বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:০২ অপরাহ্ন
নাজমুস সাকিব মুন, পঞ্চগড় প্রতিনিধি:
পঞ্চগড়, বিবাদের জের ধরে শিক্ষকের পরিবারের একমাত্র রাস্তায় বাঁশের প্রতিবন্ধক
চার সন্তানের স্কুলে যাওয়া অনিশ্চিত: বাঁশের প্রতিবন্ধকতায় বন্ধ একমাত্র রাস্তা
প্রায় এক মাস ধরে বাঁশের প্রতিবন্ধক স্থাপন করে রাস্তা বন্ধ করায় বিপাকে পড়েছে এক শিক্ষক। বাসা থেকে বের হওয়ার একমাত্র রাস্তাটিতে থাকা বাঁশের খুঁটি টপকে পার হতে হচ্ছে ভুক্তভোগী কলেজ শিক্ষক মোহাম্মদ আলী শাহ ও তার পরিবারের সদস্যদের। চলাচলের রাস্তাটি যেভাবে বন্ধ করা হয়েছে তাতে পরিবারের কেউ অসুস্থ হলে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া কিংবা জরুরী প্রয়োজনে ভ্যান পর্যন্ত যেতে পারবে না।
রবিবার সরেজমিন দেবীগঞ্জ উপজেলার টেপ্রীগঞ্জ ইউনিয়নের তেরপুপাড়া এলাকায় গিয়ে এর সত্যতা মিলে। ভুক্তভোগী পরিবার ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত ১১ আগস্ট প্রতিবেশী রশিদুল ইসলাম মোহাম্মদ আলী শাহ এর বিরুদ্ধে জেলা লিগ্যাল এইড অফিসে নিজের বসতভিটার চার শতক জমি দখল, মারধর ও চলাচলের রাস্তা বন্ধ করার অভিযোগ দেন।
এইদিকে লিগ্যাল এইডে অভিযোগের প্রেক্ষিতে লিগ্যাল এইড অফিসার ও সিনিয়র সহকারী জজ লিমেন্ট রায় গত ২৮ অক্টোবর ঘটনাস্থলে আসেন এবং উভয় পক্ষকে নিয়ে মীমাংসা সভা অনুষ্ঠিত হয়। তবে অভিযোগকারী রশিদুল ইসলাম যে রাস্তাটি নিয়ে অভিযোগ করেছিলেন সেটির বিষয়ে কোন সুরাহা না হওয়ায় এবং উপস্থিত রশিদুল ইসলামের পরিবার ও অন্যান্য প্রতিবেশীদের দাবির প্রেক্ষিতে ও প্রেক্ষাপট বিবেচনায় চলাচলের মূল রাস্তাটি যেটি সরকারি রেকর্ডীয় রাস্তা সেটি সাময়িক ভাবে বন্ধ করার নির্দেশ দেন লিগ্যাল এইড অফিসার। এরপর বাঁশের প্রতিবন্ধক স্থাপন করা হয় সেখানে।
স্থানীয় রমেশ চন্দ্র রায় বলেন, যেহেতু আলী শাহ্ তার প্রতিবেশী রশিদুলের বাড়ী থেকে বেরোনোর রাস্তা দিচ্ছেন না, এমনকি সালিশে লিগ্যাল এইডের অনুরোধ রাখেননি, সেজন্য সেদিন তার চলাচলের রাস্তাটি বন্ধ করেন লিগ্যাল এইড কর্মকর্তা।
রশিদুল ইসলামরা অন্যের জমি বিকল্প রাস্তা হিসেবে ব্যবহার করলেও প্রায় এক মাস থেকে ওই শিক্ষক পরিবার বাঁশের প্রতিবন্ধক টপকে রাস্তা পারাপার হচ্ছে। দশম, সপ্তম ও চতুর্থ শ্রেণীতে পড়া আলী শাহর তিন সন্তান প্রতিদিন বিদ্যালয়ে যাচ্ছে এভাবে। শিক্ষক আলী শাহ নিজেও বাসায় মোটরসাইকেল আনতে না পারায় প্রায় এক কিলোমিটার দূরে এক আত্মীয়র বাসায় মোটরসাইকেল রাখছেন।
রাস্তা বন্ধ থাকায় তিনি বিক্রির উদ্দেশ্যে কোন ফসল বাজারে নিয়ে যেতে পারছেন না। এতে বর্তমানে কয়েক লক্ষ টাকার বাদাম নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে।
ভুক্তভোগী আলী শাহ বলেন, লিগ্যাল এইডে যে অভিযোগ জমা পড়েছিল তা বানোয়াট। মারধর ও রাস্তা বন্ধের মতো কোন ঘটনা ঘটেনি। যে জমি নিয়ে অভিযোগ হয়েছিল তার সমাধান না করে আমার চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
এইদিকে লিগ্যাল এইডে অভিযোগকারী রশিদুল ইসলাম অভিযোগ করেন, আলী শাহ ও তার স্ত্রী নিজেদের দাবি করে আমাদের চলাচলের রাস্তায় বাঁশের বেড়া দিয়েছে। এই জমি নিয়ে এর আগে স্থানীয় ভাবে শালিস হলেও সুরাহা হয়নি। আমরা উপায়ন্তর না পেয়ে লিগ্যাল এইডে অভিযোগ করেছি। তাদের মতো আমরাও চলাচলের রাস্তা নিয়ে ভোগান্তিতে আছি।