মোঃ মিজানুর রহমান মানিক ক্রাইম রিপোর্টারঃ
মোবাইল ফোনের মাধ্যমে পরিচয়, এরপর গড়ে উঠে প্রেমের সম্পর্ক, কিছুদিন পর সেই প্রেমের সম্পর্ক গড়ায় বিয়ের পিড়িতে। তবে সে প্রণয় প্রলয়ে গড়াতেও বেশি সময় লাগেনি। সেই প্রলয় ঠেকাতেই এখন দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হচ্ছে এক অসহায় নারীকে।
মামলা অভিযোগ ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা গেছে, নাদিয়া সুলতানা (বেলা), পিতা- মৃত আশরাফ আলী খান, সাং- আবালপুর, থানা ও জেলা- মাগুরা। প্রথমে ০৫/০৭/২০২০ ইংরেজি তারিখে নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে এবং ২১/০৮/২০২০ তারিখে মুসলিম শরিয়তের বিধান মোতাবেক ম্যারেজ রেজিস্ট্রার অফিসে মোঃ ইসাহাক হোসেন, পিতা- ইদ্রিস আলী বিশ্বাস, সাং-কাশিনাথপুর, থানা ও জেলা- মাগুরা এর সহিত বিয়ে হয়। বিয়ের পর প্রায় ১ বছর বেলা"র বাড়িতে অবস্থান করেন ইসাহাক। সংসার শুরু হতেনা হতেই ঝিনাইদহ জেলায় আজিজ কো- অপারেটিভ এন্ড ফ্যানান্সিয়াল ব্যাংক লিমিটেড এর চাকরির কথা বলে নাহিদা সুলতানা বেলা'র পরিবারের কাছ থেকে তিন লক্ষ টাকা নেয় ইসাহাক। তবে সে কর্মস্থল ২ মাসের বেশি টেকাতে পারেনি তিনি।
চাকরি ছেড়ে পরবর্তীতে ভেটেরিনারি ঔষধ বিপনন কাজে যোগদানের জন্য পুনরায় ৫০ হাজার টাকা নিয়ে পাবনা"য় যান, তবে সে চাকুরীতেও বেতনের দেখা মেলেনি। ৭ দিন পর সেখান থেকে ফিরে আসেন মাগুরায়। এরপর স্ত্রী" কাছ থেকে আড়াই লক্ষ টাকা নিয়ে শুরু করেন গরু পালনের ব্যবসা। তবে সে গরু কিনে পাঠানো হয় ইসাহাকের বাবার বাড়িতে এবং সেই গরু লালন পালনের সকল খরচাদি চলে বেলা'র টাকায়। বৃদ্ধ শ্বশুর শাশুড়ীর কথা চিন্তা করে এবং স্বামীর সফলতা অর্জনের ভাগিদার হওয়ার অদম্য ইচ্ছা শক্তি নিয়ে কিছু দিন পর বেলাও যান তার শ্বশুর বাড়ি কাশিনাথপুরে।
এর কিছু দিন পর কোরবানি ঈদে গরু দুইটি প্রায় তিনলক্ষ টাকায় বিক্রি করে তা সমুদয় আত্মসাৎ করে ইসাহাক। এর কিছু দিন পর বেলা'র প্রতি শুরু হয় অমানুষিক নির্যাতন, কখনো শারীরিক, কখনো মানসিক। শারীরিকভাবে নির্যাতিত হওয়ায় তিনবার হাসপাতালে ভর্তিও হতে হয়েছে তাকে। নানা সহিংসতার মাঝে ওই বাড়িতে বেশিদিন টিকতে পারেনি বেলা। শূন্য হাতে ফিরে আসতে হয় বাবার বাড়িতে। এরপর সম্পূর্ণ যোগাযোগ বন্ধ করেন ইসাহাক, তবে কিছু দিন পর পুনরায় যোগাযোগ শুরু করেন তিনি।
নতুন করে স্থাপন করেন বিশ্বাস। তবে ইসাহাকে এ যেন অন্য রকম ফিরে আসা, অর্থ লোভ আর অমানুষিক নির্যাতন বেলা'র জীবন তিল তিল করে নষ্ট করতে থাকে। এসিসিএফ ব্যাংকে চাকুরির থেকেই কি হবে বেলা'র? বেতন তো যায় ইসাহাকের পকেটে। প্রতিবাদের চেষ্টা করলেই হতে হয়েছে নির্যাতনের স্বীকার। টাকার নেশায় মগ্ন থাকা ইসাহাকের কাছে বেলা শুধু মাত্র টাকা তৈরির মেশিন মাত্র। শতাধিক প্রতিশ্রুতি সফলতায় শূন্য ইসাহাক বিয়ের পর শুধু নয়, বিয়ের আগেও একাধিক বার বিভিন্ন কৌশলে দুই দফায় বিকাশের মাধ্যমে ৮০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
বিয়ের সময়ও বেলা'র পরিবার মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে ১২ আনা ওজনের একটি স্বর্নের চেইন এবং (E-B) লেখা আংটি সহ ঘরের বিভিন্ন আসবাবপত্র দেন। ইসাহাক হোসেন একজন দৃশ্চরিত্রবান এবং বিয়ের পূর্বে অন্যত্র বিবাহ করেছিল। বিভিন্ন মেয়ের সঙ্গে অবৈধ মেলামেশা, পরকিয়া প্রেমে লিপ্ত থাকা সহ তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ করেন নাদিয়া সুলতানা বেলা। নাদিয়া সুলতানা বেলা আরো বলেন, আমার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন আমার স্বামী ইসাহাক। আমি যেন সঠিক বিচার পায় এটাই প্রশাসনের কাছে দাবী করছি। আমার মত আর কোন মেয়ের জীবন নষ্ট না হয়।
অভিযুক্ত ইসাহাক হোসেন বলেন, আমাকে ফাাঁসানো হয়েছে। আমি কোন টাকা নেইনি, তাকে বিয়ে করে আমার জীবন শেষ হয়ে গেছে। তার সাথে সংসার করার কথা বললে সে বলে, আমার সাথে সম্পর্ক শেষ হয়ে গেছে আমি তাকে তালাক দিয়েছি।
স্থানীয় গ্রামবাসী আমিনুল ইসলাম পলাশ বলেন, মেয়েটিকে বিয়ের পর থেকে অন্যায় ভাবে নির্যাতন করে আসছে ইসহাক। মেয়েটি উপায় না পেয়ে আইনের আশ্রয় নিয়েছে। আমিসহ গ্রামবাসীরা অনেক চেষ্টা করেছি সংসার বাচানোর উল্টো আমাকেও হুমকি দিয়েছে ওই ইসহাক। আমি চাই মেয়েটি সঠিক বিচার পায়।