বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৪৫ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনামঃ
তুরাগের বউবাজারে ফুডকোর্ট মার্কেট উচ্ছেদের প্রতিবাদে ব্যবসায়ীদের প্রতিবাদ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত  ক্যান্টনমেন্ট থানা পুলিশ কর্তৃক ছয়টি হ্যান্ড গ্রেনেড, ম্যাগাজিন ও বিপুল পরিমাণ গুলি উদ্ধার; তিন শূন্যের ধারণার ওপর ভিত্তি করে পৃথিবী গড়ার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার তুরাগের বউবাজার মার্কেট উচেছদের প্রতিবাদে মানববন্ধন ট্রাম্পের সঙ্গে ‘দ্বন্দ্ব’ মিটিয়ে ফেলতে পারবেন ড. ইউনূস সেনাবাহিনী কত দিন মাঠে থাকবে’ সরকারই সিদ্ধান্ত নেবে  প্যারিস-বাংলা প্রেসক্লাব ফ্রান্স’র কার্যকরি কমিটি (২০২৪-২০২৬)গঠন ১০ নভেম্বর ২০২৪ শহীদ নুর হোসেন গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের মহানায়ক : ডা. ইরান রাজধানী,তুরাগে ছেলের হাতে মা খুন অন্তর্বর্তী সরকার অধ্যাদেশ, ২০২৪’ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী জেড আই খান পান্না ডয়চে ভেলেকে বলেন, 

এমপির ভাতিজার বাড়িতে সরকারি অ্যাম্বুলেন্স

নিউজ দৈনিক ঢাকার কণ্ঠ 

জাহিদুল ইসলাম জাহিদ,লালমনিরহাট হাতীবান্ধা প্রতিনিধি 

লালমনিরহাট জেলা আ.লীগের সভাপতি ৃও লালমনিরহাট-১ (হাতীবান্ধা-পাটগ্রাম উপজেলা) আসনের এমপি মোতাহার হোসেনের ভাতিজা জাহিদুল ইসলাম সজীবের বাড়িতে বছর বছর ধরে পড়ে রয়েছে একটি সরকারি অ্যাম্বুলেন্স। জাহিদুল ইসলাম সজীবের বাড়ি লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার বড়খাতা ইউনিয়নের পূর্ব সারডুবি গ্রামে। সরকারি অ্যাম্বুলেন্সটি দেওয়া হয়েছে বড়খাতা ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রকে। এটির তত্ত্বাবধানে রয়েছে বড়খাতা ইউনিয়ন পরিষদ। এমপি’র ভাতিজার বাড়িতে সরকারি অ্যাম্বুলেন্সটি পড়ে থাকায় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আসা রোগিরা এটির সুবিধা বঞ্চিত রয়েছেন গেল সাড়ে তিন বছর ধরে।

বড়খাতা ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রের তত্বাবধায়ক উপসহকারী মেডিকেল অফিসার (স্যাকমো) ডা: ধীমান রায় বলেন, সাড়ে চার বছর আগে হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স অ্যাম্বুলেন্সটি বড়খাতা ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রকে দেয়। অ্যাম্বুলেন্সটির জন্য একটি ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন করা হয়। এ কমিটির সভাপতি হলেন বড়খাতা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। এক বছর অ্যাম্বুলেন্সটির সেবা নিয়েছিলেন রোগিরা। ‘বড়খাতা ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি প্রসূতি নারীদের ডেলিভারী সেন্টার। বিভিন্ন স্থান থেকে প্রসূতি নারীরা এখানে আসেন। একবছরে প্রায় ২৫০ জন রোগি সেবা নিয়েছিলেন অ্যাম্বুলেন্সটির,’ তিনি বলেন। ’অ্যাম্বেুলেন্সটি কোথায় এবং কি অবস্থায় রয়েছে আমি সেটা বলতে পারবো না। ব্যবস্থাপনা কমিটি এ ব্যাপারে বলতে পারবেন বলে তিনি জানান।

বড়খাতা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু হেনা মোস্তফা জামান সোহেল বলেন, ‘এমপির ভাতিজা তার লোকজনসহ আমার কাছ থেকে জোরপুর্বক অ্যাম্বুলেন্সটি নিয়ে যায়। আমি এমপিকে বিষযটি জানিয়েছি কিন্তু কোন ফল হয়নি। এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি কিন্তু কোন ফল আসেনি।’ ‘গেল সাড়ে তিন বছরধরে অ্যাম্বুলেন্সটি নিজের নিয়ন্ত্রনে রেখেছেন মোতাহার হোসেন এমপির ভাতিজা সজীব। এ কারনে ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আসা রোগিরা অ্যাম্বুলেন্স সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন,’। ‘এমপির ভাতিজার কাছ থেকে অ্যাম্বুলেন্সটি কোনভাবেই আনতে পারছি না। আমরা অসহায় হয়ে পড়েছি বলে দাবি করেন তিনি।

এমপির ভাতিজা জাহিদুল ইসলাম সজীবের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সরকারি অ্যাম্বুলেন্সটি তার বাড়িতে কেন রাখা হয়েছে এই কৈফিয়ত তিনি সাংবাদিকদকে দিবেন না। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানতে চাইলে বিষযটি বিবেচনা করা যেতে পারে বলে তিনি জানান।

স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, এমপি মোতাহার হোসেনের ভাতিজা ও তার লোকজন কিছুদিন আগে অ্যাম্বুলেন্সে চড়ে বেড়াতেন। এখন অ্যাম্বেুলেন্সটি বাড়ির সামনে রেখে দেওয়া হয়েছে। বড়খাতা ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আসা রোগিরা অল্প খরচে অ্যাম্বুলেন্সটি ভাড়া নিয়ে রংপুরে যেতে পারতেন। কিন্তু তারা এ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা: নাঈম হাসান বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নতুন অ্যাম্বুলেন্স পাওয়ায় সংসদ সদস্য মোতাহার হোসেনের সুপারিশে পুরাতন অ্যাম্বুলেন্সটি বড়খাতা ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রকে দেওয়া হয়েছিল। অ্যাম্বুলেন্সটির দেখভালের দায়িত্বে রয়েছেন উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা।

হাতীবান্ধা উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: খায়রুল ইসলাম বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে অ্যাম্বুলেন্সটি তারা আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহন করেননি। এ কারনে পরিবার পরিকল্পনা অফিস অ্যাম্বুলেন্সটির কর্তৃপক্ষ হতে পারেনি। ‘বড়খাতা ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে দেওয়া অ্যাম্বুলেন্সটি কোথায় এবং কি অবস্থায় আছে সেটা আমি বলতে পারছি না।

লালমনিরহাট সিভিল সার্জন (সিএস) ডা: নির্মলেন্দু রায় বলেন, তিনি বড়খাতা ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্স সম্পর্কে অবগত নন। এছাড়া সরকারিভাবে ইউনিয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অ্যাম্বুলেন্সটির দেওয়ার কোন বিধান নেই। তিনি বিষয়টি খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান এ প্রতিবেদককে।

লালমনিরহাট জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও লালমনিরহাট-১ (হাতীবান্ধা-পাটগ্রাম) আসনের সংসদ সদস্য মোতাহার হোসেন এ বিষয়ে বলেন, তিনি ঢাকায় রয়েছেন। বড়খাতা ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে দেওয়া অ্যাম্বলেন্সটির বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে তিনি অবগত নন। এ ব্যাপারে বিস্তারিত জেনে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহন করবেন।

ছবিসহ : 

বড়খাতা এলাকায় এভাবে এমপির ভাতিজার বাড়িতে পড়ে রয়েছে সরকারি অ্যাম্বুলেন্সটি

Please Share This Post in Your Social Media

দৈনিক ঢাকার কন্ঠ
© All rights reserved © 2012 ThemesBazar.Com
Design & Developed BY Hostitbd.Com