বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:০৬ অপরাহ্ন
রিপন কান্তি গুণ, নেত্রকোনা জেলা প্রতিনিধি;
নেত্রকোনায় দুই দিন ব্যাপী বাংলাদেশ-ভারত সম্প্রীতি উৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বাংলাদেশ-ভারত সম্প্রীতি পরিষদ নেত্রকোনা জেলা শাখা আয়োজনের শুরু হচ্ছে এই উৎসব অনুষ্ঠান।
আজ (৩ সেপ্টেম্বর)মঙ্গলবার নেত্রকোনা পৌর শহরের পাবলিক হল মিলনায়তনে বাংলাদেশ-ভারত সম্প্রীতি পরিষদ নেত্রকোনা জেলা শাখার উদ্যোগে এ উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে।
বাংলাদেশ-ভারত সম্প্রীতি উৎসবের আলোচ্য বিষয় ‘হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযুদ্ধে ভারতের অবদান।’ স্বাধীনতার ৫২ বছরের মধ্যে নেত্রকোনায় এই প্রথম ‘বাংলাদেশ-ভারত সম্প্রীতি উৎসব-২০২৩’ দুইদিন ব্যাপী অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
প্রথমে দুই দেশের জাতীয় সংগীত পরিবেশনা শেষে, আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ-ভারত সম্প্রীতি পরিষদ নেত্রকোনা শাখার সভাপতি কেশব রঞ্জন সরকার। উপস্থাপনায় ছিলেন ভারতের দূরদর্শন ও আকাশবাণীর শিল্পী শাশ্বতী গুহ এবং বাংলাদেশের সংগঠক ও গবেষক ওয়ালিউর রহমান বাবু। উদ্বোধক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক রাষ্ট্রদূত ও বাংলাদেশ-ভারত সম্প্রীতি পরিষদের উপদেষ্টা বীরমুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ড. নীম চন্দ্র ভৌমিক।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, অধ্যাপক স্বপন কুমার দত্ত, সাবেক উপাচার্য, বিশ্ব ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়, শান্তি নিকেতন, ভারত।
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, নেত্রকোনা- ৩ (কলমাকান্দা-দুর্গাপুর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ছবি বিশ্বাস, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের সাবেক উপ-পরিচালক ফজলুর রহমান সরকার বাংলাদেশ-ভারত সম্প্রীতি পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা মমতাজ হোসেন চৌধুরী, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের পরিবারের সদস্য সোনালী কাজীসহ অন্যান্যরা।
এ উৎসবের আয়োজনে বাংলাদেশ ও ভারতের দেশবরেণ্য অতিথি ও শিল্পীবৃন্দদের নিয়ে আলোচনা সভা, সেমিনার, কবিতা পাঠের আসর ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশনার মধ্য দিয়ে নেত্রকোনা জেলাবাসীর উপস্থিততে বাংলাদেশ-ভারত সম্প্রীতি উৎসবটি যেন এক মিলন মেলায় পরিণত হয়েছে।
সম্প্রীতি উৎসবের উদ্বোধক ভারতের শান্তি নিকেতনে বিশ্বভারতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. স্বপন কুমার দত্ত বলেছেন, ভারত ও বাংলাদেশ এই দুটি দেশের যে সম্প্রীতি ও সমন্বয়, তার মাঝে কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বিরাট ভূমিকা পালন করেছেন এবং তা করে চলেছে। এই ভুমিকা পালন করার মধ্যে বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ ব্যক্তি হিসাবে আমি বলবো বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের অবদান যথেষ্ট।
তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুর অনেক বক্তৃতা অনেকগুলো বইয়ে মধ্যে আমি দেখিছি। সেখানে মজিবুরের রহমানের যে সমস্ত উক্তি রয়েছে সেসব উক্তিগুলো মানুষ পড়লে দেখতে পাবেন বঙ্গবন্ধু কতখানি প্রাবন্ধিক ছিলেন। যা রবীন্দ্রনাথের চিন্তার ও ভাবনার সাথে মিল রয়েছে। এরকম এক অসাধারণ অনুভুতি আমার মাঝে কাজ করে। আমি যখন রবীন্দ্রনাথ পড়ি তখন বুঝতে পারি রবীন্দ্রনাথ কখন, কোথায়, কি বলেছেন এবং সেই ভাবনগুলো শেখ মজিবুর রহমানে মাঝে উপস্থিত। ১৯৭১ সালে ৭ মার্চে সেই বিখ্যাত বঙ্গবন্ধুর মাত্র ১৮ মিনিটের ভাষনটি আজকে ইউনেস্কোর ডকুমেন্টারী হেরিটেজ ডকুমেন্ট হিসেবে স্বীকৃত।
দুইদিন ব্যাপী এ সম্প্রীতি উৎসবে প্রথম দিনে আলোচনা সভা ছাড়াও বিকেলে ভারত-বাংলাদেশ সম্প্রীতি বন্ধনে কবিতা পাঠ ও সন্ধ্যায় ভারতীয় শিল্পীদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা অনুষ্ঠিত হয়।
দ্বিতীয় দিন আগামীকাল (৪ সেপ্টেম্বর)বুধবার সকালে সঙ্গীতগুরু আচার্য শৈলজারঞ্জন মজুমদারের ১২৩তম জন্মবার্ষিকী উদ্যাপন উপলক্ষ্যে এস বি বিপ্লবের গবেষণা, পান্ডুলিপি, চিত্রনাট্য ও পরিচালনা “রবির কিরণে শৈররঞ্জন” প্রামাণ্য চলচ্চিত্রের শুভমুক্তির পূর্বে নেত্রকোনার পোষ্টার উন্মোচনের পরে আন্তর্জাতিক সেমিনার এবং দুপুরের দিকে বাংলাদেশ-ভারত সম্প্রীতি বন্ধন বিষয়ক আলোচনা ও সন্ধ্যায় নেত্রকোনার শিল্পীদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে।