বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৩৬ অপরাহ্ন
চট্টগ্রামে সাউদার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডাক্তারের ভুল চিকিৎসার দাবি।অপারেশনের ৪৬ঘন্টা পর রোগীর আকষ্মিক,অনাক্ষাঙ্কিত,প্রশ্নবিদ্ধ লোমহর্ষক মৃত্যুতে অভিযোগ।তিন চিকিৎসকের নামে মামলা হলে চিকিৎসকের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটির নির্দেশ। ভুল চিকিৎসায় মৃত্যুর অভিযোগ,রোগী পক্ষের জবানবন্দিতে পওয়া, পেট ব্যথার রোগীকে দিনে পরপর দুইবার অপারেশন অতঃপর মৃত্যু ভুল চিকিৎসা ও অবহেলায় মৃত্যুর কারণে অভিযোগ দেন নিহত স্ত্রীর স্বামী মীর আবদুল পিরু (৩৫)।
গত ২০শে ডিসেম্বর রোজ মঙ্গলবার চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট-৫ এর বিচারক মো. সাদ্দাম হোসেন এ আদেশ দেন।গত১৮ ডিসেম্বর অভিযোগটি দেওয়া হয়।তিনি নগরীর বায়েজিদ বোস্তামী থানা এলাকার বাসিন্দা।
তথ্যমতে,নিহত পপি আক্তার (৩০)এর কোন সময়,কোন রকম, কোনো খারাপ রোগ ছিল না। সুস্থ স্বাভাবিক চলাফেরা সব কাজে কর্মক্ষম থাকা অবস্থায় হঠাৎ অসুস্থ হলে দুইদিন না যেতেই অপারেশনের ৪৬ঘন্টা পর মৃত্যু। এতে,চিকিৎসার অবহেলা গাফিলতির ভুল চিকিৎসা বর্ণণা ও স্বচক্ষে দেখা চিত্র ভুলতে পারছেন না বাদী তা কোনমতে। ভুল চিকিৎসার শতভাগ নিশ্চিত হয়ে ও প্রত্যক্ষদর্শী স্বামী নিজেই বাদী হয়ে থানায় দিনের পরদিন ৪-৫ বার ঘুরেও মামলা নেয়নি থানা কর্তৃপক্ষ রহস্যজনক কারণে। অতঃপর দৃষ্টন্তামূলক বিচারের দাবিতে কোর্টে মামলা দায়ের করেন নিহত স্বামী।
তথ্যসূত্রে জানা যায়,রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় আদালতে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। সাউদার্নের অধ্যক্ষসহ তিন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা তদন্ত কমিটি,৩০দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে আদালতের নির্দেশ দেন। অভিযোগে সাউদার্নের রেজিস্ট্রার ডা.মোহাম্মদ ইমরান হোসেন (৪৫), সহকারী অধ্যাপক ডা.আদনান বাচা (৪০) ও অধ্যক্ষ ডা. জয়ব্রত দাশকে (৫৫) বিবাদী করা হয়েছে।
অভিযোগে বাদী সূত্রে জানা যায়,আমার স্ত্রী পপি আক্তার গত ২২অক্টোবর সকালে পেটের ব্যথা অনুভব করলে বাসার পাশের সাউদার্ন মেডিক্যালে জরুরি বিভাগে নিয়ে যাই। চিকিৎসক হাসপাতালে ভর্তি দেন। পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে অ্যাপেন্ডিসাইটিসের ব্যথা শনাক্ত করেন এবং অতিদ্রুত অপারেশন করতে বলেন।
গত ২৬অক্টোবর সকাল ৯টায় রোগীকে রেজিস্টার ডাক্তার ইমরান হোসাইনের টিম অপারেশন সম্পাদন করে।
অপারেশন থিয়েটারে নেওয়ার ৮ঘণ্টা পর অপারেশন থিয়েটার থেকে ৪নং ওয়ার্ডে আনা হয়। নিয়ে আসার পরপরেই সারাদিন পেটে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব করে এবং রক্তপাত হয়।অবস্থা খারাপ হওয়ায় চিকিৎসকের পরামর্শে ব্লাড ব্যাংকের রক্ত নিতে বাঁধার বিঘ্নতার সৃষ্টি হয়। পরে বাদী দুই ব্যাগ রক্ত সংগ্রহ করে। ৮ঘণ্টা ওই দিন রাত ১১টার দিকে পুনরায় সহকারী অধ্যাপক ডাক্তার আদনান বাচা’র টিম দ্বিতীয়বার অপারেশন সম্পাদন করে। এতে,শারীরিক অবস্থার অবনতি আরো চরম খারাপ হতে থাকে। অক্সিজেন সাপোর্ট প্রয়োজন হয়,প্রেশার কমে যায়। ঐ সময় চিকিৎসকদের সক্রিয় উপযুক্ত যথাযথ পদক্ষেপ না নেওয়া,নিরবতা অবহেলা গাফলতি লক্ষ্য করি তাদের রেসপন্স তেমন একটা ছিল না। যার ফলে রোগীর অবস্থা আরো ভয়ানক অবনতি হতে থাকে। পরের দিন ২৭অক্টোবর সকালে ডিউটি ডাক্তার জানায়,রোগীর শারীরিক অবস্থা খারাপ। তড়িঘড়ি করে রেফার্ড করে চমেক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। তখন বাদী আসংখ্যাজনক মুমুর্ষ অবস্থায় দ্রুত পাশের মেরিন সিটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৮অক্টোবর সকাল ৬টা ৫৪মিনিটে রোগীকে মৃত ঘোষণা করে কর্তব্যরত চিকিৎসক।
মামলায় বাদীপক্ষের আইনজীবী আবদুল্লাহ আল হেলাল বলেন,চিকিৎসকের অবহেলায় রোগীর মৃত্যুতে অভিযোগের ভিত্তিতে। অভিযোগ আমলে নিয়ে মহামান্য আদালত
আদেশ দিয়েছেন তদন্তের মাধ্যমে অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য। চমেক হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের প্রধানকে দায়িত্ব দিয়ে মেডিসিন ও অ্যানেস্থেশিয়া বিভাগের দুই সহকারী অধ্যাপকের তিন সদস্যের কমিটি আগামী ৩০দিনের মধ্যে তদন্ত শেষ করে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। প্রতিবেদনের আলোকে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিষয়টি জানতে চাইলে ডাক্তার আদনান বাচা বলেন,সেটা তো ওরা করছে রোগীপক্ষের বলা কথা। আমরা চিকিৎসা তো অবশ্যই দিছি। অলরেডি আমাদের ইন্টারনাল একটা তদন্ত হয়েছে। সেটা রিপোর্টও আমাদের কাছে আছে। রোগীপক্ষ কিভাবে সেটা পাবে এটাতো কনফেডেনশিয়াল।এটার জন্য এপ্লাই করতে হয়। তদন্ত রিপোর্ট তো সবার হাতে দেওয়া হয় না। এ বিষয়ে রোগীর পক্ষের কেউ আমার সাথে কোন আলাপ হয়নি। সেটা তো রোগীপক্ষ কেউ আসলেই তো বলতে পারবো। না আসলে কিভাবে আমরা কথা বলতে পারবো। আমার কাছে আসে নাই। আমার নাম্বার কোথায় পেয়েছেন? আমি এখন একটু ব্যস্ত আছি একটু পরে আমি দিতে পারবো। এখন পারবো না।
এ বিষয়ে ডাক্তার ইমরান হোসাইন-উক্ত বিষয়ে কথা বলা অপরাগতা প্রকাশ করে বলেন,এটা তদন্ত চলতেছে তদন্তকালীন এ বিষয়ে কিছু বলা যাবে না,বলা যায় না। অফিসে যোগাযোগ করতে পারেন। আপনারা অফিসে যোগাযোগ করেন।
উল্লেখ্যঃ সাদাকে সাদা বলতেই হবে কিন্তু বলতে গেলেই আসে বাধা-বিপত্তি ঝুঁকি ঝামেলা জীবনের প্রতিটা মুহূর্তেই বাধাবিঘ্নতা। সৃষ্টিকর্তার পরেই ডাক্তারের স্থান।রোগে সুখে সুস্বাস্থ্য সুখী সুন্দর জীবন গঠনে জীবন বাঁচাতে ডাক্তারের উপরে নির্ভরশীল। বিশ্বাসের জায়গায় সর্বোচ্চ আস্থা স্বেচ্ছাসেবী পেশা এবং সেবামূলক কারণেই।ডাক্তার দ্বারা রোগীদের কি পরিমান জীবনঝুঁকি নিয়ে চিকিৎসা সেবা নিতে হয়? এমন শত বাস্তবতাই উঠে আসে নানান প্রশ্ন? রোগীরা কি ডাক্তার দ্বারা শতভাগ চিকিৎসা পাচ্ছে? উত্তর পাচ্ছে কিন্তু সিংহভাগের পাচ্ছে না বাস্তবতায় এটাই সত্য। প্রতারিত আর্থিক ক্ষয়ক্ষতিসহ নানাভাবে হয়রানি ভোগান্তি অভিযোগে পড়তে হয় নানা ঝুঁকি ঝামেলা। নানাচাপে নানাভাবে জীবন হয়ে ওঠে দুর্বিষহ প্রতিটি মুহূর্ত কাটে নিরাপত্তাহীনতায়। কাল হয়ে উঠে শুভ সকাল দুপুর বিকেল প্রতিটা মুহূর্ত বেড়ে যায় বহুরূপী বন্ধুবেশী শত্রুরা।
ভুক্তভোগীদের অনেক অভিযোগে বাস্তবে দেখা যায় ওই অভিযোগ এই পর্যন্তই শেষ।
অভিযোগের ফলাফল ইতিবাচক হয় না,নানা কারণে। রোগীপক্ষ সরজমিনে পায়না তার রোগীর অপচিকিৎসা গাফিলতির প্রমাণ দলিল যাবতীয় গ্রহণযোগ্য প্রমাণ । তদন্ত কমিটির তদন্তের নামে হয় আরেক নতুন আধ্যায়। যেখানে উঠে আসে না রোগীর সত্যতার চিত্র । অভিযোগ দিয়েও যেন সে নিজেই অভিযুক্ত হয়ে ওঠে।পেরেশানিসহ ক্ষতিগ্রস্ত হয়, আর্থিক শারীরিক মানসিকভাবে।
অর্থব্যয়ে সময় ও শ্রমে শিকার হয় অপূরণীয় ক্ষয়ক্ষতির। দুর্দিনের দুঃসময় পাশে কাছে থাকে না কেহই। সবই যেন গল্প নাটকের মতই সত্য।কাছের মানুষটিকেও পাওয়া যায় না পাশে।রোগী পক্ষ থাকে আর্থিক দুর্বল অসহায় ও নিরুপায়। অপরদিকে প্রতিপক্ষ হাসপাতাল ও ডাক্তারপক্ষ থাকে শক্তিশালী অর্থনৈতিক সচ্ছল। তাদের সাংগঠনিক একতাই ও আইনের ফাঁকফোঁকরে কোনভাবেই রোগীপক্ষের আইনি অধিকার ও ঘটনার পেছনের ঘটনা প্রকাশ হয় না।ডাক্তারদের ভুল চিকিৎসা গাফিলতি,অবহেলা তদন্ত রিপোর্টে উঠে আসে না।তদন্ত রিপোর্টে প্রতিষ্ঠিত হয়। রোগীর অভিযোগ সত্য নয়,ভিত্তিহীন,অযথা,যুক্তিক নয়। অযথা চিকিৎসা সেবাকে প্রশ্নবিদ্ধ করা ও ডাক্তারদেরকে ফাঁসানো ছাড়া কিছুই নয়।রোগীর উপযুক্ত চিকিৎসায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় স্বাভাবিক মৃত্যু এটাই স্বাভাবিক। রোগী পক্ষের অভিযোগ বিন্দুমাত্র সত্য ছিলনা। অবহেলা থাকলেও তদন্ত রিপোর্ট ডাক্তারের পক্ষেই আসে। রোগীর মৃত্যুতে ডাক্তারের চিকিৎসার নেই কোন ত্রুটি। ভুক্তভোগীদের বক্তব্যে জানা যায়। ভুক্তভোগী অভিযোগ দিয়ে যেন নতুন জালের ভেতর থেকে বেরিয়ে আসতে পারে না। সত্য থেকে যায় অন্তরালে নামিক তথাকথিত রিপোর্টে গল্প কথায় উঠে আসে না বাস্তবতার বর্ণনায় অপচিকিৎসার সঠিক কারণ। বাস্তবে ভুক্তভোগীদের বক্তব্যে জানা যায়।তাই চাই সকলের সহযোগিতা ও সংশ্লিষ্ট মহলের সহযোগিতা প্রয়োজন। ডাক্তার হোক রোগীবান্ধব।