রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৫১ পূর্বাহ্ন
বিশেষ সংবাদদাতা :
ঢাকা, বুধবার তারিখ ২৪/০৯/২০২৪ ইং রাজধানী দেশের সব চেয়ে বড় অত্যাধুনিক ও নন্দিত বিমানবন্দরের নাম হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। এই বিমানবন্দরে তৃতীয় টার্মিনালের কালক্রম চালু শুরু হলে এর সক্ষমতা বাড়বে প্রায় আড়াই গুণ।
বর্তমানে আমদানি ও রপ্তানি কার্গো টার্মিনালের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। শেষ মুহুর্তে অল্প কিছু কাজ বাকি আছে। আগামী বছরের মার্চ-এপ্রিলে তা চালু হবার সম্ভবনা রয়েছে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর দেশের সব চেয়ে বড় এই আন্তর্জাতিক মানের বিমানবন্দরে তৃতীয় টার্মিনাল উদ্বোধন করেন তৎকালীন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। খবর বাসস’র।
বেবিচকের এক কর্মকর্তারা এই প্রতিবেদককে জানান, এশিয়ার মহাদেশের মধ্যে নন্দিত সর্ব বৃহৎ নতুন এই টার্মিনালটি পুরোপুরি ভাবে চালু হলে শাহজালাল বিমানবন্দরের সক্ষমতা বাড়বে প্রায় দুই থেকেন আড়াই গুণ। এখন পর্যন্ত প্রকল্পটির কাজের সবশেষ অগ্রগতি হয়েছে প্রায় ৯৮ শতাংশ।
তৃতীয় টার্মিনালের সফট ওপেনিং উদ্বোধন
করেছিলেন তৎকালীন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা । একই দিন দুপুর ১২টার দিকে টার্মিনালের উদ্বোধন করেন তিনি । ওই দিন আনুষ্ঠানিকতা শেষে নবনির্মিত টার্মিনাল ব্যবহার করে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বিশেষ ফ্লাইট ঢাকা ছেড়েছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী, ঢাকা-১৮ আসনের এমপি আলহাজ্ব মো: হাবিব হাসান সহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বিমানবন্দরে উপস্হিত ছিলেন।
বিমানবন্দর সূত্র বলছে, জাপানের মিৎসুবিশি ও ফুজিতা করপোরেশন এবং কোরিয়ার স্যামসাংয়ের জয়েন্ট ভেঞ্চার ‘এভিয়েশন ঢাকা কনসোর্টিয়াম’ তৃতীয় টার্মিনালের ‘সফট ওপেনিং’ করেন।
তৃতীয় টার্মিনালে কী কি সুবিধা আছে : বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, নতুন এই টার্মিনালে থাকবে বিশ্বমানের সব সুযোগ-সুবিধা ও যাত্রীসেবা। ২০১৯ সালের ৩০ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী এই টার্মিনালের নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেছিলেন। বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) বলছে, তৃতীয় এই টার্মিনালের প্রায় ৯৮ শতাংশ কাজই প্রায় শেষ। টার্মিনালের পুরো কার্যক্রম আগামী বছরের শেষ দিকে চালানো সম্ভব হবে।
বিমানবন্দর ও সংশ্লিষ্ট সূত্র গুলো বলছে, বিমানবন্দরে টার্মিনালটি নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ২১ হাজার ৩৯৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৫ হাজার কোটি টাকা দিচ্ছে বাংলাদেশ। বাকি তহবিলের জোগানদাতা জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)। টার্মিনালটির নকশা করেছেন বিশ্বের অন্যতম সেরা ও ব্যস্ততম হিসেবে পরিচিত সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি বিমানবন্দরের নকশাকার রোহানি বাহারিন।
সূত্রে জানা যায়, দেশের প্রধান এই বিমানবন্দরের দু’টি টার্মিনালে এখন প্রতিদিন ৩০ থেকে ৩৫ হাজার যাত্রী সেবা পাচ্ছেন। সেই হিসাবে বিমানবন্দরটি বছরে প্রায় ৮০ লাখ যাত্রীকে সেবা দেয়। বেবিচকের তথ্য অনুযায়ী, তৃতীয় টার্মিনাল চালু হলে বছরে অতিরিক্ত ১ কোটি ২০ লাখ যাত্রীকে সেবা দেওয়া সম্ভব হবে।
বিশ্বমানের এই টার্মিনালে ১ হাজার ৪৪টি গাড়ি রাখার সক্ষমতাসহ বহুতল গাড়ি পার্কিং তৈরি করা হচ্ছে। এই টার্মিনালে একসঙ্গে ৩৭টি উড়োজাহাজ পার্ক করে রাখা যাবে। এ ছাড়া তৃতীয় টার্মিনালে ১৬টি ব্যাগেজ বেল্ট স্থাপন করা হবে এবং অতিরিক্ত ওজনের ব্যাগেজের জন্য চারটি পৃথক বেল্ট থাকবে। একটি করিডরের মাধ্যমে পুরোনো দু’টি টার্মিনালের সঙ্গে নতুন টার্মিনালকে যুক্ত করা হবে।
বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, তৃতীয় টার্মিনালে যেতে সেই ভোগান্তি আর পোহাতে হবে না। যানজট এড়ানোরও নানা অবকাঠামো তৈরি হয়েছে। টার্মিনালের পুরো কার্যক্রম চালু হতে কিছু সময় লাগলেও কিছু কিছু সুবিধা এখন থেকে ব্যবহার করা যাবে। যেমন অ্যাপ্রনে ৩৭টি এয়ারক্রাফট পার্ক করা যাবে। আমদানি ও রপ্তানি কার্গো টার্মিনালের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। আগামী বছর মার্চ-এপ্রিলে তা চালু হবার সম্ভবনা রয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ৩০ ডিসেম্বর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই টার্মিনালের নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেছিলেন।