রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:১১ পূর্বাহ্ন

ইন্টারনেট বন্ধের মধ্যে যা যা ঘটলো সারাদেশে

নিউজ দৈনিক ঢাকার কন্ঠ 

দুর্বৃত্তদের হামলা ও অগ্নিসংযোগে ক্ষতিগ্রস্ত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর 

কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে রাজধানীসহ বিভিন্ন এলাকায় ভয়াবহ সহিংসতা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। পরিস্থিতি মোকাবিলায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে কঠোর হওয়ার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে ১৬ জুলাই থেকে মোবাইলে ফোরজি ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করা হয়। এরপর বৃহস্পতিবার (১৯ জুলাই) রাত থেকে বন্ধ হয়ে যায় ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা।

১৯ জুলাই দিনগত রাত ১২টা থেকে সারাদেশে কারফিউ জারি করে সরকার। বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তার জন্য মোতায়েন করা হয় সেনাবাহিনী। একই সঙ্গে জনসাধারণের নিরাপত্তা নিশ্চিতে গত রবি, সোম ও মঙ্গলবার (২১, ২২, ২৩ জুলাই) সারাদেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়।

পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় ধীরে ধীরে কারফিউ শিথিলের সময়সীমা বাড়ানো হয়। মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) রাত থেকে সীমিত পরিসরে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা চালু হয়েছে। আজ বুধবার থেকে অফিস-আদালত, ব্যাংক-বীমা, শেয়ারবাজার ও কলকারখানায় কাজ শুরু হয়েছে।

ইন্টারনেট সেবা বন্ধ

কোটা সংস্কার আন্দোলনের মধ্যে সহিংসতা ও গুজব ছড়িয়ে পড়লে ১৬ জুলাই থেকে দেশজুড়ে মোবাইল ইন্টারনেটের ফোরজি সেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপর বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) সন্ধ্যায় রাজধানীর মহাখালীতে খাজা টাওয়ারের ডাটা সেন্টারে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের অপটিক্যাল ফাইবারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে দেশজুড়ে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা বন্ধ হয়ে যায়। ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক জানান, সন্ত্রাসীদের অগ্নিসংযোগের কারণে ডেটা সেন্টার পুড়ে যাওয়া এবং আইএসপিএবির তার পুড়ে যাওয়ার কারণে সারা দেশে ইন্টারনেট সেবা ব্যাহত। মেরামত করতে সময় লাগবে।

বিটিভি ভবনে আগুন

 

বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টার দিকে বিটিভির মূল গেটে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। পরে সন্ধ্যার দিকে মূল ভবনেও আগুন দেওয়া হয়। গভীর রাত পর্যন্ত সে আগুন জ্বলতে দেখা যায়। ভবনে আটকা পড়া কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সাংবাদিকরা পুলিশ এবং বিজিবির সহযোগিতায় নিরাপদে বের হয়ে যান। আগুনে বিটিভির সম্প্রচার বন্ধ হয়ে যায়। প্রায় ২৪ ঘণ্টা পর শুক্রবার বিকেল ৪টার দিকে সম্প্রচারে ফেরে বিটিভি।

সরকারি স্থাপনায় আগুন-ভাঙচুর

শুক্রবার দুপুরের পর থেকে ঢাকাসহ সারা দেশে বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা চালানো হয়। এর মধ্যে রয়েছে মহাখালীর এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের টোল প্লাজা, বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ, মাদারীপুরে পুলিশ বক্স ও বিদ্যুৎ কার্যালয়, সিলেটের প্রধান ডাকঘর, নারায়ণগঞ্জ পাসপোর্ট অফিস ও যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের কার্যালয়, সাইনবোর্ড এলাকায় পিবিআইয়ের কার্যালয়, রাজধানীর বনশ্রীতে পিবিআইয়ের কার্যালয়, হাতিরঝিলের রামপুরার পানি শোধনাগার, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পুরোনো ভবন এবং মহাখালীর কোভিড হাসপাতাল।

এ ছাড়া মোহাম্মদপুরে ঢাকা উদ্যানের পুলিশ ফাঁড়িতে আগুন ও ভাঙচুর, তিন রাস্তার মোড়ে সহকারী পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) কার্যালয়ে আগুন, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এ ছাড়া নারায়ণগঞ্জ বিজিবি ক্যাম্পে হামলা ও ভাঙচুর চালায় দুর্বৃত্তরা। আগুনও দেয় তারা।

মেট্রোরেল বন্ধ ঘোষণা

গত ১৬ জুলাই মেট্রোরেলের ফার্মগেট স্টেশনে হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। ১৮ জুলাই মেট্রোরেলের কাজীপাড়া ও মিরপুর ১০ নম্বর স্টেশনে ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এই দুই স্টেশন চালু হতে এক বছর বছর সময় লেগে যেতে পারে। এরপর জননিরাপত্তার স্বার্থের কথা উল্লেখ করে মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, ‘অনিবার্য কারণবশত জননিরাপত্তার স্বার্থে মতিঝিল মেট্রোরেল স্টেশন থেকে সর্বশেষ মেট্রো ট্রেন বিকেল ৫টা ৩০ মিনিটে উত্তরা উত্তর মেট্রোরেল স্টেশনের উদ্দেশে ছেড়ে যাবে। এরপর আজ (বৃহস্পতিবার) আর কোনো মেট্রোরেল চলাচল করবে না। যাত্রীসাধারণের সাময়িক অসুবিধার জন্য মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করেছে।’

মেট্রোরেল চালু হওয়ার বিষয়ে বুধবার ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এমএন সিদ্দিক জাগো নিউজকে বলেন, মেট্রোরেল কবে নাগাদ চালু করতে পারবো আমরা এখনই বলতে পারছি না। মেট্রোরেল চালু হওয়ার বিষয়ে কথা বলার সময়ও এখনো আসেনি।

বিএনপির নেতারা গ্রেপ্তার

‘কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে হামলা ও ছাত্র হত্যার প্রতিবাদে’ শুক্রবার বাদ জুমা ঢাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে যুগপৎভাবে ‘জাতীয় ঐক্য সমাবেশ ও মিছিল’ করার ঘোষণা দিয়েছিল বিএনপি। তবে পুলিশের বাধায় ওই এলাকায় যেতে পারেননি দলটির নেতাকর্মীরা। দুপুর ১২টার দিকে সেখান থেকে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ছাড়া বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান ও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, কেন্দ্রীয় নেত্রী নিপুণ রায় চৌধুরী এবং গণ অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক নুরুল হক নুরকে গ্রেপ্তার করা হয়।

নরসিংদী কারাগারে হামলা

শুক্রবার (১৯ জুলাই) বিকেলে নরসিংদী জেলা কারাগারে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এসময় ৯ জঙ্গিসহ ৮২৬ কারাবন্দি পালিয়ে যান। এ সময় আন্দোলনকারীরা আসামি ছিনিয়ে নিয়ে যান। এছাড়া অস্ত্রাগার ও কারারক্ষীদের থেকে ৮৫টি অস্ত্র ও আট হাজার ১৫০টি গুলি লুট করা হয়। এ ঘটনায় জেল সুপার আবুল কালাম আজাদ এবং জেলার কামরুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) রাতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা বিভাগের বরাতে এ তথ্য জানান নরসিংদী জেলা প্রশাসক ড. বদিউল আলম। তিনি বলেন, পালিয়ে যাওয়া বন্দিদের আত্মসমর্পণের জন্য মাইকিং করা হচ্ছে। তারা দু-একজন করে আসছেন। আশা করছি বেশির ভাগ বন্দিই স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করবেন।

১৪ দলের সভা

কোটা সংস্কার আন্দোলনের মধ্যে শুক্রবার মধ্যরাতে ১৪ দলের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। বৈঠকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির সার্বিক অবস্থা বিবেচনা করেই শরিকদের সম্মতিতে সারা দেশে কারফিউ জারির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

কারফিউ জারি ও সেনা মোতায়েন

দেশের উদ্ভূত পরিস্থিতিতে জনগণের জানমালের নিরাপত্তার স্বার্থে ও আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের জন্য শুক্রবার দিনগত রাত ১২টা থেকে সারা দেশে কারফিউ জারি করে সরকার। একই সময় সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেনাবাহিনীর সদস্যরা বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা করে সমন্বিতভাবে কাজ শুরু করেন।

মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) থেকে ঢাকা মহানগর ও জেলা, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, গাজীপুর জেলার কারফিউয়ের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়; অন্যান্য জেলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও জেলা প্রশাসন।

তিন সমন্বয়কের সঙ্গে তিন মন্ত্রীর বৈঠক

শুক্রবার গভীর রাতে কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তিন সমন্বয়ক রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এবং তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাতের দেখা করে ৮ দফা দাবি জানান। সেগুলো আদায় না হওয়া পর্যন্ত তাদের কর্মসূচি চলমান থাকবে বলে জানানো হয়। কোটা আন্দোলনের তিন সমন্বয়ক হলেন হাসনাত আব্দুল্লাহ, সারজিস আলম ও হাসিব আল ইসলাম।

প্রধানমন্ত্রীর স্পেন ও ব্রাজিল সফর বাতিল

দেশের উদ্ভূত পরিস্থিতিতে পূর্বনির্ধারিত স্পেন ও ব্রাজিলের রাষ্ট্রীয় সফর বাতিল করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, চলমান পরিস্থিতির কারণে সফর দুটি বাতিল করেছেন প্রধানমন্ত্রী। এরই মধ্যে বিষয়টি আমাদের স্পেন ও ব্রাজিল দূতাবাসের মাধ্যমে দেশ দুটির সরকারকে অবহিত করা হয়েছে। একই সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে তাদের চিঠি পাঠাচ্ছি।

কোটা নিয়ে হাইকোর্টের রায়

প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে কোটা বহাল করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় রোববার (২১ জুলাই) বাতিল করেন আপিল বিভাগ। তবে ন্যায়বিচারের স্বার্থে আপিল বিভাগ সরকারি চাকরিতে কোটা ৭ শতাংশ নির্ধারণ করেন। এই ৭ শতাংশের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনার সন্তানদের জন্য ৫ শতাংশ, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ১ শতাংশ এবং প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের জন্য ১ শতাংশ। এ ছাড়া বাকি ৯৩ শতাংশ মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ হবে।

প্রধান বিচারপতি মো. ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন সাত বিচারপতির বেঞ্চ রাষ্ট্রপক্ষ ও দুই শিক্ষার্থীর করা লিভ টু আপিল নিষ্পত্তি করে এই রায় দেন। এই রায় ও আদেশের পর শিক্ষার্থীরা কোটাসংক্রান্ত চলমান কর্মসূচি প্রত্যাহার করবেন বলে সর্বোচ্চ আদালত আশা প্রকাশ করেন।

তিন বাহিনীর প্রধানদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক

দেশের উদ্ভূত পরিস্থিতিতে তিন বাহিনীর প্রধানদের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রোববার সকালে গণভবনে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল এম নাজমুল হাসান এবং বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার মার্শাল হাসান মাহমুদ খান উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রীর সামরিক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল তারিক আহমেদ সিদ্দিকী এবং মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেনসহ সামরিক ও বেসামরিক প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

আইজিপি যা বললেন

রোববার রাজারবাগে কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে আহত পুলিশ সদস্যদের দেখতে যান পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুন। সেখানে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে জনগণের জানমালের নিরাপত্তার হুমকি, সরকারি স্থাপনা ধ্বংসের মতো ঘৃণ্য কর্মকাণ্ড অব্যাহত রাখলে পুলিশ আইনের কঠোর ও সর্বোচ্চ প্রয়োগে বাধ্য হবে। যার দায়দায়িত্ব বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী ও উসকানিদাতাদের নিতে হবে। যারা অশান্তি সৃষ্টি ও দেশকে পিছিয়ে দিতে চায়, দেশের সম্পদ নষ্ট করতে চায়, তাদের ছাড় দেওয়া হবে না।

বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের ব্রিফিং

রোববার বিকেলে রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় দেশের চলমান পরিস্থিতির বিষয়ে ঢাকায় কর্মরত বিদেশি দূতাবাস ও মিশনপ্রধানদের ব্রিফ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। কোটা আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বিএনপি-জামায়াত-শিবিরসহ স্বাধীনতাবিরোধী ও ধর্মীয় উগ্রবাদীরা দেশজুড়ে সহিংসতা এবং ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে বলে জানান তিনি। যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, চীন, জাপান, রাশিয়া, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানিসহ প্রায় ৪০টি দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার মিশনপ্রধান এবং প্রতিনিধিরা এ কূটনৈতিক ব্রিফিংয়ে অংশ নেন।

বিএনপির আমান ও জামায়াতের সেক্রেটারি আটক

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, কেন্দ্রীয় নেতা ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন অসীম, জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এহসানুল মাহবুব যোবায়ের, শিবিরের সাবেক সভাপতি রাশেদুল ইসলামসহ শতাধিক নেতাকর্মীকে ঢাকা থেকে আটক করা হয়।

পরে বিটিভি ভবনে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগে রাজধানীর রামপুরা থানার মামলায় জামায়াতে ইসলামীর নেতা মিয়া গোলাম পরওয়ারসহ ছয়জনের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। এ মামলায় রিমান্ডকৃত অন্য আসামিরা হলেন বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী সায়েদুল আলম বাবুল, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হক, বাগেরহাট জেলা বিএনপির সভাপতি এম এ সালাম ও বিএনপির সমর্থক মো. মাহমুদুস সালেহীন। রোববার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ শেখ সাদীর আদালত এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন। একই মামলায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নিপুন রায় চৌধুরীর তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়। এ ছাড়া সেতু ভবন ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, চুরি ও মারধরের ঘটনায় রাজধানীর বনানী থানার মামলায় গ্রেপ্তার গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

এবার সহজে ছাড় দেওয়া হবে না: প্রধানমন্ত্রী

সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে ব্যবসায়িক নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এতে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, বিকেএমইএসহ বিভিন্ন ব্যবসায়িক সংগঠনের নেতারা অংশ নেন।

মতবিনিময় সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, জনগণের জানমাল রক্ষায় কারফিউ দিতে বাধ্য হয়েছি। বিএনপির প্রত্যক্ষ মদদে এবং জামায়াত-শিবিরের পরিকল্পনায় এসব ধ্বংসযজ্ঞ হয়েছে। এই সহিংসতাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়ে এটাকে দমন ও প্রতিহত করব। এবার এদের সহজে ছাড় দেওয়া হবে না। নাশকতাকারীদের দমন করে দেশের পরিবেশ স্বাভাবিক করব, ইনশাআল্লাহ।

৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে: সেনাপ্রধান

দেশে সৃষ্ট অরাজক পরিস্থিতিতে সেনাবাহিনী মাঠে নামার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে জানিয়েছেন সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। সোমবার রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন শেষে গুলিস্তানে মওলানা ভাসানী হকি স্টেডিয়াম চত্বরে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।

সেনাপ্রধান বলেন, গত কয়েকদিন দেশে একটি অরাজক পরিস্থিতি ছিল। এতে জানমালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। জনগণের অনেক সম্পদ ধ্বংস হয়েছে। মূলত সেগুলো রক্ষা করতে এবং জনগণের নিরাপত্তা দিতে সেনাবাহিনীকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আমরা নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে সেনা মোতায়েন করেছি। পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক করতে পেরেছি।

ভাড়াটিয়াদের তথ্য চাইলেন ডিএমপি কমিশনার

সোমবার যাত্রাবাড়ী এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান বলেন, আমাদের কাছে তথ্য আছে, এই নাশকতা চালানোর জন্য অনেকদিন আগে থেকেই সন্ত্রাসীরা ঢাকায় এসে ঘাঁটি গেড়েছিল এবং বিভিন্ন বাসা ভাড়া নিয়ে তারা থাকতে শুরু করে। জনগণকে বলব, যারা নতুন এসেছে, নতুন বাসা ভাড়া নিয়েছে তাদের তথ্য দিয়ে আমাদের সহযোগিতা করুন।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘যে পুলিশ ছাড়া একটি দিন কল্পনা করা যায় না, সেই পুলিশ সদস্যদের ওপর তারা হামলা চালিয়েছে, হত্যা করেছে। এমনকি কোথাও কোথাও পুলিশ সদস্যের সন্তান পরিচয় পেলে তাদেরও হত্যা করা হচ্ছে এবং হুমকি দেওয়া হচ্ছে।’

শুরু থেকেই তৎপর ছিল আনসার

সোমবার রাজধানীর মালিবাগ এলাকায় আবুল হোটেলের সামনে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল এ কে এম আমিনুল হক। তিনি বলেন, কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দেশে যে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল সেটি নিয়ন্ত্রণে আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী শুরু থেকেই তৎপর ছিল। আমরা সর্বোচ্চ প্রচেষ্টার মাধ্যমে এই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড প্রতিহত করেছি। ভবিষ্যতেও এ ধরনের যে কোনো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড প্রতিহত করতে আমরা সর্বাত্মক তৎপর।

আনসার প্রধান বলেন, বিএনপি-জামায়াত স্বার্থান্বেষী মহল কোমলমতি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার সর্বাত্মক চেষ্টা করেছে। দেশের সার্বিক অবস্থা এরই মধ্যে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে।

কাল্পনিক অভিযোগ এনে বিএনপি নেতাদের হেনস্তা : মির্জা ফখরুল

সোমবার এক বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দেশে কারফিউ জারি করার মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জনগণের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিয়ে জনগণকে চরম দুর্ভোগের মধ্যে নিক্ষেপ করেছে সরকার। কোটাবিরোধী আন্দোলনে বিএনপির নেতাকর্মীদের কোনো ধরনের সংশ্লিষ্টতা না থাকলেও কাল্পনিক অভিযোগ এনে বিএনপি নেতাদের হেনস্তা করা হচ্ছে। শুধু তা-ই নয়, রিমান্ডে নিয়ে গ্রেপ্তার নেতাকর্মীদের ওপর চরম নির্যাতন করা হচ্ছে। সার্বিক অর্থে দেশে এখন এক ভীতিকর অবস্থা বিরাজমান।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যা বললেন

সোমবার রাতে রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে আহত পুলিশ সদস্যদের দেখতে যান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, দেশজুড়ে চলমান পরিস্থিতিতে নাশকতারীদের হামলায় এ পর্যন্ত তিন পুলিশ নিহত এবং ১ হাজার ১১৭ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। একসঙ্গে এতসংখ্যক পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার ইতিহাস বোধহয় এটাই প্রথম। তাদের কত পৈশাচিকভাবে আঘাত করা হয়েছে, এগুলো যারা না দেখেছেন, তারা বুঝবেন না। কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি আছেন তিনজন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এ পর্যন্ত তিন পুলিশ সদস্য মৃত্যুবরণ করেছেন। এর মধ্যে একজন পিবিআইর পুলিশ ইন্সপেক্টর, একজন ডিএমপির নায়েক এবং একজন ট্যুরিস্ট পুলিশের এএসআই। সাধারণত ট্যুরিস্ট পুলিশরা এ ধরনের কার্যক্রমে থাকেন না। দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তিনিও বাদ যাননি। অত্যন্ত পেশাদারত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তারা হতাহত হয়েছেন।

পিএসসির সব পরীক্ষা স্থগিত

মঙ্গলবার থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত অনুষ্ঠিতব্য ৪৪তম বিসিএসের মৌখিকসহ বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) সব পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। সোমবার পিএসসির জনসংযোগ কর্মকর্তা এস এম মতিউর রহমান এক এসএমএস বার্তায় এ তথ্য জানিয়েছেন। এস এম মতিউর রহমান জানান, ২৩ জুলাই (আজ) থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত অনুষ্ঠিতব্য ৪৪তম বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষা, অর্ধবার্ষিক বিভাগীয় পরীক্ষা জুন-২০২৪ এবং নন-ক্যাডারের এমসিকিউ, বাছাই, ব্যবহারিক, সাঁটলিপি, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষাসহ পিএসসির অধীন সব ধরনের পরীক্ষা অনিবার্য কারণে স্থগিত করা হয়েছে। পরে এসব পরীক্ষার তারিখ ও সময়সূচি পিএসসির ওয়েবসাইট এবং পত্রিকার মাধ্যমে জানানো হবে।

ডিএমপির ৮ থানার ওসি বদলি

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) আট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) বদলি করা হয়েছে। গত ২২ জুলাই পুলিশ সদর দপ্তর থেকে তাদের বদলির এ আদেশ দেওয়া হয়।

পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সংঘাত, সহিংসতা মোকাবিলার ক্ষেত্রে আগাম তথ্য সংগ্রহে ব্যর্থতা ও কার্যকর ব্যবস্থা নিতে না পারার কারণে আট থানার ওসি বদলি করা হয়েছে। ডিএমপির আরও কয়েকটি থানার ওসিকে বদলি করা হতে পারে।

বদলি হওয়া ওসিদের মধ্যে রয়েছেন, ধানমন্ডি থানার ওসি পারভেজ ইসলাম, মোহাম্মদপুর থানার ওসি মাহফুজুল হক ভূঁইয়া, খিলক্ষেত থানার ওসি হুমায়ন কবির, কাফরুল থানার ওসি ফারুকুল আলম, দারুস সালাম থানার ওসি সিদ্দিকুর রহমান, তুরাগ থানার ওসি শেখ সাদিক, দক্ষিণখান থানার ওসি আমিনুল বাশার ও কামরাঙ্গীরচর থানার ওসি শাকের মোহাম্মদ জুবায়ের।

তবে পুলিশ সদর দপ্তরের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেসন্স বিভাগের পুলিশ সুপার ইনামুল হক সাগর গণমাধ্যমকে জানান, নিয়মিত বদলির অংশ হিসেবে তাদের এই বদলি করা হয়েছে।

কোটা নিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি

সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটা পুনর্বহাল সংক্রান্ত হাইকোর্টের রায় সর্বোচ্চ আদালতে সামগ্রিকভাবে বাতিলের পর মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ‘সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, স্ব-শাসিত ও সংবিধিবদ্ধ কর্তৃপক্ষের এবং বিভিন্ন করপোরেশনের চাকরিতে বা কর্মে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে সরকারের বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি সংশোধন।’

এতে বলা হয়, সমতার নীতি ও অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর প্রজাতন্ত্রের কর্মে প্রতিনিধিত্ব লাভ নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অর্থাৎ সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, স্ব-শাসিত ও সংবিধিবদ্ধ কর্তৃপক্ষের এবং বিভিন্ন করপোরেশনে চাকরিতে বা কর্মে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে সব গ্রেডে যে কোটা নির্ধারণ করা হয়েছে, সেটা হচ্ছে, মেধাভিত্তিক ৯৩ শতাংশ, মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা, বীরাঙ্গনার সন্তানের জন্য পাঁচ শতাংশ, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী এক শতাংশ, প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের জন্য এক শতাংশ।’

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘এছাড়া নির্ধারিত কোটায় যোগ্যপ্রার্থী পাওয়া না গেলে সংশ্লিষ্ট কোটার শূন্য পদগুলোতে সাধারণ মেধা তালিকা হতে পূরণ করা হবে। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিধি-১ শাখার বিগত ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবরের পরিপত্র নম্বর ০৫.০০.০০০০.১৭০.১১.১৮-২৭৬-সহ পূর্বে জারিকৃত সব পরিপত্র/প্রজ্ঞাপন/ আদেশ/নির্দেশ/অনুশাসন রহিত করা হলো। এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর করা হবে।’

যত দ্রুত সম্ভব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হবে: আইনমন্ত্রী

যত দ্রুত সম্ভব সারাদেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি বলেন, শিক্ষার পরিবেশ তৈরি হলে যত দ্রুত সম্ভব সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে যাবে।

মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) দুপুরে ঢাকার গুলশানে নিজের কার্যালয়ে ব্রিফিংয়ে আইনমন্ত্রী এ কথা বলেন। ব্রিফিংয়ে জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এবং তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত উপস্থিত ছিলেন।

কোটা সংস্কার ছাড়াও আন্দোলনকারীদের তোলা অন্যান্য দাবির বিষয়ে সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশ প্রতিপালন, বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন, আন্দোলনকারী সাধারণ শিক্ষার্থীদের আইনি সুরক্ষা দেওয়াসহ সরকারের গৃহীত পাঁচটি পদক্ষেপ সম্পর্কে সাংবাদিকদের অবহিত করেন আইনমন্ত্রী।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের আগে খুঁজে বের করতে হবে এসব সহিংসতার পেছনে কারা ছিল। পাশাপাশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো পুরোপুরি না খুললে হতাহতদের মধ্যে শিক্ষার্থীদের সংখ্যা কত তা সঠিকভাবে নিরূপণ করা এতটা সহজ হবে না।’

হেলিকপ্টার থেকে গুলি করা হয়নি

র‌্যাবের মহাপরিচালক অতিরিক্ত আইজিপি ব্যারিস্টার মো. হারুন অর রশিদ বলেছেন, সহিংসতা ঠেকাতে র‌্যাব হেলিকপ্টার থেকে কোনো গুলি করেনি। এগুলো প্রপাগান্ডা। হেলিকপ্টার থেকে সাউন্ড গ্রেনেড ও গ্যাস সেল ফায়ার করা হয়েছে। কোনো গুলি করা হয়নি।

মঙ্গলবার (২৪ জুলাই) রাজধানীর কারওয়ান বাজার র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জনান তিনি।

র‍্যাব মহাপরিচালক বলেন, গত জুলাই থেকে কোটা সংস্কার আন্দোলন সহিংসতায় পরিণত হয়। শুরু হয় ধ্বংসযজ্ঞ। এই ধ্বংসযজ্ঞের ভয়াবহতা মধ্যযুগীয় বর্বরতাকে হার মানায়। পুলিশ ও তাদের স্থাপনাকে টার্গেট করা হয়। উত্তরা পূর্ব থানার সামনে র‌্যাবের কনস্টেবল অমিত বড়ুয়াকে নির্মম ও নিষ্ঠুরভাবে রড দিয়ে পিটিয়ে মাথা ফাটিয়ে দেয়া হয়। তিনি এখন সিএমএইচ হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। আমাদের গাড়িও সেখানে পুড়িয়ে দেয়া হয়। কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটির ছাদে গিয়ে পুলিশ সদস্যরা আশ্রয় নেয়। আমরা তাদের হেলিকপ্টার দিয়ে সেখান থেকে উদ্ধার করেছি।

রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সেনাবাহিনী প্রধানের সাক্ষাৎ

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। ২৩ জুলাই বঙ্গভবনে সাক্ষাৎকালে সেনাবাহিনী প্রধান দেশে বিরাজমান পরিস্থিতি এবং সেনাবাহিনীর কর্মকান্ড সম্পর্কে রাষ্ট্রপতিকে অবহিত করেন।

সাক্ষাতকালে সেনাপ্রধান জানান, ঢাকাসহ দেশের ৫৭ জেলায় ২৭ হাজার সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা এবং জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সেনা সদস্যরা বেসামরিক প্রশাসনকে সহযোগিতা করছে। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে যতদিন প্রয়োজন ততদিন সেনা সদস্যরা মাঠে থাকবে।

সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক রাষ্ট্রপতি দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে সেনাবাহিনীর দক্ষতা ও পেশাদারিত্বের প্রশংসা করেন। রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশ টেলিভিশন, মেট্রোরেল, সেতুভবনসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানান। তিনি বলেন, স্বাধীনতা বিরোধী চক্র এই ধ্বংসযজ্ঞের মাধ্যমে তাদের হীন স্বার্থ কায়েমের পাশাপাশি দেশের উন্নয়নকে ধ্বংস করতে চেয়েছিল।

তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে গঠিত সশস্ত্র বাহিনী দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার পাশাপাশি যে কোন প্রয়োজনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে।

রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন বলেন, সেনাবাহিনী দেশের ক্রান্তিকালে দায়িত্ব পালন করে জনগণের আস্থা অর্জনে সক্ষম হয়েছে। তিনি দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে সেনা মোতায়েনের সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নেওয়ায় সরকারকে ধন্যবাদ জানান।

রাষ্ট্রপ্রধান আশা প্রকাশ করেন, খুব শিগগিরই আইন-শৃঙ্খলাসহ দেশের সার্বিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে এবং দেশ এগিয়ে যাবে।

তথ্য দিতে গোপনকারী আয়নের আওতায় 

নাশকতার তথ্য গোপন করলেই অপরাধের আওতায় আতায় পড়বেন নাগরিক দেশবাসী ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক ভাড়াটিয়া বাড়িওয়ালা দোকানদারি পথচারী পাথ ফুটপাত সকল পরিবহনের শ্রমিক মিলকারখানার মালিক এবং কর্মচারী।

গণমাধ্যম কর্মী এবং সংবাদ কর্মী

কোটা আন্দোলনের তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে গণমাধ্যম এবং সংবাদ কর্মীদের উপরে নানানভাবে হামলা মোবাইল ছিনতাই ক্যামেরা ভাঙচুর মাইক্রোফোন এবং শারীরিক নির্যাতন ও নারী সংবাদকর্মীদের উপরে নানানভাবে হেনস্তা প্রমাণ মিলছে।

জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সাংবাদিকদের বিক্ষোভ

সাংবাদিক নির্যাতন ও গণহত্যা বন্ধের দাবি

বাংলাদেশে সাংবাদিক নির্যাতন ও গণহত্যা বন্ধের দাবি জানিয়েছেন সাংবাদিক নেতারা। আজ বুধবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন-বিএফইউজে ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন-ডিইউজে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে আন্দোলনকারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং জাতিসংঘের তত্বাবধানে সাংবাদিক  ও গণহত্যার  আন্তর্জাতিক তদন্ত দাবি করা হয়।

বিএফইউজের সভাপতি রুহুল আমিন গাজীর সভাপতিত্বে সমাবেশে বিএফইউজে মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী, বিএফইউজের সাবেক মহাসচিব এম এ আজিজ, কবি আবদুল হাই শিকদার, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শহিদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলম, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমদ, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন আহমদ,সিনিয়র সাংবাদিক আমিরুল ইসলাম কাগজী, আবু সালেহ আকন, সদরুল হাসান, কাজিম রেজা প্রমূখ বক্তব্য রাখেন। সমাবেশ পরিচালনা করেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক সাঈদ খান। বিক্ষোভ সমাবেশে ১৭ দফা দাবি উত্থাপন করা হয়।

বিক্ষোভ সমাবেশে রুহুল আমিন গাজী বলেন, বাংলাদেশের মানুষ অত্যন্ত দু:সময় অতিক্রম করছে। আজ মানুষের জান-মাল- ইজ্জতের কোনো নিরাপত্তা নেই। পাখির মতো গুলি করে মানুষ হত্যা করছে। গত এক সপ্তাহে ৪ জন সাংবাদিককে হত্যা করা হয়েছে। ছাত্র ও সাধারণ মানুষ হত্যা করা হয়েছে শত শত। ঢাকার চার দিকে লাশ আর লাশ। লাশের গন্ধে বাতাস ভারি হয়ে উঠছে। স্বাধীনতার ৫৩ বছরে দেশের মানুষ এমন অসহায়বোধ  করে নি।

তিনি বলেন, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর   কর্মকর্তারা সমস্যা সমাধানে মনোযোগ না দিয়ে দলীয় নেতার  মতো বক্তব্য রাখছেন। সাংবাদিকদের এ নেতা বলেন, ছাত্রদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে প্রধানমন্ত্রী এক বক্তব্য দিয়ে আন্দোলনকে উত্তপ্ত করে দিলেন। উনাদের দলের সাধারন সম্পাদক বললেন আন্দোলনকারীদের মোকাবিলায় ছাত্রলীগ যথেষ্ট। এরপর পুরো দেশ দেখেছে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা কিভাবে সাধারন ছাত্রদের উপর হামলা চালায়। তাদেরকে হত্যা করে। হত্যার প্রতিবাদে আন্দোলন যখন সারাদেশে ছড়িয়ে পরে তখন ওবায়দুল কাদের আন্দোলনকারীদের দেখলেই গুলির নির্দেশ দিলেন। তারপর পুলিশ পাখির মতো গুলি করে গণহত্যা শুরু করেছে। শতশত মানুষের সাথে ৪জন সাংবাদিক হত্যার শিকার হয়েছে। বহু সাংবাদিক আহত। এসব হামলার দায় সরকার এড়াতে পারে না। এই দায় নিয়ে সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে।

কাদের গনি চৌধুরী বলেন, গত এক সপ্তাহ ধরে যেভাবে গণহত্যা শুরু হয়েছে তা ১৯৭১ সালকে স্মরণ করিয়ে দেয়। ১৯৭১ সালে ভিনদেশীরা আমাদের হত্যা করেছিল। আর আজ এ দেশের জাতীয় দুশমনরা মানুষ হত্যার উৎসবে মেতে উঠেছে। তিনি বলেন আজ অনেক সাংবাদিক ও ছাত্ররা গুলিবিদ্ধ। তারা হাসপাতালে মৃত্যু যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন। তাদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। নিহতদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। গত ক’দিন ধরে যে গণহত্যা সংঘটিত হয়েছে এ হত্যার প্রকৃত রহস্য উদঘাটন ও খুনিদের চিহ্নিত করতে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে আন্তর্জাতিক তদন্ত দাবি করে সাংবাদিকদের এ নেতা বলেন এ নিবির্চারে মানুষ হত্যা মেনে নেয়া যায় না।

এম এ আজিজ বলেন, সরকার আজ আমাদের সমাবেশে মাইক লাগাতে দেয়নি। সারাদেশে ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়েছে। সংবাদ মাধ্যমগুলোতে সাংবাদ প্রকাশ করতে দেয়া হচ্ছে না। তার মানে সরকার গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। এই সরকার জনগণের কন্ঠ রোধ করে, হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়।

তিনি বলেন, সরকার গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধ করার জন্য ক্ষমতার শুরু থেকে হামলা-মামলা-নির্যাতন চালিয়ে আসছে। এই পর্যন্ত ৬৪জন সাংবাদিক হত্যা হয়েছে। কোনো হত্যার বিচার হয়নি। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। অবিলম্বে এই সরকারের পদত্যাগ দাবি করছি।

প্রধানমন্ত্রীর উদ্যেশ্যে কবি আব্দুল হাই শিকদার বলেন, আপনি ভাংচুরের অভিযোগে আন্দোলনকারীদের গ্রেফতার করছেন। কিন্তু যারা সাধারন শিক্ষার্থীদের হত্যা করলো, ৪জন সাংবাদিকদের হত্যা করলো তাদের গ্রেফতার করছেন না কেনো? তাদের গ্রেফতারে কি পদক্ষেপ নিলেন? তাদের কি বিচার পাওয়ার অধিকার নাই? তারা কি মানুষ না?

৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানে নিজের অংশগ্রহণের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানে আমি অংশ নিয়েছি। এরকম বর্বরতা দেখিনি। একমাত্র মুক্তিযুদ্ধ ছাড়া কখনো এরকম বর্বরতা দেখিনি। এসময় অনতিবিলম্বে গণহত্যার দায় নিয়ে সরকারের পদত্যাগ দাবি করেন তিনি।

শহিদুল ইসলাম বলেন, সরকার তার পুলিশ বাহিনীকে ব্যবহার করে একটি যৌক্তিক আন্দোলনকে সহিংসতায় রূপ দেয়। বল প্রয়োগ করে শিক্ষার্থী, সাংবাদিক ও দেশের সাধারন জনগণকে হত্যা করে। এখন হত্যার ঘটনা আড়াল করতে উল্টো আন্দোলনকারীদের গ্রেফতার করছে।

আমরা সরকারের এই ন্যক্যারজনক হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। অবিলম্বে সাংবাদিক হত্যার সাথে জড়িতদের গ্রেফতারের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।

খুরশীদ আলম বলেন, ইসরাইলি ইহুদীরা গাঁজায় যেভাবে গণহত্যা চালাচ্ছে ঠিক একইভাবে বাংলাদেশে গত ৮দিন সরকার তার ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে গণহত্যা চালিয়েছে। আমরা সরকারের এই গণহত্যার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। অবিলম্বে সরকারের পদত্যাগ দাবি করি।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, বিএফইউজের সহ সভাপতি একেএম মহসিন, কোষাধ্যক্ষ শহিদুল ইসলাম, ডিইউজের সাংগঠনিক সম্পাদক সাঈদ খান, বিএফইউজের দফতর সম্পাদক আবু বকর, ডিইউজের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবুল কালাম, ক্রিড়া ও সংস্কৃতি সম্পাদক রফিক লিটন, দফতর সম্পাদক ইকবাল মজুমদার তৌহিদ, বিএফইউজের নির্বাহী সদস্য অর্পনা রায়, আবু হানিফ, ডিইউজের নির্বাহী সদস্য নিজাম উদ্দিন দরবেশ, এম মোশাররফ হোসেন, তালুকদার রুমি, গাজী আনোয়ারুল হক, আব্দুল্লাহ মজুমদার, ফখরুল ইসলাম প্রমুখ।

বিক্ষোভ সমাবেশে সাংবাদিকদের ১৭ দফা উপস্থাপন করে বিএফইউজে মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী। ১৭ দফার মধ্যে রয়েছে :  ১. সাংবাদিক হত্যা নির্যাতন বন্ধ করতে হবে ২. সম্প্রতি ৪ জনসহ গত ১৬ বছরে ৬৬ জন সাংবাদিক খুন হয়েছে, এসব খুনের বিচার করতে হবে। ৩. কোটা বিরোধী আন্দোলনে নিহতদের ক্ষতিপূরণ ও আহতদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে ৪. সাংবাদিক সুরক্ষা আইন করতে হবে ৫. বন্ধ মিডিয়া খুলে দিতে হবে ৬.সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্টসহ গণমাধ্যমের স্বাধীনতা বিরোধী সকল কালাকানুন বাতিল ৭. অবিলম্বে ইন্টারনেট চালু করতে হবে ৮. গণমাধ্যমের উপর থেকে সকল প্রকার চাপ তুলে নিতে হবে। গণমাধ্যমকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে দিতে হবে ৯. সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত সকল মামলা তুলে নিতে হবে ১০. গণমাধ্যমে বিজ্ঞাপন বৈষমস্য দূর করতে হবে। ভুয়া সাকুলেশন দেখিয়ে বিজ্ঞাপনের টাকা লুট বন্ধ করতে হবে ১১. অবিলম্বে শিক্ষাঙ্গণ খুলে দিতে হবে ১২. আন্দোলনরত ছাত্রদের উপর বল প্রয়োগ বন্ধ করতে হবে। প্রতিবাদকারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে ১৩. গণহত্যা ও গণগ্রেফতার বন্ধ করতে হবে এবং কোটা বিরোধী আন্দোলনকে কেন্দ্র করে যারা গণহত্যা চিালিয়ে তাদের বিচার করতে ১৪. মানুষের জানমালের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে ১৫. নোবেল বিজয়ী প্রফেসর ড. ইউনুসের উপর বিচারিক হয়রানি বন্ধ করতে হবে ১৬. গুরুতর অসুস্থ সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মানবিক কারণে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে প্রেরণ করতে হবে ১৭. একটি মানবিক বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে দেশে গণতন্ত্র, সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক ন্যায় বিচার, মানবাধিকার, বাক স্বাধীনতা, ভোটাধিকার, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দিতে হবে। গুম, খুন, বিনা বিচারে হত্যা, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে হত্যা, ছাত্র হত্যা, গণতান্ত্রিক আন্দোলনে বল প্রয়োগ বন্ধ, ভিন্ন মতের রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে হামলা-মামলা, জেল-জুলুম, নির্যাতন-নিপীড়ন বন্ধ করতে হবে। দুর্নীতিবাজ,ভূমিদস্যু ও লুটেরাবাজদের বিচার করতে হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

দৈনিক ঢাকার কন্ঠ
© All rights reserved © 2012 ThemesBazar.Com
Design & Developed BY Hostitbd.Com