শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ১০:০২ অপরাহ্ন
তুরাগে অবৈধ বাড়ির তথ্য সংগ্রহকালে নারী সাংবাদিক নীলুকে শীলতাহানীর অভিযোগ
এইচ এম আমিনুল ইসলাম আমান : // দৈনিক ঢাকার কন্ঠ
রাজধানীর তুরাগ থানাধীন দলিপাড়া এলাকায় অবৈধভাবে নির্মিত বাড়ির বিষয়ে তথ্যানুসন্ধান কালে, নারী সাংবাদিককে শ্লীলতাহানির অভিযোগ পাওয়া গেছে
সূত্রে জানা যায়, দলিপাড়া মোড়ে আল্লাহ-ওয়ালা ভবনের পাশের প্লটে রাজউকের অনুমোদন ব্যতীত একটি বহুতল ভবন নির্মাণের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ কালে এ ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটে। ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ভুক্তভোগী ওই নারী সাংবাদিক শিমুলী আক্তার নীলু বাদী হয়ে ওই দিন সন্ধ্যায় তুরাগ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। এ ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসন অভিযোগ আমলে না নিয়ে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
সরেজমিনে তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, রাজধানীর তুরাগ থানার দলিপাড়া মাদ্রাসা রোডের আল্লাহ ওয়ালা ভবনের উত্তর পাশের প্লটে রাজউকের অনুমোদন ব্যতীত, দুই পাশে সিটি কর্পোরেশনের রাস্তার জায়গা দখলে নিয়ে একটি বহুতল ভবন নির্মাণ করছে এনামুল হক নামের সাবেক এক পুলিশ কর্মকর্তা। এমন তথ্যের ভিত্তিতে সাংবাদিক শিমুলী আক্তার নীলু তার এক সহকর্মী কে সাথে নিয়ে গত ১৫ ডিসেম্বর ভবনটির বিষয়ে তথ্য সংগ্রহে যান। সেখানে তারা ভবনের দায়িত্বরত জনৈক কামরুলের নিকট ভ্রমণ সম্পর্কিত কিছু তথ্য সংগ্রহ করে এবং অধিকতর তথ্য সংগ্রহের জন্য ভবন মালিক সম্পর্কে জানতে চাইলে, ভবনের মালিক শিমুলী আক্তার নীলুর পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর, কোন কিছু বুঝে ওঠার আগেই তাকে ধাক্কাতে ধাক্কাতে তার ভবন ধরতে নিচে রাস্তায় ফেলে দেয় ও অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করতে থাকে। ভবন মালিকের এহেন আচরণ দেখে ঐ নারী সাংবাদিক তাৎক্ষণিকভাবে উত্তরা প্রেসক্লাবের সভাপতি ও দৈনিক মানবকণ্ঠের তুরাগ উত্তরা প্রতিনিধি রাসেল খানকে বিষয়টি অবহিত করেন। ঘটনাটি প্রেসক্লাবের সভাপতি এলাকায় হওয়ার সুবাদে তিনি নিজে সেখানে যান এবং ভবন মালিকের কাছে ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে ভবন মালিক তার সাথেও অশোভন আচরণ করে এবং ধাক্কাতে ধাক্কাতে তাকেও রাস্তায় ফেলে দেয় এবং পুরু সংবাদিক সমাজকে নিয়ে বাজে মন্তব্য করে নিজেকে পুলিশের সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পরিচয় দেন এবং নড়াইল ২ আসনের সাংসদ বাংলাদেশ জাতীয় দলের ক্রিকেটার মাশরাফি বিন মর্তুজার শশুর বলে পরিচয় দেন। এছাড়াও তিনি রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ রাজউক এর বর্তমান চেয়ারম্যান কার ভাই বলেও দম্ভ প্রকাশ করে তার সাথে দেখা করেছে বলে জানায়। বিষয়টির সাথে সাথেই রাজউকের চেয়ারম্যান কে অবহিত করলে তিনি তাকে চেনেন না বলে এ প্রতিবেদককে নিশ্চিত করেন। এছাড়াও তিনি ওই ভবনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস প্রদান করেন। তার কিছুক্ষণ পরে রাজউক মহাখালী থেকে ইমারত পরিদর্শক নাইম আল মুরাদ ঘটনাস্থলে আসেন এবং ভবনটির বিষয়ে অনুসন্ধান করে চলে যান। ১৫ ডিসেম্বর বিকেলে রাজউক কর্তৃপক্ষ এই ভবনের বিষয়ে রাজউক অনুমোদিত নকশা দাখিলের জন্য একটি নোটিশ দেয়। উক্ত নোটিশে তুরাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বরাবর আলোচ্য নির্মাণাধীন ইমারতের সকল প্রকার নির্মাণ কাজ/বসবাস বা যেকোনো ব্যবহার বন্ধ করার বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করেন। অন্যদিকে উক্ত ঘটনায় ওই নারী সাংবাদিক পুলিশের হেল্পলাইন ৯৯৯এ কল করলে তুরাগ থানা হতে সহকারী পরিদর্শক (এস আই) জিহাদ ঘটনাস্থলে যান। তিনি উপস্থিত সাংবাদিকদের সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনার বিস্তারিত শুনে ও সামনে অবস্থিত একটি হোটেল মালিকের সাথে কথা বলে ঘটনার সত্যতা পেয়ে, এনামুল হকের সাথে আলাদাভাবে কথা বলে বিষয়টি ধামাচাপা দিতে মরিয়া হয়ে পড়েন। তিনি একাধিকবার বলেন বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিকরা কোন প্রকার পদক্ষেপ না নিয়ে সাথে সাথেই সমাধান করুন। তার এমন পরামর্শে শিমুলী আক্তার নীলু উত্তরা প্রেসক্লাবের নির্বাচিত ১ নং কার্যকরী সদস্য হওয়ায় ঘটনাস্থলে উপস্থিত সাংবাদিকদের মতামত ও ক্লাবের সদস্যদের মতামত নিয়ে ১৫ ই ডিসেম্বর সন্ধ্যায় তুরাগ থানায় মামলা দায়ের করতে যান। থানায় প্রায় তিন ঘন্টা বসে থাকার পর ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উগ্রভাবে অশোভন আচরণ করে সাংবাদিক নীলুকে একটি অভিযোগ রেখে যেতে বলেন। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী নারী সাংবাদিক জানান, আমি অবৈধভাবে নির্মিত ভবন সম্পর্কে তথ্যানুসন্ধান করতে যাই। সেখানে ভবনে দায়িত্বরত কর্মীরা এবং ভবন মালিক নিজেই আমাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন এবং ভবনমালিক আমাকে খুন করে গুম করার হুমকি দেন। আমাকে ও আমার সভাপতিকে ধাক্কা দেওয়া মানে উত্তরায় কর্মরত সকল সাংবাদিক তথা সারা বাংলাদেশের সাংবাদিকদের ধাক্কা দেয়ার সমান বলেই মনে করি। এনামুল হক যেভাবে গোটা সাংবাদিক সমাজকে নিয়ে ধৃষ্টতাপূর্ণ বিরূপ মন্তব্য করেছে তা একজন গণমাধ্যমকর্মী হিসেবে কখনোই মেনে নেয়া যায়না। শিমুলী আক্তার নীলু বলেন, থানার একজন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার এহেন উদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ স্বাধীন সাংবাদিকতার, সাংবাদিকতার জন্য হুমকিস্বরূপ। অন্যদিকে এ ভবনের বিষয়ে তাকে বিভিন্ন দিক থেকে বিভিন্নভাবে হুমকি প্রদান করে আসছেন ভবন মালিক। এছাড়াও পুলিশের গোয়েন্দা পরিচয় দিয়ে বিভিন্নভাবে মুঠোফোনে দেয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি। এ ব্যাপারে আমার নিরাপত্তা চেয়ে দক্ষিনখান থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করার পরও দক্ষিনখান থানা পুলিশ কোন গুরুত্ব না দিয়ে উল্টো অভিযুক্তের পক্ষে সাফাই গাইছে।