রিপন কান্তি গুণ, নেত্রকোনা জেলা প্রতিনিধি;
নেত্রকোনা জেলার খালিয়াজুরী উপজেলাধীন 'গছিখাই সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়' এর শিক্ষকরা সরকারী কোন নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই চালাচ্ছেন বিদ্যালয়টির পাঠদান।
এলাকাবসীর স্কুল কমিটির সহ-সভাপতি ও স্কুলের জমিদাতার সাথে কথা বলে জানা গেছে, বিদ্যালয়টি প্রায়ই দিনই থাকে বন্ধ। যদিও কোন কারণে বিদ্যালয়টি খোলা থাকে সেদিন বেলা ১১টার ভেতরে ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়।
আজ (৪ সেপ্টেম্বর)বুধবার সরেজমিনে গিয়ে দেখাগেছে, বেলা ১১টায় স্কুল বন্ধ করে সকল শিক্ষক চলে গেছেন।
চতুর্থ শ্রেণীতে পড়ুয়া রাফিন নামের এক ছাত্র জানান, কোন দিনও চারজন স্যার একসকথে স্কুলে আসে না। কোনদিন আসেন দুইজন আবার কোনদিন একজন স্যার আসেন। কোনো কর্মকর্তাও স্কুলের খোঁজখবর নেন না।
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য, মুঠোফোনে স্কুলের প্রধান শিক্ষিকার সাথে কথা বলতে চাইলে তিনি ফোন না ধরায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সহ-সভাপতি হামিদ আলী বলেন, বিদ্যালয়ে বর্তমানে চারজন শিক্ষক কর্মরত আছেন। প্রায় দিনই শিক্ষকরা বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়ে ক্লাস নেন না। তারা নিজেদের মনমত স্কুলে আসা-যাওয়া করেন। মন চাইলে কোনদিন ক্লাস নেন। আবার মন না চাইলে ক্লাস না করেই সকাল ১১টার মধ্যেই স্কুল বন্ধ করে নিজেদের মনমতো চলে যান। বেশ কয়েকবার এই বিষয় নিয়ে শিক্ষা অফিসে মৌখিকভাবে অভিযোগ দিয়েছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোন প্রতিকার পাইনি।
এ বিষয়ে খালিয়াজুরীর উপজেলা (ভারপ্রাপ্ত) প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. বুলবুল আহম্মেদকে অবগত করা হলে তিনি বলেন, আমি অসুস্থ তাই বাড়ীতে আছি। পরে দ্বায়িত্ব প্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মুঠোফোনে শিক্ষকদের সাথে যোগাযোগ করে বলেন, প্রধান শিক্ষকের মেয়ে অসুস্থ তাই তিনি ছুটিতে আছেন। তবে ছুটির জন্য প্রধান শিক্ষক কোন আবেদন করেন নাই বা মৌখিকভাবে আমাকে অবগতও করেন নাই।
তিনি আরও বলেন, আমি প্রধান শিক্ষককে ফোন দেওয়ার পর বলছেন, তিনি ছুটিতে আছেন। একটি স্কুল এমনভাবে চলতে পারে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. বুলবুল আহম্মেদ বলেন, তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্কুলের জমিদাতা হামিদ আলী দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, আমি নিজের জায়গা স্কুলের নামে দান করেছিলাম যাতেকরে, গ্রামের ছেলে-মেয়েরা লেখাপড়া শিখতে পারে। কিন্তু দুঃখের বিষয় স্কুল প্রতিষ্ঠার পর হতে বর্তমান সময় পর্যন্ত কোন দিনও ঠিকমত স্কুলটি পরিচালনা করতে দেখলাম না। স্কুলটি কে, কখন খোলে এবং আবার কখন বন্ধ করে চলে যায় তা দেখতে পাওয়া যায় না। এতেকরে শিক্ষার্থীরা পাঠদান থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। গ্রামের ছেলেমেয়েরাই যদি এই স্কুলে পড়তে না পারে তাহলে আমার জায়গা দিয়ে কি লাভ হল?