বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:২৬ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনামঃ
তুরাগের বউবাজারে ফুডকোর্ট মার্কেট উচ্ছেদের প্রতিবাদে ব্যবসায়ীদের প্রতিবাদ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত  ক্যান্টনমেন্ট থানা পুলিশ কর্তৃক ছয়টি হ্যান্ড গ্রেনেড, ম্যাগাজিন ও বিপুল পরিমাণ গুলি উদ্ধার; তিন শূন্যের ধারণার ওপর ভিত্তি করে পৃথিবী গড়ার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার তুরাগের বউবাজার মার্কেট উচেছদের প্রতিবাদে মানববন্ধন ট্রাম্পের সঙ্গে ‘দ্বন্দ্ব’ মিটিয়ে ফেলতে পারবেন ড. ইউনূস সেনাবাহিনী কত দিন মাঠে থাকবে’ সরকারই সিদ্ধান্ত নেবে  প্যারিস-বাংলা প্রেসক্লাব ফ্রান্স’র কার্যকরি কমিটি (২০২৪-২০২৬)গঠন ১০ নভেম্বর ২০২৪ শহীদ নুর হোসেন গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের মহানায়ক : ডা. ইরান রাজধানী,তুরাগে ছেলের হাতে মা খুন অন্তর্বর্তী সরকার অধ্যাদেশ, ২০২৪’ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী জেড আই খান পান্না ডয়চে ভেলেকে বলেন, 

উদ্বোধনের আগেই নবনির্মিত স্কুল ভবনে ফাটল

নিউজ দৈনিক ঢাকার কন্ঠ

রিপন কান্তি গুণ, নেত্রকোনা জেলা প্রতিনিধি;

নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে উদ্বোধনের আগেই রানাহিজল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নবনির্মিত ভবনের বিভিন্ন অংশে ফাটল দেখা দিয়েছে। এতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ অভিভাবকরা দুর্ঘটনার আশঙ্কায় আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন। যেকোনো সময় তা ভেঙে পড়তে পারে। এই আশঙ্কায় ওই ভবনে এখন পর্যন্ত ক্লাস শুরু করা সম্ভব হয়নি। বর্তমানে পুরোনো একটি ভবনে চারটি শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের শ্রেণি কার্যক্রম চালানো হচ্ছে।

শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নবনির্মিত ভবনের সামনের অংশে বড় বড় ফাটল দেখা দিয়েছে। পিলারেও ফাটল আছে। নতুন একতলা ভবনে পাঁচটি কক্ষ আছে। তাদের অভিযোগ, ভবন নির্মাণে নিম্নমানের কাজ হয়েছে। অপরদিকে এলজিইডির কর্মকর্তারা বলছেন, ভবনের নকশায় ভুল ছিল।

সরেজমিনে দেখা গেছে, নবনির্মিত ওই ভবনের সামনের বারান্দার অংশে বিশাল ফাটল রয়েছে। ফলে দেয়ালের এক পাশ থেকে অন্য পাশ দেখা যাচ্ছে। যেকোনো সময় মূল ভবন থেকে খুলে পড়তে পারে। রেলিংয়ের এক পাশ খুলে পড়ে গেছে। ভবনের দেয়ালের রং উঠে গেছে। একপলক দেখেই বোঝা যায়, এ যেন দায়সারাভাবে কোনরকম চালিয় দেওয়ার মতো কাজ।

ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মেহেরুন্নেছা আক্তার বলেন, ‘নতুন ভবনের কাজ সম্পূর্ণ দায়সারাভাবে করা হয়েছে। ভবনের সামনের অংশে দুই পিলারের মধ্যে বিশাল ফাটল দেখা দিয়েছে। যেকোনো সময় ভেঙে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। ৩-৪ মাস আগে নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। কাজ শেষে ভবনটি এখনো উদ্বোধন হয়নি। অত্যন্ত দুঃখের বিষয় নিম্নমানের কাজের জন্য এরই মধ্যে নবনির্মিত ভবনের বিভিন্ন অংশে ফাটল দেখা দিয়েছে, রেলিং ভেঙে গেছে, দেয়ালের রং উঠে গেছে। বর্তমানে ভবনটির খুবই বাজে অবস্থা। এই অবস্থায় সেখানে পাঠদান সম্ভব নয়। শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা কেউ ভয়ে সেখানে যাচ্ছে না। তাই আমরা পুরোনো ভবনে পাঠদান চালিয়ে যাচ্ছি। ভবনের অনিয়মের বিষয়টি এলজিইডির প্রকৌশলীসহ শিক্ষা কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে।’

বিদ্যালয়ে কর্মরত শিক্ষকরা বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ে মোট ১৩১ জন শিক্ষার্থী ও ৫ জন শিক্ষক রয়েছেন। বর্তমানে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য থাকায় সহকারী শিক্ষক মেহেরুন্নেছা আক্তার ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক বলেন, বিদ্যালয়ের জমিদাতা ও সাবেক সভাপতি মতিউর রহমানের আত্মীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক শাহ আলম মাহবুব। ফলে নিম্নমানের কাজ করলেও তাঁকে কেউ বাধা দেওয়ার সাহস পায়নি।

সদ্য যোগদান করা উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল হোসেন জানান, ভবন নির্মাণের বিষয়টি পুরোপুরি এলজিইডির হাতে। এ বিষয়ে কিছুই তাঁদের জানানো হয় না। নির্মাণ শেষে শুধু ভবন বুঝিয়ে দেওয়া হয়।

তিনি বলেন, এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ফাটলের বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

বিদ্যালয়ের জমিদাতা, সাবেক সভাপতি ও ঠিকাদার শাহ আলম মাহবুব রাজিবের শ্বশুর মতিউর রহমান বলেন, ‘ভবন নির্মাণ কাজে ঠিকাদারের কোনো গাফিলতি ছিল না। ঠিকাদার সামনের পিলারগুলো রড দিয়ে দেওয়ার কথা বলেছিল। কিন্তু এলজিইডি প্রকৌশলী নিজেই সেগুলো রডের পরিবর্তে ইট দিয়ে করতে বলেছিল। তাই এমনটা হয়েছে।’

ঠিকাদার শাহ আলম মাহবুব রাজিব বলেন, ‘বিদ্যালয়ের পাশের রাস্তা ভালো না থাকায় মালামাল পরিবহনেও সমস্যা ছিল। নানা সমস্যার কারণে কাজ শেষ করতে দীর্ঘদিন লেগেছে। এই ভবনের নকশার পরিকল্পনায় ভুল ছিল। নকশায় যা ছিল তা থেকে অনেক বেশি উঁচু করতে হয়েছে ভবনটি। সামনের পিলারগুলো নকশার চেয়ে পাঁচ ফুটের বেশি উঁচু করতে হয়েছে। নিচে পানি থাকার কারণে তা দেবে গেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আগের মূল্য বিচারে বর্তমানে জিনিসপত্রের দাম বেড়ে গেছে। এতে ভবনের কাজ করতে গিয়ে আমার ১০ লাখ টাকা লোকসান হয়েছে। তাছাড়া বিদ্যালয়ের পাশে পানি থাকায় বছরে তিন মাসের বেশি কাজ করা যায় না।’

এ বিষয়ে এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী মো. সোয়াইব ইমরান বলেন, ঠিকাদারের কাজে তেমন গাফিলতি নেই। এই ভবন নির্মাণের নকশায় ভুল ছিল। আগের প্রকৌশলীরা ওই ভুলটা করে গেছেন। নিচু জায়গায় অন্য নকশায় এটি করা দরকার ছিল। সামনের যে অংশে ফাটল দেখা দিয়েছে, ওই পিলারগুলো রড আর কংক্রিট দিয়ে করলে এমনটা হতো না। এসব স্কুলের বরাদ্দ থেকে মেরামত করার ব্যবস্থা করা যেতে পারে। এ ছাড়া ঠিকাদারের জামানতের টাকা রয়ে গেছে এখনো। দ্রুত ফাটলগুলো মেরামত করে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

দৈনিক ঢাকার কন্ঠ
© All rights reserved © 2012 ThemesBazar.Com
Design & Developed BY Hostitbd.Com