জুলাই গণহত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রীস শেখ হাসিনাসহ ৫২ জনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে। এর মধ্যে ৩২ জন সাংবাদিককেও অভিযুক্ত করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) আন্দোলনে নিহত রিহানের বাবা গোলাম রাজ্জাক এ আবেদন করেন। আইনজীবী এমএইচ গাজী তামিম বিষয়টি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন।
আসামিরা হলেন- গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা; বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের; সাবেক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল; সাবেক আইনমন্ত্রী মো. আনিসুল হক; সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাসান মাহমুদ; সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু ; সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল; সাবেক ডাক টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক; সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মাদ আলী আরাফাত।
সাবেক এমপি জাহাঙ্গীর কবির নানক; ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলাম; সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন; অতিরিক্ত আইজিপি ও সাবেক ডিবি প্রধান হারুন আর রশিদ ; সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সাবেক যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার; টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) সাবেক মহাপরিচালক জিয়াউল আহসান; ডিএমপির আদাবর থানার ওসি মো. মাহাবুব রহমান; বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন; বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান।
সুপ্রিমকোর্টের আপীল বিভাগের সাবেক বিচারক এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক; সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মুহাম্মদ জাফর ইকবাল; আইনজীবী ও অনলাইন আক্টিভিস্ট নিঝুম মজুমদার; ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক মেজবাহ কামাল; সাবেক প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব নাঈমুল ইসলাম খান; সাবেক প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্ঠা ইকবাল সোবহান চৌধুরী; ঢাকা প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি ও সাবেক এমপি ফরিদা ইয়াসমিন।
ঢাকা প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত; একাত্তর টিভির প্রধান সম্পাদক ও সিইও মোজাম্মেল বাবু; সাংবাদিক ও টিভি সঞ্চালক নবনীতা চৌধুরী; এবি নিউজ২৪ডটকমের সম্পাদক সুভাষ সিংহ রায়; সময় টিভির এমডি আহমেদ যোবায়ের; সময় টিভির সাবেক বার্তা প্রধান ও এখন টিভির বার্তা প্রধান তুষার আব্দুল্লাহ; ডিবিসি নিউজের সিইও সাইফুল আলম; বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক নইম নিজাম; সমকালের সাবেক সম্পাদক আবেদ খান।
এটিএন নিউজের বার্তা প্রধান প্রভাষ আমিন; একাত্তর টিভির সাবেক প্রধান প্রতিবেদক ফারজানা রুপা; একাত্তর টিভির বার্তা প্রধান শাকিল আহমেদ; একাত্তর টিভির হেড ও কারেন্ট এফেয়ার্স মিথিলা ফারজানা (মোবাশ্বিরা ফারজানা মিথিলা); ডিবিসি নিউজের সম্পাদক জাহেদুল হাসান পিন্টু; ডিবিসি নিউজের প্রধান সম্পাদক মঞ্জুরুল ইসলাম; ইন্ডিপেনডেন্ট টিভির প্রধান বার্তা সম্পাদক আশীস সৈকত; এশিয়ান টিভির হেড অব নিউজ মানষ ঘোষ; ডিবিসির প্রনব সাহা।
বাংলাদেশের সাবেক তথ্য কমিশনার মাসুদা ভাট্টি; এটিএন নিউজের সাবেক প্রধান নির্বাহী সম্পাদক মুন্নি সাহা; এটিএন বাংলার সাবেক প্রধান নির্বাহী সম্পাদক জ ই মামুন (জহিরুল ইসলাম মামুন); দৈনিক জনকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক স্বদেশ রায়; চ্যানেল আইয়ের সোমা ইসলাম; ইত্তেফাকের শ্যামল সরকার; সমকালের অজয় দাশ; সাবেক প্রধানমন্ত্রী উপ-প্রেস সচিব আশরাফুল আলম খোকন।
গত ১৪ আগস্ট গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থায় আবেদন করা হয়। কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহত সাভারের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী আরিফ আহমেদ সিয়ামের বাবা মো. বুলবুল কবীর এ আবেদন করেন।
পরে ট্রাইব্যুনালের ধানমন্ডিতে তদন্ত সংস্থার প্রধান কার্যালয়ে সংস্থার প্রধান কো-অডিনেটর বরাবর অ্যাডভোকেট গাজী এম এইচ তামিম আবেদনটি দায়ের করেন।
আবেদনে ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত ঘটনার তারিখ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। পাশাপাশি এ সময়ে আহত হয়ে পরবর্তীতে বিভিন্ন তারিখে নিহতরাও এর আওতায় থাকবে বলেও আবেদনে উল্লেখ করা হয়। এ ছাড়া ঘটনার স্থান হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে সমগ্র বাংলাদেশকে।
অভিযোগে অপরাধের ধরনে বলা হয়েছে, এক থেকে নয় নম্বর আসামির নির্দেশে ও পরিকল্পনায় অন্যান্য আসামিরা দেশীয় এবং আগ্নেয়াস্ত্র দ্বারা নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারী সাধারণ নিরস্ত্র ছাত্র-জনতাকে হত্যা করে তাদের সমূলে বা আংশিক নির্মূল করার উদ্দেশ্যে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছেন।