বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৩৬ অপরাহ্ন
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, দেশের ‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে’ প্রয়োজনে বিএনপির সঙ্গে একযোগে কাজ করার বিষয়ে তার দল তৈরি আছে।
রবিবার (৩ নভেম্বর) লন্ডনভিত্তিক ‘চ্যানেল এস’ টেলিভিশনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন তিনি। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার প্রায় তিন মাসের মাথায় আওয়ামী লীগের শীর্ষ কোনও নেতার প্রথম সাক্ষাৎকার এটি।
গত ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দলটির মন্ত্রী, এমপি ও নেতারা আত্মগোপনে চলে যান। এমন পরিস্থিতিতে গোপনে হাছান মাহমুদ দেশ ছেড়েছেন বলে গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়। তবে তিনি কীভাবে দেশ ছেড়েছেন এবং কোথায় অবস্থান করছে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
বিভিন্ন ইস্যুতে বিএনপি নেতাদের অনেক বক্তব্যের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে একমত পোষণ করে হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি যে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের কথা বলছে, একটি অবাধ, নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা বলছে, সেটির সঙ্গে আমরা একমত এবং প্রয়োজনে বিএনপির সঙ্গে একযোগে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য আমরা কাজ করবো।
‘আওয়ামী লীগ: তটস্থ, হতাশ, কোণঠাসা?’ শীর্ষক এই অনুষ্ঠানে ‘অভিমত’ নামে সাক্ষাৎকারটি নেন বুলবুল হাসান। এতে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এক প্রশ্নে হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপির অনেক বক্তব্যের সঙ্গে আমরা একমত। আমরা এক-এগারোর সরকারের সঙ্গে একযোগেই কিন্তু গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্য, গণতন্ত্রের মুক্তির জন্য আন্দোলন করেছিলাম এবং গণতন্ত্র ফিরে এসেছে।
তিনি বলেন, এখন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান কিংবা বিএনপির মহাসচিব জনাব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যে বক্তব্যগুলো দিচ্ছেন, অনেকগুলোর সঙ্গে আমরা একমত।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, “বিশেষ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব যে বলেছেন, ‘রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করার আমরা কারা?’- এই যে প্রশ্ন তুলেছেন, আমি এটির সঙ্গে একমত। এমনকি ছাত্রলীগকে কাগজে নিষিদ্ধ করার পর সেটির বিরুদ্ধেও তারা বক্তব্য দিয়েছেন। আমি তাদের এই বক্তব্যের সঙ্গে একমত।
তিনি বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এবং মহাসচিবসহ তাদের শীর্ষ নেতারা বক্তব্য দিয়েছেন যে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের একমাত্র লক্ষ্য হওয়া উচিত একটি অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করে জনপ্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা- এই বক্তব্যের সঙ্গে আমি পুরোপুরি একমত।
হাছান মাহমুদ বলেন, “জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে হামলা, অগ্নিসংযোগ হওয়ার পর বিএনপি যে বক্তব্য, সেই বক্তব্যের সঙ্গেও আমরা একমত। একটি রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে আমি ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে আমি হামলা করলাম, সেই রাজনৈতিক দলের অফিস জ্বালিয়ে দেওয়া হলো- এ নিয়ে সরকারের কোনও বক্তব্য খুঁজে পাচ্ছি না।”
তিনি বলেন, “কোনও সরকারই কিন্তু শেষ সরকার নয়, মনে রাখতে হবে; আমাদের ক্ষেত্রে আমরাও শেষ সরকার ছিলাম না।”
এই সময় সঞ্চালক ‘সেটা তো আপনারা মনে রাখেননি’ উল্লেখ করলে হাছান মাহমুদ বলেন, “অনেকে মনে করেনি। আমি সবসময় মনে রেখেছি। আমি নিজে সবসময় মনে রেখেছি। কিন্তু অনেকে মনে রাখেনি, যেটা সঠিক। কাজেই এই সরকারই শেষ সরকার নয়। এটি সবাইকে মাথায় রাখতে হবে।’
তিনি বলেন, তারা যে আগের সরকারের মন্ত্রীদের হাতকড়া পড়ালেন, ডিম ছুড়লেন, ভবিষ্যতের যে একটা ভয়ঙ্কর উদাহরণ তৈরি করে গেলেন, ভবিষ্যতে কী ঘটে সেটার জন্য অপেক্ষা করতে হবে।
জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতি নিষিদ্ধের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ নেতা হাছান মাহমুদ বলেন, এই প্রসঙ্গে আজকে আমি কিছু বলতে চাই না। তবে আমি মনে করি, কোনও রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করলেই নিষিদ্ধ হয়ে যায় না।
তিনি বলেন, “বাংলাদেশে একটি উচ্চ কক্ষ দরকার। যেভাবে ভারত, পাকিস্তানসহ বিভিন্ন দেশে আছে। তার মাধ্যমে বুদ্ধিজীবী ও নাগরিক সমাজকে রাষ্ট্রীয় কাজে যুক্ত করা যাবে। আমাদের দেশে বিরাট একটা বুদ্ধিজীবী সমাজ আছে, বিরাট একটা নাগরিক সমাজ আছে, রাষ্ট্র পরিচালনায় তারা অবদান রাখতে চায়, অবদান রাখতে পারে, কিন্তু তারা ব্যাপকভাবে মনে করে, তাদেরকে সুযোগটা দেওয়া হচ্ছে না।
হাছান মাহমুদ বলেন, আমাদের দেশে যে নির্বাচনি ব্যবস্থা, সেই নির্বাচনি ব্যবস্থায় একজন সাধারণ বুদ্ধিজীবীর পক্ষে নির্বাচিত হয়ে আসা কঠিন। কারণ, রাজনীতিতে যে পরিমাণ সময় দিতে হয় এবং রাজনীতি যে রকম খরুচে হয়ে গেছে, সেখানে তাদের পক্ষে নির্বাচিত হয়ে আসাটা কঠিন।
তিনি বলেন, “ইলেকটোরাল কলেজের মাধ্যমে যদি এই রকম একটা উচ্চ কক্ষ হয়, তাহলে আমাদের দেশের বুদ্ধিজীবী শ্রেণিকে, আমাদের দেশের নাগরিক সমাজকে আমরা সেখানে সম্পৃক্ত করতে পারবো।”
“সেক্ষেত্রে অনেক গুণী লোক রাষ্ট্রীয় কাজে অবদান রাখতে পারবেন। এ বিষয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানও বক্তব্য রেখেছেন। তিনিও আপার হাউজের পক্ষে কথা বলেছেন।”
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, রাষ্ট্র সংস্কারের আগে যেটি বেশি দরকার, সেটি হচ্ছে এবং রাষ্ট্র সংস্কারের মূল দায়িত্বটা হচ্ছে জনপ্রতিনিধিদের, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব বলেছেন, আমি তার সঙ্গে শতভাগ একমত। আমি মনে করি নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমেই রাষ্ট্র সংস্কার হওয়া প্রয়োজন। এবং রাষ্ট্র সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া, সেই প্রক্রিয়া তিন মাস, ছয় মাস, তিন বছরে শেষ হয়ে যায়, তা নয়।”
হাছান মাহমুদ বলেন, অবশ্যই রাষ্ট্র পরিচালনা করতে গিয়ে আমাদের ভুল ছিল, ভুল হয়। আমরা সেই ভুলগুলোকে স্বীকার করি এবং ভুল থেকে মানুষ শিক্ষা গ্রহণ করে। আজকে মানুষের মধ্যে যে হতাশা, দ্রব্যমূল্য নিয়ে, আইনশৃঙ্খলা নিয়ে, ভবিষ্যৎ নিয়ে, আমি আশা করবো, আমাদের সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এই হতাশা কেটে যাবে, দেশ ভালো থাকবে। দেশে একটি স্বস্তিদায়ক পরিবেশ ফিরে আসবে। আমরা সবাই এ লক্ষ্যে একযোগে করতে চাই।
২০১৪ সালে এবং ২০২৪ সালে নির্বাচনে বিএনপির অংশ না নেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, “বিএনপি অবশ্যই সবসময় নির্বাচন বর্জন করেছে, নির্বাচন প্রতিহত করার চেষ্টা করেছে। তবে যেহেতু আমরা দায়িত্বে ছিলাম, আমাদের এই জায়গায় ব্যর্থতা ছিল যে, আমরা বিএনপিকে নির্বাচনে আনতে ব্যর্থ হয়েছি। ২০১৪ সালে এবং ২০২৪ সালে তাদেরকে নির্বাচনে আনতে না পারাটা আমাদের রাজনৈতিক ব্যর্থতা ছিল।”
দলীয় ফোরামে বিষয়টি নিয়ে কথা হয়েছিল কি না, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, “আমাদের বিভিন্ন ফোরামে এটা নিয়ে কথা হয়েছিল, দলীয় ফোরামে বিশদ আলোচনা হয়েছে তা নয়। তবে বিএনপিকে নির্বাচনে আনার বিষয়ে বিভিন্ন সময়ে আলোচনা হয়েছে। বিএনপিকে নির্বাচনে আনা, বিএনপির কেন প্রয়োজন, সেটি নিয়ে বহু আলোচনা হয়েছে।”
দলের নেতাকর্মীদের ‘হতাশ হওয়ার কোনও কারণ নেই’ মন্তব্য করে হাছান মাহমুদ বলেন, “আমি তাদের সবার উদ্দেশে বলবো— এই আঁধার কেটে যাবে এবং সহসা দেশে একটি সুস্থ স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরে আসবে এবং জনগণের পাশে অতীতেও ছিলাম, ভবিষ্যতেও থাকবো। আমাদের নেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা, তিনি সবকিছু সম্পর্কে ওয়াকিবহাল আছেন, সবার সঙ্গে তিনি যোগাযোগ রাখছেন এবং তার মনোবল শতভাগ চাঙ্গা আছে এবং আমরা মনে করি, খুবই সহসাই এই আঁধার কেটে যাবে।”
আওয়ামী লীগের কর্মসূচি এবং কামব্যাক করার বিষয়ে জানতে চাইলে হাছান মাহমুদ বলেন, “আমরা সচেতনভাবেই অপেক্ষা করছি। এখন যদি আমরা রাজনৈতিক কর্মসূচি নিয়ে নামতাম, সরকারের পক্ষ থেকে আবার অনেকেই বলতো যে, আমাদের কারণে রাষ্ট্র পরিচালনা করতে পারছে না, আমাদের কারণে দ্রব্যমূল্য বাড়ছে, এই হচ্ছে সেই হচ্ছে।
তিনি বলেন, গার্মেন্টস শ্রমিকরা যখন আন্দোলন করে তখনও বলে যে, ‘স্বৈরাচার ফিরে আসছে’, গার্মেন্টস শ্রমিক হিসেবে, মাজার ভাঙার পর খাদেমরা বিক্ষোভ করলে ‘স্বৈরাচার ফিরে আসছে’, এই বক্তব্য যখন দেওয়া হয়, তখন আমরা সচেতনভাবেই আর কি আমরা নিশ্চুপ আছি, যাতে আমাদের উপর দোষ না আসে।”
হাছান মাহমুদ বলেন, আওয়ামী লীগ এমন একটি দল, যেই দলের লক্ষ লক্ষ নেতাকর্মী আছে, কোটি কোটি সমর্থক আছে। সেহেতু আওয়ামী লীগ কখনও ফুরিয়ে যায়নি, কখনও ফুরিয়ে যাবে না। আওয়ামী লীগ চায় দেশ ভালো থাকুক, দেশের মানুষ ভালো থাকুক। আওয়ামী লীগ সচেতনভাবে এখন নিশ্চুপ আছে।
ভিন্নমত দমনে ‘আয়নাঘরে’ বন্দী রাখার বিষয়ে এক প্রশ্নে তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগের পর এখন তো সরকার ক্ষমতায় প্রায় তিন মাস, তো আয়নাঘরটা দেখাক কোথায়? এই সরকারের র্যাবপ্রধান বলেছে, ‘আয়নাঘরের’ কোনও অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। তো আয়নাঘর, আয়না ঘর…”।
বাংলাদেশে ২৬ লাখ ভারতীয় থাকা নিয়ে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের কথার প্রসঙ্গ টেনে হাছান মাহমুদ বলেন, “তার কাছে আমার প্রশ্ন ২৬ লক্ষ ভারতীয় কই? আয়নাঘরটা কই? তিনি তো, আইন উপদেষ্টা সেটি একটু জনগণকে দেখাক।”
আওয়ামী লীগ প্রতিহিংসামূলক আচরণের পক্ষপাতী নয় দাবি করে হাছান মাহমুদ বলেন, “বাংলাদেশ থেকে চিরতরের জন্য অস্বীকারের রাজনীতি, দ্বান্দ্বিক রাজনীতি, ঘৃণার রাজনীতি বিদায় হওয়া উচিত। দেশে একটি সহনশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতি তৈরি হোক।”
তিনি বলেন, নির্বাচন হবে, নির্বাচন হওয়ার পরে যারা সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গঠন করবে, যারা বিরোধী দলে থাকবে গঠনমূলক সমালোচনা হবে। এভাবে আবার বিরোধী দল সরকারে গেলেও একই ধারা থাকবে। এটাই হওয়া উচিত।”
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হতাহতের বিষয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, “যে সংখ্যাতত্ত্ব দেওয়া হচ্ছে, সেটি আসলে কত? এটি নিয়ে একটি বড় প্রশ্ন আছে। কেউ বলেন এত শত, কেউ বলেন হাজার বা আরও বেশি। একটা ‘ভেইগ টার্মে’ সব কিছু বলা হচ্ছে।”
সরকারি হিসাবে প্রায় দেড় হাজার নিহতের বলার কথা উপস্থাপক উল্লেখ করলে হাছান মাহমুদ বলেন, “এটা এই সরকার বলছে। নামটা একটু প্রকাশ করুক। কারা কোথায়, কোন জায়গায় হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে, সেটা তো কোনোদিন প্রকাশ করা হয় নাই।”
তিনি বলেন, ৪৩ জন পুলিশের পরিচয় প্রকাশ করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় যেটা প্রকাশ করা হয়েছে, সেটা তারও বেশি। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মিডিয়ায় বলা হয়েছে ৩ হাজার ২২৪ জন পুলিশ হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে, সেটা আপনি যদি চান পাঠিয়ে দেবো। আসলে কতজন হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে, সেটি এখনও তদন্ত সাপেক্ষ বিষয়।”
আরেক প্রশ্নে তিনি বলেন, “শুধু জুলাই-অগাস্টের হত্যাকাণ্ড, জুলাই-অগাস্টের হত্যাকাণ্ড— হত্যাকাণ্ড তো এখনও হচ্ছে। এগুলো নিয়ে তো আমি কথা বলতে শুনি না। এগুলোকে হত্যাকাণ্ড মনে করা হচ্ছে না?”
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ছাত্রলীগ-পুলিশকে উসকে দেওয়া এবং দায় অস্বীকারের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “প্রথমত পুলিশকে যখন আক্রমণ করা হয়, পুলিশের কী আত্মরক্ষার অধিকার নাই? পুলিশের ধারাবাহিক হত্যাকাণ্ড হয়েছে, আপনি নিজেও দেখেছেন। পুলিশের গাড়ি ঘেরাও করে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করা হয়েছে এবং পুলিশের উপর গুলি ছোঁড়া হয়েছে এবং তখন তো পুলিশ আত্মরক্ষার্থে গুলি যে ছোঁড়েনি তা নয়, অবশ্যই ছুঁড়েছে।”
তিনি বলেন, সেজন্য এই পুলিশের দায় আমরা কখনও অস্বীকার করি না। বা সরকার পক্ষের দায় আমরা অস্বীকার করি না। এখনও অস্বীকার করছি না। অবশ্যই, দায়িত্বে থাকলে দায় নিতে হবে।”
৫ অগাস্টের আগে ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের শতাধিক নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে বলেও দাবি করেন হাছান মাহমুদ। কোটা সংস্কার আন্দোলনকে এত দূর যেতে দেওয়া ভুল ছিল বলে ব্যক্তিগত মত দিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, “সেখানে শুরু থেকে ব্যাপক সমর্থন ছিল। এ বিষয়কে আমরা পুরোপুরি আদালতের হাতে ছেড়ে না দিয়ে যদি অন্যভাবে এটাকে সমাধা করা হতো, তাহলে ভালো হতো বলে আমি মনে করি। এটাকে এতদূর যেতে দেওয়াটাই ভুল ছিল।”
সরকার পতনে ‘আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের’ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, “আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করা হয়েছিল। জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করা হয়েছিল। দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র ছিল, আমরা যে বুঝতে পারিনি তা নয়। ষড়যন্ত্র সবসময় ছিল এবং সেটা সবসময় বুঝতে পেরেছি। আমরা ওয়াকিবহাল ছিলাম এবং দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের মাধ্যমেই ৫ অগাস্টের ঘটনা ঘটানো হয়েছে।