বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:২৬ পূর্বাহ্ন
বাংলাদেশের আদালত তারেক রহমান এবং তার ব্যবসায়িক সহযোগী গিয়াস উদ্দিন আল মামুনের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের অভিযোগে তাদের সাত বছরের সাজা স্থগিত করে এক বিতর্কিত রায় দিয়েছে। এই রায়কে কেন্দ্র করে বিএনপি উল্লসিত হলেও আন্তর্জাতিক দুর্নীতি তদন্তকারী ডেবরা লা প্রোভোত্তে বিরুদ্ধে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
বুধবার(১১ ডিসেম্বর) নিজের অফিসিয়াল ইনস্টাগ্রাম পোস্টে বলেন, “বাংলাদেশে আইনের শাসন নেই এবং তারেক রহমানের বিরুদ্ধে অশুভ রাজনৈতিক হস্তক্ষেপে এই রায় দেওয়া হয়েছে। ”
২০১১ সালে ডেবরা লা প্রোভোটে ঢাকায় আদালতে সাক্ষ্য দেন, যেখানে তিনি তারেক রহমান ও গিয়াস উদ্দিন আল মামুনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন দুর্নীতির প্রমাণ উপস্থাপন করেন। তার মতে, মামুন, যিনি তারেকের ঘনিষ্ঠ বন্ধু, বাংলাদেশের টঙ্গী এলাকায় ৮০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করতে দুর্নীতি ও ঘুষের মাধ্যমে চীনা একটি প্রতিষ্ঠানের সাথে কাজ করেছিল।
ডেবরার দাবি, মামুন কনসালট্যান্সি ফি’র নামে অবৈধ টাকা পাচার করেছেন, যা সিঙ্গাপুরে স্থানান্তরিত হয়েছিল।
এদিকে, বাংলাদেশে আদালতের রায়ে তারেক রহমানের বেকসুর খালাসের পেছনে রাজনৈতিক এবং আইনি বিষয়গুলো খতিয়ে দেখা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ডেবরা লা প্রোভোটে আরও জানান, “এমনকি তারেক রহমানের ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে বিদেশে কেনাকাটা এবং চিকিৎসা খরচের পরিমাণ বেড়েছে। এসব প্রমাণে তারেকের দুর্নীতির একটি পরিস্কার চিত্র ফুটে ওঠে।”
এই ঘটনায় বাংলাদেশের বিচার বিভাগ, বিশেষ করে উচ্চ আদালতের স্বাধীনতা ও রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
ডেবরা জানিয়েছেন, ২০০৩ সালে ব্যাংক রেকর্ডে তারেক রহমানের পাসপোর্টের তথ্য উদ্ধার করা হয়েছিল এবং সেখান থেকে একাধিক অবৈধ লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে। এরপরে তারেকের বিরুদ্ধে অভিযোগ অপ্রমাণিত বা মিথ্যা প্রমাণিত না হওয়ায় আদালত তাকে খালাস দিয়েছে।
এদিকে, মার্কিন কংগ্রেসে বাংলাদেশ নিয়ে আগামী শুনানিতে মানবাধিকার ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতার বিষয়টি বিশেষ গুরুত্ব পাবে। তারেক রহমানের বিরুদ্ধে প্রমাণিত অভিযোগ এবং বিচার বিভাগের প্রতি আন্তর্জাতিক মনোযোগের ফলে দেশের রাজনৈতিক এবং আইনি পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে।
বিশেষত, ডেবরা লা প্রোভোটের জবানবন্দি এবং মার্কিন সরকারের সুনির্দিষ্ট প্রমাণ বাংলাদেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যত নিয়ে নতুন প্রশ্ন তুলছে।
ডেবরার সাক্ষ্য এবং নথিপত্রের সঙ্গে আরও একাধিক আইনজীবী এবং মানবাধিকার সংগঠন সুর মিলিয়ে বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থার স্বচ্ছতা নিয়ে আন্তর্জাতিক উদ্বেগ প্রকাশ করছে। ভবিষ্যতে এই রায়ের কার্যকারিতা এবং তারেকের রাজনৈতিক ভবিষ্যত বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক শক্তির বিরুদ্ধে জনমত সৃষ্টি করতে পারে।