নিজস্ব প্রতিবেদক
রাজধানী উত্তরা বুধবার তারিখ ১০/০৭/২০২৪ ইং ‘বাবা মানে বটবৃক্ষের বিশাল ছায়া' এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে উত্তরা পাবলিক লাইব্রির’র উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হলো ‘গর্বিত বাবা সম্মাননা অনুষ্ঠান-২০২৪’। আজ (বুধবার) বিকালে উত্তরা লেডিজ ক্লাব মিলনায়তনে ৩১জন বাবাকে সম্মাননা প্রদানের মধ্য দিয়ে আয়োজনটি সম্পন্ন হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে মনোনীত বাবা’দের হাতে সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেন মহান জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকু, বিশেষ অতিথি, ঢাকা-১৮ আসনের সংসদ সদস্য মো. খসরু চৌধুরী, ডিএমপি উত্তরা বিভাগের উপ-কমিশনার কাজী আশরাফুল আজীম, ডিএনসিসি ১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. আফছার উদ্দিন খান, ৫১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোহাম্মদ শরীফুর রহমান, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জুলকার নায়ন এবং আইরিশ ফ্যাশনস লিমিটেড এর সিইও শহিদুল আলম বিদ্যুৎ।
আয়োজনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকু বলেন, পৃথিবীতে বাবাকে ছাড়া কিছু হবে না। আবার, এই বাবারাই কিন্তু সর্বনাশের কারণ হয়৷ বাবা কখন স্বার্থক হবে যখন তার পরিবার-সন্তানরা পরিশুদ্ধ হয়। আর তাই বাবা দিবসের এই আয়োজন খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি বলেন, এই আয়োজনের মাধ্যমে আমরা সব বাবাদের বলতে চাই, সন্তানদেরকে আমরা কতটুকু ধর্মীয়-পারিবারিক-রাজনৈতিক অনুশাসন শিক্ষা দিচ্ছি সেটা আমাদের দেখা দরকার। সন্তান যখন অপরাধের সাথে জড়িত হয়ে যায় তখন বাবাদেরকে তা কুঁড়ে কুঁড়ে খায়। কাজেই পিতার দায়িত্ব হচ্ছে পরিবারকে রক্ষা করা।
ডেপুটি স্পিকার বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী স্মার্ট সিটিজেন গড়ে তুলতে ভিশন-২০৪১ টার্গেট দিয়েছেন। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলায় যেখানে কোনো অপরাধ থাকবে না, মাদকাসক্ত থাকবে না, বেকারত্ব থাকবে না। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা সেই লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা যারা বাবা, কিংবা যারা বাবা হব- তাদের দায়িত্ব অপরিসীম।৷ বাবা-মা উভয়কেই বলছি, আসুন আমরা সবাইকে সমৃদ্ধ করি, জাতির জন্য কিছু করে যাই। বাবা দিবসে এটাই হবে আমাদের অঙ্গীকার। তিনি বলেন, যে সমাজে বাবারা জ্ঞানে-গুণে যত সমৃদ্ধ-পরিশুদ্ধ, সেই সমাজ তত বেশি সমৃদ্ধ।
অপরদিকে, সন্তানদের প্রতি অবহেলার কারণে বর্তমান তরুণ প্রজন্ম বই ছেড়ে মোবাইলে আসক্তি হয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আজকের সমাজে টিকটক-গেমস খেলা- মাদকাসক্ত হয়ে যাচ্ছে। এর বিরুদ্ধেও আমাদের জনমত গড়া দরকার।
এসময় উত্তরা পাবলিক লাইব্রেরির ভ্রুয়সী প্রশংসা করে জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকু বলেন, তারেকউজ্জামান খান একজন মননশীল ব্যক্তিত্ব। সমাজকে আলোকিত করার জন্য ব্যক্তিগত উদ্যোগ তিনি লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা করেছেন। লাইব্রেরির যেকোন টেকনিক্যাল সাপোর্ট ও ডিজাটালাইজড করতে যা করার প্রয়োজন আমি সহযোগিতা করব।
উত্তরা পাবলিক লাইব্রেরি কর্তৃক আয়োজিত ‘গর্বিত বাবা সম্মাননা অনুষ্ঠান-২০২৪’ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ঢাকা-১৮ আসনের সংসদ সদস্য মো. খসরু চৌধুরী বলেন, দুটি বর্ণ-একটি শব্দ ‘বাবা’। আজকের এই দিনে আমি স্মরণ করছি আমার বাবাকে।
বক্তব্যে আবেগ আপ্লুত কণ্ঠে তিনি বলেন, আমার মনে আছে- বাবা যখন হাট থেকে বাজার নিয়ে আসতো তখন আমরা দৌঁড় দিয়ে যেতাম। ভাবতাম বাবা ইলিশ মাছ নিয়ে আসছে নয়তো আঁখ নিয়ে আছে। এখন আর এই দৃশ্যটা নেই। সবাই মোবাইল ডিভাইসে আসক্ত। এসময় বিশ্বের সকল বাবাদের প্রতি সম্মাননা জানিয়ে বক্তব্যে মো. খসরু চৌধুরী বলেন, আজকে যাদের বাবা গত হয়ে গিয়েছেন তারাই বোঝে বাবার মর্ম। যাদের বাবা বেঁচে আছে তাদের অবশ্যই বাবাকে সম্মান করা উচিত।
উত্তরার বিশিষ্ট বিশিষ্ট আইনজীবী, শিক্ষানুরাগী ও প্রবীণ রাজনীতিবিদ অ্যাডভোকেট মো. আবু হানিফ এর সভাপতিত্বে ও আশরাফুল আলম সবুজ এর সঞ্চালনায় এর আগে স্বাগত বক্তব্যে উত্তরা পাবলিক লাইব্রেরির কর্ণধার ও প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মোহাম্মদ তারেকউজ্জামান খান বলেন, সমাজের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজে অবদান রেখে চলা ব্যক্তিদের বাবাদেরকে আমরা এই সম্মাননা প্রদান করেছি। আমরা চাই প্রতিটি বাবার সন্তানরাই দেশ ও সমাজের জন্য অবদান রাখুক। মানুষের মধ্যে ভালো কাজের অনুপ্রেরণা যাতে জেগে ওঠে এবং একই সঙ্গে বাবাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে তাঁদেরকে সম্মাননা প্রদান করেছি।