বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:৪৫ অপরাহ্ন
ডেস্ক নিউজ:
বাংলাদেশে যে হামলাই হোক না কেন, তার জবাবদিহি চায় যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান সরকার। একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে ধর্মীয় স্বাধীনতাও দেখতে চায়। গত বৃহস্পতিবার রাতে ওয়াশিংটন ডিসিতে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ব্রিফিংয়ে মুখপাত্র ম্যাথু মিলার এ কথা জানান।
সম্প্রতি ভারত সফর করা একজন সাংবাদিক ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশ, পাকিস্তান, আফগানিস্তানে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা এবং যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায়ও কিছু ঘটনা ঘটার অভিযোগ তোলেন।
ওই সাংবাদিক বলেন, নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পও তাঁর নির্বাচনী প্রচারণার সময় বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর নৃশংসতার কথা বলেছিলেন। বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর নৃশংসতা চলছে অভিযোগ করে ওই সাংবাদিক জানতে চান, যুক্তরাষ্ট্র এ ক্ষেত্রে কী করছে?
ব্রিফিংয়ে ওই সাংবাদিক উল্লেখ করেন, শেখ হাসিনার বিদায়ের পর অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস বলেছিলেন, এই হামলা অব্যাহত থাকলে তিনি পদত্যাগ করবেন। তিনি এখনো ওই পদে আছেন।
জবাবে ম্যাথু মিলার বলেন, ‘এর আগেও আমরা এ বিষয়ে কথা বলেছি।
বাংলাদেশি কর্মকর্তাদের সঙ্গে আমাদের আলোচনায় আমরা স্পষ্টভাবে জানিয়েছি, আমরা ধর্মীয় স্বাধীনতাকে সম্মান জানানো দেখতে চাই। আর যেকোনো হামলার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী যথাযথ জবাবদিহি দেখতে চাই। এটিই বাংলাদেশ নিয়ে আমাদের সত্য অবস্থান। বিশ্বের যেকোনো স্থানের ক্ষেত্রেও এটি সত্য।
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত ৩১ অক্টোবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে এক বার্তায় বাংলাদেশ পরিস্থিতি অত্যন্ত বিশৃঙ্খল হিসেবে উল্লেখ করেন। ট্রাম্প বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের প্রসঙ্গ তুলে গভীর উদ্বেগ জানান। এক্স বার্তায় তিনি আরো লিখেছেন, তিনি প্রেসিডেন্ট থাকলে এমনটি হতো না।
ট্রাম্পের বক্তব্য প্রসঙ্গে ঢাকায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম গত বুধবার এক ব্রিফিংয়ে বলেছেন, ‘বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ভুল তথ্য দেওয়া হয়েছে। এখন যেহেতু উনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন, তাই অবশ্যই উনি এখন দেখতে পারবেন ঘটনা আসলে কী ঘটেছে।
আমরা মনে করি, সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে প্রচুর অপতথ্য বা ভুল তথ্য প্রচার করা হয়েছে। ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস রয়েছে, তারা দেখবে বাংলাদেশে কী ঘটছে বা সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা আদৌ ঘটেছে কি না। যুক্তরাষ্ট্রের সদ্যোবিজয়ী প্রেসিডেন্ট তখন নিশ্চয়ই প্রকৃত চিত্র জানতে পারবেন।’
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের গত বৃহস্পতিবারের ব্রিফিংয়ে প্রশ্ন করতে গিয়ে এক সাংবাদিক বলেন, বাইডেন প্রশাসনের চার বছরে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অনেকবার ভারত সফর করেছেন। ট্রাম্প প্রশাসন দায়িত্ব নেওয়ার পর কূটনৈতিক সম্পর্ক, ভিসা, মানুষে মানুষে যোগাযাগে কোনো পরিবর্তন আসবে?
জবাবে মুখপাত্র ম্যাথু মিলার বলেন, ‘এখন থেকে আগামী ২০ জানুয়ারির মধ্যে আমাকে সম্ভবত আরো অনেকবার বলতে হবে যে নতুন প্রশাসন (ট্রাম্প প্রশাসন) কী করবে তা আমি বলতে পারি না। তবে আমি বলব, বর্তমান প্রশাসন (বাইডেন প্রশাসন) কোয়াড এবং অভিন্ন অগ্রাধিকারের বেশ কিছু কাজের মাধ্যমে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করা নিয়ে অবিশ্বাস্য রকমের গর্বিত।’
ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক প্রসঙ্গে ম্যাথু মিলার বলেন, ‘এটি এমন একটি বিষয়, যার দিকে আমরা প্রথম দিন থেকেই দৃষ্টি রেখেছিলাম। আমরা যখন দায়িত্ব ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি তখনো আমরা এর (ভারত-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক) বিশাল সাফল্য দেখছি।’