রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০২:৩৪ পূর্বাহ্ন
লিমা আক্তার, ময়মনসিংহ
১ম পর্ব :
ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলায় সিন্ডিকেটের মাধ্যমে দেওয়া হচ্ছে অবৈধ গ্যাস সংযোগ তিতাস কর্তৃপক্ষ নিরব। কয়েকটি সিন্ডিকেট রাতের আঁধারে বিভিন্ন আবাসিক ভবনে অবৈধ গ্যাস লাইন সংযোগ দিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। ত্রুটিপূর্ণ এসব সংযোগ লিকেজ হয়ে ফিস্ফোরণ ঘটে প্রাণ হানির ঘটনা ঘটছে। স্থানীয় অসাধু তিতাস কর্মকর্তাদের সঙ্গে গোপন আতাঁত করে এসব সিন্ডিকেট চক্র চালাচ্ছে সরকারি প্রাকৃতিক সম্পদ গ্যাস হরিলুটের মহোৎসব।
ফলে সরকার হারাচ্ছেন মোটা অংকের রাজস্ব । সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আবাসিক গ্যাস সংযোগ বন্ধ থাকায় তিতাসের একশ্রেণির ঠিকাদার ও দালালরা অবলম্বন করেছেন অবৈধ উপায়। স্থানীয় প্রভাবশালীদের নিয়ে গড়ে তুলেছেন শক্তিশালী সিন্ডিকেট।
এসব সিন্ডিকেট তিতাসের কিছু কর্মকর্তাদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে এক থেকে পাঁচ লাখ টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন নব নির্মিত আবাসিক ভবন ও অবৈধ মিল কারখানায় গভীর রাতে গ্যাস সংযোগ দিচ্ছেন। থানা এলাকায় অন্তত ৬/৭ টি সিন্ডিকেট অবৈধ গ্যাস সংযোগে নিয়োজিত। তারা এককালিন মোটা অংকের অর্থ নিয়ে গ্যাস সংযোগ দিয়েও ভবন মালিকদের কাছ থেকে নিয়মিত মাসোহারা নিচ্ছেন। সিন্ডিকেট চক্র ও তিতাস কর্মকর্তাদের যোগসাজশে হরিলুট করা হচ্ছে সরকারি সম্পদ গ্যাস।অবৈধ উপায়ে সহজেই গ্যাস সংযোগ ও বিল পরিশোধের জামেলা না থাকায় বাড়ীর মালিকরা হয়ে পড়েছে সিন্ডিকেট নির্ভর। ফলে থানা এলাকায় দিন দিন বেড়েই চলছে অবৈধ গ্যাস সংযোগ।
সূত্র জানায়, থানা এলাকায় বৈধ গ্যাস ব্যবহারকারীর চেয়ে অবৈধ ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেশি। এছাড়াও বহু বাড়ীর মালিকরা বৈধ সংযোগ নিলেও অবৈধভাবে ব্যবহার করছেন একাধিক চুলা । সরেজমিনে জানা যায়,ভালুকায় পৌর এলাকার উপজেলার পিছনে জনতা ব্যাংকের সেকেন্ড অফিসার আনোয়ারের বাসায় অবৈধ সংযোগ রয়েছে।
এ অফিসারের চারতলা বিশিষ্ট ভবনের জন্য অনুমতি চারটা বার্নার কিন্তু অবৈধ সংযোগ নিয়ে ব্যবহার করছে আটটি। দীর্ঘদিন ধরে এভাবে সরকারি সম্পদ চুরি করে বাসা ভাড়া দিয়ে অর্থ-বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে। পাশেই আরেকজন সরকারি কর্মকর্তা কালামের বাসায় অবৈধ সংযোগ রয়েছে। এছাড়াও পৌর এলাকা,বাজার রোড,সিডস্টোর, মাষ্টার বাড়িসহ আরো অনেক স্থানে শত শত অবৈধ সংযোগ রয়েছে। বছরের পর বছর এভাবে সরকারি সম্পদ হরিলুট হলেও যেন দেখার কেউ নেই। মাঝে মধ্যে দু-একটি জায়গায় লাইন কেটে দিলেও জরিমানা বা মামলার কোনো উদ্যোগ নেয়নি কর্তৃপক্ষ। ফলশ্রুতিতে পরবর্তী তে আবার ও অবৈধ সংযোগ নিতে পিছপা হয় না বাড়ির মালিকরা।
সাধারণত অদক্ষ শ্রমিক দিয়ে মূল লাইন থেকে নিন্মমানের পাইপ দিয়ে এই সংযোগ দেওয়া হয়।ফলে বিস্ফোরণে প্রাণহানির ঘটনা ও রয়েছে।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কতিপয় বাড়ির মালিক জানান, গ্যাস ছাড়া লোকজন বাসা ভাড়া নিতে চায় না সেজন্যই অনেক বাড়িওয়ালা গ্যাসের অবৈধ সংযোগ দিয়ে বাসা ভাড়া দিচ্ছে। স্থানীয়রা জানান অবৈধ সংযোগের ফলে বিপাকে পড়েছেন তিতাসের বৈধ গ্রাহকগন। বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে তিতাসের ভালুকা শাখার ম্যানেজার শেখ মঞ্জুর আহমেদ বলেন,কতিপয় সিন্ডিকেটচক্র গ্যাসের অবৈধ সংযোগে সহায়তা করে থাকে।
ইতিপূর্বে এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। কোথাও অবৈধ সংযোগ পেলে তৎক্ষণাৎ ব্যবস্থা নেয়া হবে।