার্ড আম্পায়ার আউট দিলে ১৭ রান নিয়ে মাঠ ছাড়ার পথে থাকেন সোধি। কিন্তু অন ফিল্ড আম্পায়ারের সাথে কথা বলে সোধিকে ফিরিয়ে আনেন লিটন। এতে আবারও ব্যাট করার সুযোগ পান সোধি।
সেই সুযোগে খালেদের করা ইনিংসের শেষ ওভারের দ্বিতীয় বলে আউট হবার আগে ৩টি ছক্কায় ৩৯ বলে ৩৫ রান করেন সোধি। ৪ বল বাকী থাকতে ২৫৪ রানে অলআউট হয় নিউজিল্যান্ড। শেষ চার উইকেটে ৯৫ বলে ৮৮ রান পায় কিউইরা। বাংলাদেশের হয়ে খালেদ ৬০ রানে ও মাহেদি ৪৫ রানে ৩টি করে, মুস্তাফিজ ২টি ও হাসান-নাসুম ১টি করে উইকেট নেন।
রান তাড়া করতে নেমে সাবধনী শুরু করেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও লিটন। প্রথম ৫ ওভারে তামিমের ১টি চারে ১৭ রান পায় টাইগাররা। ষষ্ঠ ওভারের শেষ বলে কাট করতে গিয়ে থার্ডম্যানে রবীন্দ্রকে ক্যাচ দেন ১৬ বলে ৬ রান করা লিটন। দলীয় ১৯ রানে লিটন ফেরার পর জুটি গড়ার চেষ্টা করেন তামিম ও তানজিদ হাসান তামিম। নিউজিল্যান্ড বোলারদের উপর মারমুখী হয়ে উঠেন তারা। ২৮ বলে ৪১ রান তুলে দলের রান ৫০ পার করেন দুই তামিম। ১১তম ওভারে দুই তামিমের জুটি ভাঙ্গেন স্পিনার সোধি। মিড অফের উপর দিয়ে মারতে গিয়ে ফার্গুসনকে ক্যাচ দেন ৩টি চারে ১২ বলে ১৬ রান করা জুনিয়র তামিম।
এরপর ক্রিজে আসেন আড়াই বছর পর ওয়ানডেতে ব্যাট করার সুযোগ পাওয়া সৌম্য সরকার। ২ বল খেলে বোলার সোধিকে ক্যাচ দিয়ে খালি হাতে ফিরেন সৌম্য।সৌম্যর পর খুব দ্রুত প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন তাওহিদ হৃদয় ও তামিম। ৪ রান করা হৃদয়কে বোল্ড করেন সোধি। এরপর ৭টি চারে ৫৮ বলে ৪৪ রান করা তামিমকে শিকার করেনম্যাচ সেরা নির্বাচিত হওয়া সোধি।
সোধির ঘুর্ণিতে হিমশিম খেলে ১ উইকেটে ৬০ রান থেকে ৫ উইকেটে ৯২ রানে পরিণত হয় বাংলাদেশ। ষষ্ঠ উইকেটে চাপ সামলানোর চেষ্টা করেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও মাহেদি হাসান। সাবধানে খেলে রানের চাকা সচল রাখেন তারা। কিন্তু তাদের পথে বাঁধ সাধেন সোধি। ১৭ রান করা মাহেদিকে বোল্ড করে ৪৮ ম্যাচের ওয়ানডেতে প্রথমবারের মত ইনিংসে ৫ উইকেট পূর্ণ করেন সোধি। মাহমুদুল্লাহ-মাাহেদি যোগ করেন ৪২ রান ।
হাফ-সেঞ্চুরির দ্বারপ্রান্তে গিয়ে ৩৬তম ওভারে নিউজিল্যান্ডকে উইকেট উপহার দেন মাহমুদুল্লাহ। স্পিনার ম্যাককোঞ্চির লেগ স্টাম্পের বহু
বাইরের বলে ভুল শটে ফাইন লেগে অ্যালেনকে ক্যাচ দেন ৪টি চার ও ১টি ছক্কায় ৭৬ বলে ৪৯ রান করা মাহমুদুল্লাহ। দলীয় ১৪৯ রানে সপ্তম ব্যাটার হিসেবে মাহমুদুল্লাহর আউটের পর ৪১ দশমিক ১ ওভারে ১৬৮ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। নিউজিল্যান্ডের সোধি ১০ ওভারে ৩৯ রানে ৬ উইকেট নেন। এটিই তার ক্যারিয়ার সেরা ওয়ানডে বোলিং। আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর একই ভেন্যুতে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডে খেলতে