রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৪৪ অপরাহ্ন
সোহেল খান দূর্জয় নেত্রকোনা :
নেত্রকোনায়, ১৭.০২.২০২৩ ইং প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে প্রভাবশালীরা অবৈধ করাত কল (স্-মিল) চালাচ্ছেন। জেলা আইন শৃংখলা কমিটির সভায় এগুলো বন্ধের সিদ্ধান্ত গৃহীত হলেও তাঁরা তা কর্ণপাত করছেন না। সরকারি নিয়ম না মেনে স্থানীয় বিত্তবানরা এ জেলার যত্রতত্র প্রায় ৫শত করাত কল গড়ে তুলেছেন।
পরিবেশ ও বন বিভাগের ছাড়পত্র এবং লাইসেন্স ছাড়াই তাঁরা সরকারি স্কুল, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, সদর বাজারসহ গুরুত্বপূর্ণ সড়কের আশেপাশে এ মিল গুলো স্থাপন করেছেন। ফলে পরিবেশ হুমকির মুখে পড়েছে। ঘটছে নানান দূর্ঘটনা। পাশাপাশি সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাচ্ছেন।
কিছুদিন আগে জেলা মাসিক আইন শৃংখলা কমিটির সভার রেজুলেশনে জানা গেছে, কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ নিজেই অবৈধ করাত কল বন্ধের বিষয়টি সভায় উত্থাপন করেন। প্রয়োজনে এদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালানার কথাও উল্লেখ করেন। কিন্তু তারপরও অবৈধ করাত কলের প্রভাবশালী মালিকরা তাঁদের মিল বন্ধ করেনি। বীরদর্পে চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁদের অবৈধ করাত কল।
জেলা বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এ জেলায় প্রায় ৫শত করাত কল রয়েছে। যার মধ্যে হাতেগোনা দু/চারটি মিলের বৈধ কাগজপত্র বা লাইসেন্স রয়েছে। করাত-কল (লাইসেন্স) বিধিমালা-২০১২ সালের আইনে স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে, কোন ব্যক্তি লাইসেন্স ব্যতীত কোন করাত-কল স্থাপন বা পরিচালনা করতে পারবেন না।
এক স্কুল শিক্ষক মো. সাফায়েত হোসেন, আটপাড়া বানিয়াজান গ্রামের জাফর সরদার, পাঁচকাহুনিয়া বাজারসহ বিভিন্ন স্থানে গড়ে উঠেছে এসব অবৈধ করাত কল। কোনটি ভাঙা টিনের ঘরে, কোনটির আবার নেই ছাউনি। নেই কোন দূর্ঘটনা প্রতিরোধের ব্যবস্থাও। অরক্ষিত পরিবেশে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাঠ শ্রমিকরা এসব মিলে কাজ করেন। এসব স’মিল মালিকদের নিকট থেকে গোপনে মাসোহারা নেওয়া হতে পারে বলে অনেকে মন্তব্য করেছেন। যার কারণে অবৈধ জেনেও এদের বিরুদ্ধে কোন প্রকার আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়না।
এ ব্যাপারে মোহনগঞ্জ টেংগা গ্রামের একটি করাত কলের মালিক বলেন, আমার করাত কলের কোন লাইসেন্স বা কাগজপত্র নেই। এ জন্য মাঝে মধ্যে লোকজন এসে টাকা নিয়ে যায়। কই কেউতো মিল বন্ধ করতে বলেনি।
নেত্রকোনা ফরেস্ট অফিসার হাবিবুর রহমান বলেন, অবৈধ করাত কল থেকে বন বিভাগের লোকের টাকা নেওয়ার প্রশ্নই ওঠেনা। এ জেলায় প্রায় ৫শত করাত কল রয়েছে। এরমধ্যে হাতেগোনা দু/চারটির বৈধ কাগজপত্র আছে।
নেত্রকোনা জেলা সহকারী বন সংরক্ষক বলেন, অবৈধভাবে মিল স্থাপন বা পরিচালনা করার কোন সুযোগ নেই। অবৈধ মিলের তালিকা প্রস্তুত করে বিদ্যুৎ বিভাগকে দিয়েছি এবং লাইন বিচ্ছিন্ন করার জন্য বলেছি। এছাড়াও সকল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নিয়ে আমরা নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছি। কার্যক্ষেত্রে মামলা এবং জরিমান করা হচ্ছে। আমাদের এ কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ সাংবাদিকদের বলেন, ইতোমধ্যে বিষয়টি আইন শৃঙ্খলা মিটিংয়ে আলোচনা করেছি। তাঁরা (অবৈধ ‘স’ মিল মালিক) যদি দ্রুত সময়ে মধ্যে লাইসেন্স গ্রহণ না করে তাহলে তাঁদের আইনের আওতায় আনা হবে। প্রয়োজনে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে মিল বন্ধ করে দেয়া হবে।