রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৩৩ পূর্বাহ্ন
পড়ালেখায় চরম ফাঁকিবাজ ছিলেন টিচার এলে নানা ওজুহাতে তাড়াতেন। কিন্তু অতি ভালো রেজাল্ট না করে ভালো ফলাফল করে তিনি দেশ সেরা কলেজ চট্টগ্রাম কলেজের ছাত্রী।পড়ছেন ইসলামের ইতিহাস বিভাগে।
শাম্মী তুলতুল ,একজন জনপ্রিয় সফল কথাসাহিত্যিক।একাধারে একজন লেখক, ঔপন্যাসিক, শিশুসাহিত্যিক ,আবৃত্তিকার, সমাজসেবক, রেডিও অনুষ্ঠান পরিচালক,নজরুল অনুরাগী ও দাবা খেলোয়াড়।তার লিখায় থাকে সব সময় এক ধরনের ম্যাসেজ।আছে সমাজ এবং সমাজ সচেতন করার এক প্রকার শক্তি।খুব অল্প বয়সেই তিনি দেশ ও দেশের বাইরে তার লেখনি দিয়ে জয় করছেন অজশ্র মানুষের ভালোবাসা।
তার পরবিারটাও অনেক মজার।একটা সাহিত্য সাংস্কৃতিক,রাজনৈতিক, উচ্চশিক্ষিত,অভিজাত ,রক্ষণশীল ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারে তার বেড়ে ওঠা।
পরিবারের সবাইকে একদিকে যেমন দেখেছেন রাজনীতিতে অংশ গ্রহণ করতে অন্যদিকে দেখেছেন সমান তালে সাহিত্য ও সংস্কৃতি অঙ্গনে অংশগ্রহণ করতে। তাই লেখালেখি তার রক্তে মুক্তিযুদ্ধ তার চেতনায়।
নিজের ইচ্ছাশক্তির বলে ছোটবেলা থেকেই লেখালেখির হাতেখড়ি।সেই থেকে একযুগের চাইতেও বেশি সময় ধরে প্রথম আলো , সমকাল, কালের কণ্ঠ, যুগান্তর, ইত্তেফাক,বাংলাদেশ প্রতিদিন , শিশু, যুগান্তর নবারুণ, আজাদী,পূর্বকোণ সহ দেশের আঞ্চলিক,জাতীয় দৈনিক,মাসিক ও দেশের বাইরে ভারত , জার্মানি সিঙ্গাপুর, ভিবিন্ন পত্র -পত্রিকায় লিখছেন। এই পর্যন্ত বইয়ের সংখ্যা ১৬ টি। ভারতে প্রকাশিয় হয়েছে ২০২২ কলকাতা বইমেলায় তার গল্পের বই “নরকে আলিঙ্গন”।বইটি পুরা ভারত জুড়ে
ফ্লিপকার্ট অনলাইনে পাও্যা যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে লেখালেখি করে তিনি বেশ আলোচিত হয়েছেন তাকে আন্তর্জাতিক লেখকও বলেন সবাই।
স্বরচিত ছড়া পাঠ করে প্রথম পুরস্কার অর্জন করেন শিশু বয়সেই।
একে একে লিখেছেন মুক্তিযুদ্ধের উপন্যাস চোরাবালির বাসিন্দা, বাল্যবিবাহের ওপর লিখিত উপন্যাস পদ্মবু, এইডসের ওপর লিখিত প্রেমের উপন্যাস মনজুয়াড়ি এই বইগুলো যথেষ্ট পাঠকপ্রিয়তা পেয়েছে । পেয়েছেন মুক্তিযুদ্ধের উপন্যাস চোরাবালির বাসিন্দার জন্য কবি পরিষদ সাহিত্য সন্মাননা। পেয়েছেন বেগম রোকেয়া- সুফিয়া কামাল, কবি নজরুল অগ্নিবীণা সাহিত্য পুরস্কার, রোটারিয়ান পুরস্কার,এস বি এস পি সাহিত্য সন্মাননা, দাদা সাহেব ফালকে এওয়ার্ড ভারত, ইঞ্জিনিয়ার খালেক সন্মাননা। কথাসাহিত্যে মাদার তেরেসা এ্যাওয়ার্ড সহ আরও অন্যান্য পুরস্কার।
শিশু- কিশোরদের জন্য সফল গল্পকার তুলতুল। বড়দের পাশাপাশি শিশুদের জন্য লিখছেন প্রচুর।
শিশু-কিশোরদের বই টুনটুনির পাখিস্কুল,নানটু- ঝানটুর বক্স রহস্য,পিঁপড়ে ও হাতির যুদ্ধ,গণিত মামার চামচ রহস্য, দৈত্য হবে রাজা ,কচ্ছপরাজার রাজপ্রাসাদ,একজন কুদ্দুস ও কবি নজরুল এই বইগুলো দিয়ে জায়গা করে নিয়েছেন শিশু হৃদয়ে।বইগুলো হয়েছে বেস্ট সেলার।
এই বয়সে পরপর দুবার একক বই মেলা হয় তার খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসকের উদ্দ্যেগে।সেখানে তিনি পান জেলা প্রশাসন সন্মাননা। পর্যটন নগরী খাগড়াছড়ির পাঠকরা তাকে ভালোবেসে রাজকন্যা উপাধি দেন।
ভারত- বাংলাদেশ দুই বাংলার জনপ্রিয় লেখিকার তকমাটাও এখন তার সফলতার ঝুড়িতে।
ইতিমধ্যে ফ্যাশন সচেতন কন্যা হিসেবেও তিনি সবার নজর কেড়েছেন।প্রায়ই তাদের পারিবারিক এবং দেশীয় পোশাক জামদানী পোশাক পরিধান করে থাকেন তিনি।তার ভাষ্য প্রতিটি মানুষকে বিশেষ করে ক্রিয়েটিভ যারা তারা বিদেশ বা বিদেশী কোন পণ্যের প্রতি না ঝুকে নিজের দেশের প্রতিটি বিষয় যেন তুলে ধরে। কারণ আমাদের দেশ অনেক অনেক সুন্দর। ফেসবুকের পরিচিতির জায়গায় তিনি লিখেছেন “হতে চাইনা বাড়াবাড়ি, লেখকের মতো লেখক হয়ে হতে চাই সবার আদরের জলপাখি,যে শুধু উড়বে ভালোবাসার আঁকাশে”
অদম্য আর একটি সুন্দর বাস্তব স্বপ্নের কর্তা হতে চান তিনি জলপাখির মতো।ভালোবাসা পেতে চান সকল মানুষের।
তুলতুল বলেন, প্রতিটি গল্প উপন্যাসে সে একটি করে ম্যাসেজ রাখেন। যাতে হাস্যরসের সাথে সাথে সবাই শিক্ষণীয় বিষয়ও মাথায় রাখতে পারে। সাহিত্য শুধু বিনোদন নয়,শেখার -জানার বিষয়ও হতে হবে।
চট্টগ্রাম এবং রক্ষণশীল পরিবার থেকে নিজ ঘরে বসে লেখালিখি একটা চ্যালেঞ্জ ছিল যা সফল হতে পেরেছেন তিনি।