শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:৫০ অপরাহ্ন
নাট্য নির্মাতা শিমুল সরকারের উপর হামলাকারী সন্ত্রাসীদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছে ডিরেস্টরস গিল্ড বাংলাদেশ এবং টেলিভিশন এন্ড ডিজিটাল প্রোগ্রাম প্রডিউসারস এসোসিয়েশন টেলিপ্যাব। এছাড়াও হামলাকারীদের শেল্টারদাতাদেরও উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিতকরণের জোর দাবি জানিয়েছেন তারা। আসামীদের উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত না করলে জাতীয়ভাবে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলা হবে বলেও দাবি করা হয়েছে। মনোয়ার পাঠান ও সাজু মুনতাসির সাক্ষরিত বিবৃতিতে টেলিপ্যাব এবং অনন্ত হীরা ও এস এম কামরুজ্জামান সাগর সাক্ষরিত বিবৃতিতে ডিরেক্টরস গিল্ড এই দাবি জানিয়েছে। বাংলাদেশের টেলিভিশন মিডিয়ার প্রযোজক ও পরিচালকদের সবথেকে বড় এই দুই সংগঠনের বিবৃতিতে পুরো সাংস্কৃতিক অঙ্গণ আরো বেশি সোচ্চার হয়ে উঠছে বলে জানা গেছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে-
জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নির্মাতা, নাট্যকার, প্রযোজক, সাংবাদিক, অভিনেতা শিমুল সরকারের উপর রাজশাহীর বাঘা উপজেলায় তার নিজ গ্রামে যে ন্যাক্কারজনক হামলা হয়েছে, সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা তাকে অতর্কিত আক্রমন করে চাইনিজ কুড়াল, হাতুড়ি, রড দিয়ে কুপিয়ে এবং পিটিয়ে জখম করেছে তার তীব্র প্রতিবাদ জানাই। একজন সংস্কৃতি কর্মীর উপরে আঘাত মানে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আঘাত করা বলেই মনে করি আমরা। ইমো হ্যাকিং, মাদক ব্যবসার মতো সামাজিক ব্যাধির বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সংস্কৃতি কর্মীরাই সোচ্চার হবেন, এটাই স্বাভাবিক। শিমুল সরকারও সেটাই করেছেন। তাতে কোনো গোষ্ঠী, জনপ্রতিনিধির চক্ষুশুল হলে সেটা দেখা এবং সামাজিক ব্যাধি দূর করার উদ্যোগের দ্বায়িত্ব আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর। শিমুল সরকারের মত একজন গুণী জনপ্রিয় নির্মাতা, প্রযোজক, নাট্যকারকে যারা মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিতে চেয়েছিল, এবং তাদের শেল্টারদাতাদের উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিতকরণের জোর দাবি জানাচ্ছি। নতুবা দেশের সমস্ত নির্মাতা, নাট্যকার, প্রযোজক, অভিনয় শিল্পী, ক্যামেরাম্যানসহ সবাইকে নিয়ে তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলা হবে। অপরাধী যত শক্তিশালীই হোন না কেন সরকার এবং প্রসাশন নিজেদের ভাবমূর্তি রক্ষার স্বার্থেই অপরাধীদের শাস্তির আওতায় এনে সমাজে একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করবেন বলে আমাদের প্রত্যাশা। ৪৮ ঘন্টার মধ্যে হামলাকারীদের গ্রেফতার নিশ্চিত করার জোর দাবি আমাদের।
উল্লেখ্য ভোটের দিন ৭ জানুয়ারি আনুমানিক রাত ৯.১৫ টায় রাজশাহীর বাঘা উপজেলার গড়গড়ি ইউনিয়নের সরেরহাট বাজারে স্মৃতি স্টুড়িও’র সামনে তাকে কুপিয়ে জখম করা হয়। এ ঘটনার পরের দিন ৮ জানুয়ারি তার ছোট ভাই ফরহাদ হোসেন বাদি হয়ে ৬ জনকে আসামী এবং অজ্ঞাত ৫/৬ জনকে আসামি করে বাঘা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
ঘটনার বিররণে জানা যায়, শিমুল সরকার ভোটের দিন ৭ জানুয়ারি রাত ৯.১৫ টার দিকে সরেরহাট বাজারে স্মৃতি স্টুডিওর সামনে পথরোধ করে শাহিনুর রহমান (২৪) প্রথমে মাথায় আঘাত করে। তারপর ৫/৬ জন ঘিরে ধরে এবং শাহিনুর ইসলাম, হাফিজুর রহমান, রিংকু হোসেন, শফিকুল ইসলাম রাজা, মাসুম হোসেন, আরিফুল ইসলামসহ লোহার রড়, চা পাতি ও চাইনিজ কুড়াল নিয়ে অতর্কিতভাবে হামলা চালিয়ে কুপিয়ে জখম করে। ওই সময় খবর পেয়ে তার ছোট ভাই ও স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
শিমুল সরকার দীর্ঘদিন থেকে নাট্যকার ও নাটক পরিচালনা করে আসছেন। তিনি ঢাকায় নাট্যকার ও নাটক পরিচালক হিসেব ইতিমধ্যেই জনপ্রিয় হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলেছেন এবং অন্তত ৪ শতাধিক পর্ব নাটকের পরিচালক এবং নাট্যকার তিনি। এছাড়া ডিরেক্টরস গিল্ড বাংলাদেশ, টেলিভিশন এন্ড ডিজিটাল প্রোগ্রাম প্রডিউসার এসোসিয়েশন, একটরস ইকিউটি বাংলাদেশের সক্রিয় সদস্য এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রচার এবং প্রকাশনা সেলের ক্রিয়েটিভ উইংসে কাজ করেন। ভোট উপলক্ষে ২ জানুয়ারি নিজ বাড়িতে আসলে পূর্ব শত্রুতার জের হিসেবে এ ঘটনা ঘটেছে বলে তিনি জানান। তিনি বলেছেন এলাকার চিহ্নিত ইমো হ্যাকার ও মাদক কারবারি চক্রের কর্মকাণ্ডের বিরোধিতা করে আসছিলেন। ইমো হ্যাকার ও মাদক কারবারি চক্রের কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে তিনি সবসময় সোচ্চার ছিলেন। এজন্য ইমো হ্যাকার এবং মাদক চক্রের সদস্য এবং ঢাকায় তাদের শেল্টারদাতারা শিমুল সরকারকে বিভিন্ন সময় তাকে হুমকি ধামকি দিয়ে আসছিলেন।