রিপোর্টার , শম্পা দাস ও সমরেশ রায় , কলকাতা
আজ ৫ই জুলাই শুক্রবার, ঠিক দুপুর একটাই গুরুসদয় রোডের সংযোগস্থলে, কোন হাউসে ৫৩ তম রথযাত্রা উপলক্ষে একটি সাংবাদিক সম্মেলন করলেন, প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে, উৎসবের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে পর্যালোচনা করলেন, সকলের সহযোগিতা কামনা করলেন।
এবং ৭ই জুলাই এই রথের দড়ির টান পড়বে মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে এবং তিনি শুভ সূচনা , এছাড়াও থাকছে বিভিন্ন অনুষ্ঠান ইসকন মন্দিরের সামনে, ডোনা গাঙ্গুলীর নৃত্য, আরতি, ভোগ বিতরণ,
মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবারে এই রথের সামনে থেকে আরো দুটি শুভ উদ্বোধন করবেন, আলিপুরদুয়ারের জগন্নাথ মন্দির এবং একটি পার্কের, এই রথের উদ্বোধন ঠিক দুপুর দুটোই। হবে বলে জানান।
এই রথযাত্রা ইসকন ১৫০ টিরও বেশি দেশে , ৭০০টিরও বেশি নগরে ও শহরে রথযাত্রার আয়োজন করে থাকেন, কলকাতায় প্রথম রথযাত্রা শুরু হয় ১৯৭২ সালে, পুরীর রথযাত্রার পর ,কলকাতা রথযাত্রার দ্বিতীয় বৃহত্তম রথযাত্রা , এখানে এই কদিনে ২০ লক্ষেরও বেশি ভক্তরা আসেন মেলা প্রাঙ্গণে, আস্তে আস্তে ছোট থেকে শুরু করে আজ বিশালাকার ধারণ করেছে ইসকন, কলকাতার রথযাত্রা। একটি ছোট্ট রথ থেকে আজ বিশাল রথে পরিণত হয়েছে। আর এই রথযাত্রার শুভ সূচনা করেন ইসকনের প্রতিষ্ঠাতা আচার্য কৃষ্ণকৃপাশ্রী মূর্তি শ্রীল অভয় চরনারবিন্দ ভক্তি বেদান্ত স্বামী প্রভুপাদ।
এরপর ভক্তদের সমাবেশে রথের দড়িতে টান পড়বে, হাঙ্গার ফোর্ডের ইসকন মন্দির থেকে শুরু হয়ে শরৎ বোস রোড, হাজরা রোড, এস পি মুখার্জী রোড ,আশুতোষ মুখার্জী রোড, চৌরঙ্গী রোড ,এক্সাইড ক্রসিং, জহরলাল নেহেরু রোড, পার্ক স্ট্রীট হয়ে সোজা ব্রিগেড গ্রাউন্ডে গিয়ে হাজির হবে জগন্নাথ বলরাম, সুভদ্রা, এবং সেখানে চলবে প্রতিদিন পুজোপাঠ, ভক্তদের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ভোগ বিতরণ এবং মেলা, এই মেলা চলবে ৮ই জুলাই থেকে ১৫ জুলাই পর্যন্ত, প্রতিদিন বিকেল চারটা থেকে রাত নটা। বিকেল সাড়ে চারটা থেকে রাত সাড়ে আটটা পর্যন্ত ভগবান জগন্নাথ, বলদেব এবং সুভদ্রা মহারানীর দর্শন পেতে পারবেন ভক্তরা।
৫৩ তম বছরে রথযাত্রার থিম হল, গৌড়ীয় মঠের প্রতিষ্ঠাতা আচার্য এবং ইসকনের প্রতিষ্ঠাতা আচার্য শ্রীল এ সি, ভক্তিবেদান্ত স্বামী প্রভুপাদের গুরু, কৃষ্ণ কৃপাশ্রী মূর্তি শীল। ভক্তি সিদ্ধান্ত ১৫০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে তৈরি হবে।
আর মাত্র মাঝে একটা দিন, তাই তোর জোর চলছে ইসকন মন্দির থেকে শুরু করে ইসকন হাউস, যেখানে জগন্নাথ বলরাম ও সুভদ্রা রথ গুলি রাখা হয়েছে, এবং রথগুলি নতুন করে সেজে উঠছে রং ও তুলির টানে, শিল্পী রাও ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন কাজ শেষ করার, তবে জানা গেল এবার এই দুটি রথের চাকা নতুন তৈরি হয়েছে।, বলদেবের রথ সবচেয়ে লম্বা ৩৮ ফিট উঁচু, ১৮ ফিট চওড়া, এবং প্রায় ৩৬ ফিট লম্বা,
জগন্নাথের রথ বলদবের চেয়ে সামান্য ছোট, কিন্তু সুভদ্রার চেয়ে বড় ,ভারী কাঠামোকে বহন করার জন্য বোরিং ৭৭৭ এর চাকা সহ ৩৬ ফুট উঁচু, সতেরো ফুট চওড়া এবং প্রায় ত্রিশ ফুট লম্বা হয়ে থাকে।
সুভদ্রা মহারানীর রথটি সবচেয়ে ছোট ,লোহার চাকা দ্বারা নির্মিত, এটির উপরেও সংকোচনযোগ্য চাঁদোয়া রয়েছে।
আজ সাংবাদিক সম্মেলন থেকে সকল ভক্তবৃন্দ বৃন্দকে শুভেচ্ছা জানালেন এবং তাহারা আশা করছেন, আগের বারে রথের মেলায় কুড়ি লক্ষ ভক্ত উপস্থিত হয়েছিলেন। এবারে তারা আশা করেন সেটা বেড়ে দাঁড়াবে ২৪ লক্ষতে।, এর সাথে সাথে সাংবাদিক বন্ধুদের জানালেন, আপনাদের সহযোগিতাতেই জগন্নাথ বলরাম সুভদ্রার প্রচার দিকে দিকে ছড়িয়েছে, ভক্তদের সমাগম হচ্ছে,আপনারা আমাদের পাশে থেকে আরও মানুষের সামনে ও ভক্তদের সামনে তুলে ধরুন, এটুকুই কামনা করবো। আপনাদের সহযোগিতা ছাড়া কখনই দেশ দেশান্তরে বাণী পৌঁছাতে পারেনা। দেশ-বিদেশ থেকে বহু ভক্ত কলকাতার ইসকন রথে হাজির হয়।